এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩১ মার্চ : আজ করকাতার রেড রোডে ঈদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । ইতিমধ্যে তার বক্তব্যের কিছু অংশ ট্রেন্ড করছে । তার মধ্যে “ম্যায় অ্যায়সা গন্দা ধর্ম নেহি মানতা” মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে বিজেপি৷ রাজ্য বিজেপির যুবমোর্চার নেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি সরাসরি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, ‘গন্দা ধর্ম অর্থাৎ নোংরা ধর্ম কাকে বললেন মাননীয়া? কলকাতা খিলাফত কমিটির অনুষ্ঠানে গিয়ে কোন ধর্মকে নোংরা ধর্ম বললেন?’
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা খিলাফত কমিটির অনুষ্ঠানে গিয়ে মুসলমানদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে কার্যত খেলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করেছে বলে দাবি করলেন তরুনজ্যোতি । তিনি এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন,মমতার সরকার মুসলমানদের পাশে আছে। ক্যালকাটা খিলাফত কমিটির অনুষ্ঠান থেকে বড় বার্তা। রাজ্যের বিভিন্ন ঘটনা ইতিমধ্যে প্রমাণ করে দিয়েছে যে তার সরকার হিন্দু বিরোধী ।’ সেই সাথে ‘খেলাফত আন্দোলন’ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি । “কলকাতা খিলাফত কমিটি, খেলাফত আন্দোলন ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়” শীর্ষক ওই ব্যাখায় তরুনজ্যোতি তিওয়ারি লিখেছেন,’প্রতি বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা খিলাফত কমিটির মঞ্চে দেখা যায়। কিন্তু এই সংগঠনের আসল উদ্দেশ্য কী? এটি ভারতের স্বাধীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং খলিফার শাসন (ISLAMIC RULE) রক্ষার জন্য ভারতীয় মুসলমানদের আন্দোলন।
খেলাফত আন্দোলন (১৯১৯-১৯২৪) শুরু হয়েছিল ব্রিটিশদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে, যাতে অটোমান সাম্রাজ্যের খলিফার ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ থাকে। কিন্তু এই আন্দোলনের ফলে ভারতে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তীব্র হয় এবং এর চরম পরিণতি ছিল ১৯২১ সালের মালাবার হিন্দু গণহত্যা। কলকাতা খিলাফত কমিটি গঠিত হয়েছিল এই খেলাফত আন্দোলনের অংশ হিসেবে। এটির মূল আদর্শ ছিল একটি আন্তর্জাতিক ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন, যা ভারতীয় রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলে।
প্রশ্ন হল—মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন বারবার এই মঞ্চ ব্যবহার করেন? তিনি কি শুধুই রাজনৈতিক সমর্থন চাইছেন, নাকি দীর্ঘমেয়াদে একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন? ভোটব্যাংকের রাজনীতির স্বার্থে তিনি একই মঞ্চ থেকে NRC বিরোধিতা করেন, মুসলিম ঐক্যের ডাক দেন, এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রার্থনার আহ্বান জানান—যা অত্যন্ত স্পষ্ট বার্তা বহন করে। ইতিহাস বলে, যখন রাজনীতি ও ধর্ম একত্রিত হয়, তখন সমাজে বিভাজন আরও গভীর হয়। এখন প্রশ্ন—পশ্চিমবঙ্গ কোন পথে যাচ্ছে?’

