দিব্যেন্দু রায়,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১২ আগস্ট : মদ্যপানের প্রতিবাদ করায় স্বামীর হাতে নৃশংসভাবে খুন হলেন স্ত্রী । পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার পালিটা গ্রামের ঘটনা । ফুলেশ্বরী ফৌজদার নামে ৪৩ বছরের ওই বধূকে শুক্রবার গভীর রাতে মদ্যপ অবস্থায় ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায় তাঁর স্বামী সন্তোষ ফৌজদার । খবর পেয়ে আজ শনিবার সকালে ফুলেশ্বরীদেবীকে বাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কেতুগ্রামের রামজীবনপুর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ । কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । পুলিশ ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করেছে ।
জানা গেছে,বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের উদয়নপল্লী এলাকায় বাপের বাড়ি ফুলেশ্বরী দেবীর । বছর সাতাশ আগে পালিটা গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ ফৌজদারের সঙ্গে তাঁর দেখাশোনা করে বিয়ে হয় । তাঁদের একমাত্র ছেলে বিশ্বনাথ (২৪) কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন । স্বামী- ছেলে, শ্বশুরও শাশুড়িকে নিয়ে ছিল ফুলেশ্বরী দেবীর সংসার । সন্তোষ ফৌজদার সেনাবাহিনীতে গাড়ি চালকের কাজ করতেন। বছর দেড়েক আগে তিনি অবসর নেন । তারপর থেকে তিনি বাড়িতেই রয়েছেন । একটি মারুতি ভ্যান কিনে ভাড়ায় খাটাচ্ছিলেন সন্তোষবাবু ।
জানা গেছে,অবসর নেওয়ার পর থেকেই মদের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েন ফুলেশ্বরী দেবীর স্বামী । এদিকে স্বামীর মদের নেশা ছাড়াতে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করতেন । এনিয়ে প্রতিদিনই বাড়িতে অশান্তি হত । প্রায় দিনই স্বামীর হাতে ব্যাপক মার খেতে হত ফুলেশ্বরী দেবীকে । তবুও তিনি স্বামীর মদের নেশা ছাড়াতে বদ্ধপরিকর ছিলেন ।
পরিবার সূত্রে খবর,শুক্রবার রাতেও যথারীতি আকন্ঠ মদ্যপান করে বাড়ি ফেরেন সন্তোষ ফৌজদার । এনিয়ে ফের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি বেধে যায় । তারই মাঝে স্ত্রীকে একটা এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করেন সন্তোষ । ফুলেশ্বরী দেবী রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়লে ওই ঘরেই নেশাগ্রস্থ অবস্থায় ঘুমাতে থাকে সে ।
নিহত বধূর মা দয়াময়ী মণ্ডল বলেন,’শুক্রবার রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ আমার বেয়াই মধুসূদন ফৌজদার বলেন,’আপনাদের মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না । সন্তোষ ওকে মেরে ফেলেছে ।’ একথা শুনে রাতেই আমরা কেতুগ্রামে চলে আসি । এসে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির দোতলায় একটি ঘরের মধ্যে তার রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখি ।’
খবর পেয়ে এদিন সকালে মৃতদেহটি উদ্ধার করে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ । পরে মৃতদেহটা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় । এই খুনের ঘটনায় এদিন কেতুগ্রাম থানায় এফ আই আর রজু করেছেন নিহত বধূর মা দয়াময়ী মণ্ডল ।।