প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৭ এপ্রিল : বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে বসেছিল সালিশী সভা ।সেই সালিশী সভাতেই স্বামীর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায় স্ত্রী।তা নিয়ে রবিবার বেলায় ধুন্ধুমার বেঁধে যায় পূর্ব বর্ধমানের দেওয়ানদিঘী থানার তালিত গ্রামের দিঘীরপাড় এলাকায় থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে । এমন ঘটনার পরেই বধূ ও তাঁর পরিবারের লোকজনের উপর জনরোষ আছড়ে পড়ে । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে জনরোষের হাত থেকে বধূ ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে রক্ষা করে। রক্তাত অবস্থায় জখম স্বামীকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় । পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,সালিশী সভায় স্ত্রীর সশস্ত্র হামলায় জখম স্বামীর নাম রকি শেখ। পেশায় বেসরকারি নার্সিংহোমের কর্মী রকি দিঘীরপাড় এলাকার বাসিন্দা বীরভূম জেলার লাভপুরের ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দা জোনাকি খাতুনের সঙ্গে রকির ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল । মাস ছয়েক আগে তাঁরা বিয়ে করেন । তবে তাঁদের সংসার জীবন সুখের হয় না। বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। কয়েক মাস হল দু’জনে আলাদা থাকছিলেন ।
এলাকার বাসিন্দা শেখ রাজু জানিয়েছেন,রকি ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যেকার অশান্তি মেটানোর জন্য এলাকার মানুষজন বেশ কয়েকবার সালিশী সভা বসিয়েছিল।কিন্তু অশান্তির অবসান হয় না।রবিবার বেলায় দুই পরিবার ও এলাকার মানুষজনের নিয়ে ফের সালিশী সভা বসে। সেই সভা চলাকালীন হঠাৎই ছুরি বের করে রকিকে আঘাত করে তাঁর স্ত্রী জোনাকি। তৎক্ষণাৎ রক্তাক্ত অবস্থায় রকিকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে এই খবর জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকার মানুষজন।উত্তেজনাও চরমে ওঠে। জনরোষ আছড়ে পড়ে। জোনাকি ও তাঁর পরিবারের লোকজনের উপর জনরোষ আছড়ে পড়ে। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে বাঁচাতে তাঁদের এলাকার পার্টি অফিসে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায় । পুলিশ জোনাকি ও তার বাবার বাড়ির লোকদের উদ্ধার করতে গেলে উত্তেজিত জনতা মারমুখী হয়ে ওঠে।মারধর হজম করতে হয় অভিযুক্ত জোনাকি খাতুনের মাকে।
রকির বাবা সেখ দুজা বলেন,’বিয়ের ১৫ দিনের মাথায় আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয় বৌমা জোনাকি। ছেলের মুখ চেয়ে আমি বৌমার এই আচরণ মেনে নি। চেয়ে ছিলাম ছেলে ভাল থাকুক ।তার পরেও বৌমা নিত্যদিন বাড়িতে অশান্তি করতো।এদিন পার্টি অফিসে ঠিক হয়,ছেলের বাবাহ বিচ্ছেদের জন্য আমরা ৭ লক্ষ টাকা দেবো।তারপর হঠাৎই ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে আমার ছেলের পেটে ছুরি চালিয়ে দেয় বৌমা জোনাকি খাতুন।তা নিয়েই জোনানি খাতুন ও তাঁর মা কাবীরা বিবির উপর জনরোষ তৈরি হয়।সেই খবর পেয়ে দেওয়ান দিঘী থানার পুলিশ এসে তাঁদের পার্টি অফিসে আটকে রাখে পরিস্থিতি সামাল দেয়। উত্তেজনা কমলে পুলিশ জোনাকি খাতুন ও তাঁর মা কাবীরা বিবিকে থানায় নিয়ে যায়।
এলাকার তৃণমূল নেতা সেখ নাসিরউদ্দিন যদিও দাবি করেন, পার্টি অফিসে কোন সালিশী সভা বসে নি।তবে যখন ঝামেলা অশান্তি চরমে উঠেছিল তখন আমরা অভিযুক্ত জোনাকি খাতুন ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে পার্টি অফিসে আটকে রেখে পুলিশকে খবর পাঠাই।।