এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,২৪ জুলাই : দাম্পত্য কলহের জেরে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন স্ত্রী । যদিও তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে প্রাণে বেঁচে গেছেন । কিন্তু এদিকে শ্বশুরবাড়ির মারের ভয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন স্বামী । মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়ের থানার কাঁকড়াশাল গ্রামে । পুলিশ জানিয়েছে,মৃতের নাম বিমল সাঁতরা(৩৭) । নিহতের স্ত্রী ঝুমা সাঁতরা বর্তমানে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । তাঁকে স্বামীর মৃত্যুর খবর শোনানো হয়নি বলে জানা গেছে । এদিকে রবিবার একই হাসপাতালে বধুর স্বামীর মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,কাঁকড়াশাল গ্রামের বাসিন্দা বিমল সাঁতরা চেন্নাইয়ে শ্রমিকের কাজ করতেন । তাঁর বাড়িতে রয়েছেন,স্ত্রী ঝুমাদেবী,১৬ ও ১৩ বছরের দুই নাবালক সন্তান,বৃদ্ধ বিধবা মা, দাদা ও দাদার পরিবার । মৃতের জামাইবাবু নেপাল সাঁতরার কথায়, ‘২০-২২ দিন আগে চেন্নাই থেকে ফিরেছিল বিমল । তারপর একদিন সে মদ্যপান করে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি করে । স্ত্রীকে গালিগালাজও করেছিল বলে শুনেছি । একথা বিমলের স্ত্রী ঝুমা তাঁর বাপের বাড়িতে ফোন করে বলে দেয় । এরপর বাপের বাড়ির লোকজন এসে বিমলকে মারধর করে । তখন থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলছিল ।’
পরিবার সুত্রে জানা গেছে,শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে মার খাওয়ার পর চাপা অভিমান কাজ করছিল বিমল সাঁতরার মধ্যে । তার জেরে শনিবার ঝুমাদেবী ভাত খেতে দিলে ভাতের থালা ছুড়ে ফেলে দেন বিমলবাবু । এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ফের একপ্রস্থ অশান্তি বেধে যায় । তারই মাঝে বাড়িতে থাকা আগাছানাশক পান করেন ঝুমাদেবী । তারপর তার বমি শুরু হলে স্ত্রীর মৃত্যু নিশ্চিত জেনে আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বিমল । পরে রাতের দিকে বাড়ির পাশে বাঁশ বাগানের মধ্য থেকে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পাত্রসায়ের থানার পুলিশ ।এদিকে তার অনেক আগেই পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ঝুমাদেবীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে ।
নেপাল সাঁতরার অভিযোগ, ‘আগে একবার শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসে মারধর করায় সর্বদা একটা আশঙ্কার মধ্যে থাকতো নেপাল । স্ত্রী মরে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ফের মারবে এই ভয়েই সে আত্মঘাতী হয়েছে ।’ অন্যদিকে বিষ্ণুপুর থানার চাকদহের বাসিন্দা ঝুমাদেবীর ভাই সুজয় মেটে তাঁর জামাইবাবুকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । তিনি বলেন,’ওই দিন আমরা শুধু জামাইবাবুকে বোঝাতে গিয়েছিলাম । কেউ মারধর করিনি ।’ পুলিশ জানিয়েছে, এনিয়ে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় এনিয়ে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি । একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করা হয়েছে ।।