এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৯ ফেব্রুয়ারী : বাংলাদেশের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্থানীয় বাসিন্দা এক ব্যক্তিকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গনধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে । ধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারী মামুনুর রশিদ ওরফে মামুনকে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা থেকে এবং ধর্ষণের অন্যতম সহায়তাকারী মোহম্মদ মুরাদকে নওগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বুধবার রাতে জানিয়েছে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন । গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪) ভোর রাতে ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাভার মডেল থানার পুলিশ ও আশুলিয়া থানার পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করে।
খন্দকার আল মঈন জানান, ধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারী মামুনুর রশিদ ওরফে মামুনকে গার্মেন্টসে চাকরি করলেও পরবর্তী সে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে এবং জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মাদক সাপ্লাই দেয়। মূল আসামী ছাত্রলীগের নেতা মুস্তাফিজুর রহমান সহ বাকি অপরাধীরা ছিল তার মাদকের ক্লায়েন্ট। মামুনের নামে ৮টি মাদক মামলার রয়েছে এবং সে ৪ বার জেলে গেছে ।
জানা গেছে, ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া থাকত মামুন। শনিবার সন্ধ্যায় মহিলার স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসেন মামুন। তারপর তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর ঘরে বেঁধে রাখে । এরপর তার স্ত্রীর মাধ্যমে নিজের রেখে আসা জিনিসপত্র আনতে বলেন মামুন। এগুলো নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন ওই মহিলা । পরে জিনিসপত্র নিয়ে মামুন হলের ভেতরের ঘরে রেখে আসে । এরপর তার স্বামী অন্য দিক থেকে আসবেন বলে মহিলাকে হল-সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয় । প্রথমে মামুন মহিলাকে ধর্ষণ করে ।
নির্যাতিতা মহিলা বলেন, ‘মামুন ভাই আমাদের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তিনি আমার স্বামীর মাধ্যমে ফোন করে আমাকে তার রেখে যাওয়া জিনিসপত্র নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলে । আমি জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে যাই। তখন সে আমাদের বাড়িতে আর থাকবে না বলে জানায় । মীর মশাররফ হোসেন হলের মোস্তাফিজ ভাইয়ের কাছে থাকবে বলে জানায় ।’ মহিলা বলেন ‘এরপর মামুন ভাই আমার কাছ থেকে তার জিনিসপত্র নিয়ে হলে রেখে আসেন। পরে আমার স্বামী অন্য দিক থেকে আসবে বলে আমাকে হলের সামনে থেকে পাশের জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে যান। তার সঙ্গে মোস্তাফিজ ভাইও ছিলেন। তখন তারা আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ।’
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। বক্তব্য রাখেন শাবিপ্রবির পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক জায়েদা শারমিন ও বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ফারজানা সিদ্দিকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় ধর্ষণের মতো এমন ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, ‘সিলেটের এমসি কলেজে একই ঘটনা ঘটেছিল। প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এমন ঘটছে। জাহাঙ্গীরনগরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। এসব ঘটনায় জড়িতরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে নতুন নতুন ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেউ যেন আর কোনো মেয়ের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলতে না পারে এজন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।।