জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,মেমারি(পূর্ব বর্ধমান),০৪ এপ্রিল : রবিবার এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল মেমারির শোনড়ার বড়পুকুরের বাসিন্দারা। স্বামীর কাস্তের আঘাতে খুন হলেন স্ত্রী এবং পরে সেই কাস্তে দিয়েই নিজের গলা ও কানে আঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে স্বামী । নিহতের নাম অণিমা টুডু (২৩) । তাঁর স্বামী লক্ষ্মীরাম হেমব্রম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ।
স্থানীয় ও পারিবার সূত্রে জানা গেছে,বছর পাঁচক আগে মেমারির শোনাড়ার অণিমা টুডুর সঙ্গে হুগলির দাদপুর থানার আগড়াপাড়ার লক্ষ্মীরাম হেমরমের বিয়ে হয়। আর্থিক কারণের জন্য বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। যার জন্য অণিমাদেবী শোনাড়াতেই মায়ের কাছে থাকতেন । মাঝে মধ্যে লক্ষ্মীরাম সেখানে আসা-যাওয়া করতেন । তাতেও দু’জনের মধ্যে অশান্তি কমত না।
জানা গেছে,রবিবার রাত্রি সাড়ে আট ৯ টা নাগাদ খাওয়াদাওয়ার পর নিজেদের ঘরে ঘুমতে গিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডা শুরু হয় । অণিমাদেবীর বাবা বারবার দরজা খুলতে বললেও দরজা না খোলায় প্রতিবেশীদের খবর দেওয়া হয় । এরপর প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙে দেখতে পায় রক্তাক্ত অবস্থায় অণিমা মেঝেতে পড়ে আছে । পাশে কাস্তে নিয়ে দাঁড়িয়ে লক্ষীরাম । প্রতিবেশীরা কিছু বোঝার আগেই সেও হাতের কাস্তে দিয়ে নিজের গলা ও কানের নীচে আঘাত করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ।
সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দেওয়া হয় । খবর পেয়ে মেমারি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। রক্তাক্ত অনিমা টুডু ও গুরুতর জখম লক্ষ্মীরাম হেমরমকে উদ্ধার করে মেমারি হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ । কর্তব্যরত চিকিৎসক অনিমাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় লক্ষ্মীরামকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ।
জানা গেছে,ওই আদিবাসী দম্পতির একটি চার বছরের ছেলে ও তিন মাসের একটি মেয়ে রয়েছে ।
মেমারি থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ।।