নিজস্ব প্রতিনিধি,কালনা,২৭ ডিসেম্বর : ‘২০১৯ সালে পার্লামেন্টে যে সিটিজেন্টশিপ এমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট
আনা হয়েছে সেটা কিন্তু ৭৫-৮০ শতাংশ আমাদের পক্ষে । কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন কেন্দ্র সরকারের কাছে, কাছে কিসের ভয়ে আপনারা এটা সমাজে লাগু করতে পারছেন না ?’ কেন্দ্রীয় সরকারকে লক্ষ্য করে এই প্রশ্নই তুললেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর । রবিবার কালনার আশ্রমপাড়া এলাকায় এক মতুয়াদের সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন শান্তনু ঠাকুর ও সুব্রত ঠাকুর । সেখানেই মতুয়াদের দাবি নিয়ে তিনি কেন্দ্রের সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন !
উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে শান্তনু বলেন, ‘২০০৩ সালের কালা কানুন অনুসারে আপনি ভারতের নাগরিক নন । কারন ওই আইন অনুসারে যারা ১৯৪৭–১৯৭১ সালের মধ্যে ভারতে এসেছিলেন তাঁরা সবাই ভারতের নাগরিক । কিন্তু ১৯৭১ সালের পর থেকে ২০১৪ সালের ৩১ শে ডিসেম্বরের মধ্যে যারা এদেশে এসেছেন তাঁরা কেউ ভারতের নাগরিক নন। আর এই মানুষদের জন্যই আমাদের লড়াই ।’
এরপর তিনি বলেন, ‘যতই রাজ্য সরকার বলুক না কেন আপনাদের কাছে ভোটার,আধার,রেশন কার্ড আছে । কিন্তু সংবিধানে লিখিত আছে আপনি নাগরিক নন । সংবিধান সকলেই মানতে বাধ্য । কেউ সংবিধানের বাইরে নয় । যে বাইরে আছে, আগামী দিনে তাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে । তাই যতক্ষন না নাগরিকত্ব কার্ড হাতে পাচ্ছি ততক্ষন সংবিধান সম্মত হচ্ছি না ।’
এরপর তিনি বলেন, ‘আর সংবিধান সম্মত না হলে ৭০-১০০ বছর পর আমাদের উত্তরপুরুষদের অবস্থা যে রোহিঙ্গাদের মত হবে না তার গ্যারান্টি কে নেবে ? বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার ? ৫০ বছর পর নাও থাকতে পারে । বর্তমান রাজ্য সরকার ? আগামী টার্মে নাও থাকতে পারে । তাহলে কোন সরকার দায়িত্ব নেবে ? ‘ এরপর উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে শান্তনু বলেন, ‘সরকার তো আমরা নিজেরা । নিজেদের দায়িত্ব নিজেদের নিতে হবে । আপনাদের কানে খালি এই কথাটা বলে দিতে এসেছিলাম।’
এরপর শান্তনু বলেন, ‘আইন বলছে ওপার বাংলা থেকে ভয়ে পালিয়ে আসা হিন্দু- বৌদ্ধ- খ্রীষ্টান- পার্সিরাই কেবল তারাই নাগরিকত্ব পাবেন । কিন্তু তাঁদের প্রমানপত্র দিতে হবে ।’
এরপর তিনি উপস্থিত জনতাকে আশ্বস্ত করে জানান, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ সকল নমসূদ্র মতুয়াকে একটা করে সদস্য কার্ড দেবে । ওটাই হবে পরিচয়পত্র। আলাদা করে কোনও প্রমানপত্র দিতে হবে না ।
বিজেপি সাংসদ হয়েও সিএএ ইস্যুতে বিজেপি সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিতেই ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে,তবে কি এই সাংসদ অন্য দলে নাম লেখাবেন ! যদিও এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি কোনো জবাব দেননি । সাংবাদিকদের এই প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন তিনি।