এইদিন বিনোদন ডেস্ক,০২ নভেম্বর : আপনি কি জানেন বলিউডের এই বিখ্যাত অভিনেত্রীকে তিন তালাক এবং হালালার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল ? সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে ইসলামি প্রথা “তিন তালাক” নিষিদ্ধ করেছে । কিন্তু এই অভিনেত্রীর সময় “তিন তালাক” বহুল প্রচলিত ছিল । যেকারণে স্বামীকে পুনরায় ফিরে পেতে “হালালা” প্রথার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল অভিনেত্রীকে । আর এক অভিনেত্রীর বাবার সঙ্গে একমাস “হালালা” করে ফের স্বামীকে ফিরে পেতে সক্ষম হন তিনি । কিন্তু অভিনেত্রী তাদের এই ধর্মীয় প্রথাকে মন থেকে মেনে নিতে পারেননি । নিজের আত্মজীবনীতে হালালা এবং তার পরবর্তী যন্ত্রণার বর্ণনা দিয়ে তিনি লিখেছিল, “এটা কেমন জীবন যে, ধর্মের নামে আমাকে আমার দায়িত্ব অন্য কারো হাতে তুলে দিতে হচ্ছে। এখন আমার আর একজন বেশ্যার মধ্যে পার্থক্য কী?” সেই ধাক্কা সহ্য করতে না পেরে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
জানেন কে তিনি ? তিনি হলেন বলিউডের ট্র্যাজিক কুইন মীনা কুমারী । যার আসল নাম মেহজাবীন বানো৷ একসময় হিন্দি সিনেমার শীর্ষ অভিনেত্রীদের একজন ছিলেন। তিনি অল্প বয়সেই চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেছিলেন এবং দ্রুত বেশ বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। এই অভিনেত্রী অল্প বয়সেই বিয়ে করেছিলেন এবং অল্প বয়সেই মারা যান।
মীনা কুমারীর জন্ম ১ আগস্ট, ১৯৩৩ সালে মুম্বাইয়ে। ১৯ বছর বয়সে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা কামাল আমরোহির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। একদিন, রাগের বশে কামাল আমরোহি মীনা কুমারীকে তালাক দেন, কিন্তু পরে তিনি তার ভুল বুঝতে পারেন এবং অনুতপ্ত হন। তিনি মীনা কুমারীর কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । মীনা কুমারীও কামাল আমরোহিকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন এবং পুনরায় তাকে নিকাহ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু হালালা প্রথা তাদের বিবাহের পথে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় । কিন্তু প্রাক্তন স্বামীকে ফিরে পেতে মাথানত করতে হয় অভিনেত্রীকে । এই ধর্মীয় রীতি পালনের জন্য, মীনা কুমারী জিনাত আমানের বাবা আমান উল্লাহ খানের সাথে এক মাসের জন্য হালালা করতে হয়েছিল ।
হালালা কি ?
মুসলিম ধর্ম অনুসারে,হালালা একটি ইসলামী বিবাহ প্রথা যেখানে একজন মহিলাকে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য অন্য কাউকে নিকাহ করতে হয়, বিবাহ সম্পন্ন করতে হয় এবং সহবাসের পর সেই স্বামীকে তালাক দিতে হয়। এটি ‘নিকাহ হালালা’ বা ‘তাহলীল বিবাহ’ নামেও পরিচিত। এই প্রথাটি মূলত একজন পুরুষ কর্তৃক তার স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার পর পুনরায় বিবাহের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু । মীনা কুমারীর জন্য এই প্রথা অত্যন্ত বেদনাদায়ক প্রমাণিত হয়েছিল।
জিনাত আমানের বাবার সাথে মীনা কুমারীর হালালা
মীনা কুমারীর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। তিনি প্রথমে অভিনেত্রী জিনাত আমানের বাবা আমান উল্লাহ খানকে নিকাহ করেছিলেন। তার সাথে মাস সহবাস করেছিলেন । পরে তিনি তার কাছ থেকে তিন তালাক নিয়ে কামালকে আবার নিকাহ করেছিলেন ।
মীনা বলেছিলেন, “আমার এবং একজন পতিতার মধ্যে পার্থক্য কী?”
হালালার পরে, মীনা গভীর ব্যথা পেয়েছিলেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, “আমার এবং একজন পতিতার মধ্যে পার্থক্য কী?” অভিনেত্রীর জীবনীতেও এটি উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, “এটা কেমন জীবন যে আমাকে ধর্মের নামে আমার দেহ সমর্পণ করতে হয়েছে? যদি আমার সাথে এটি ঘটে থাকে, তাহলে আমার এবং একজন পতিতার মধ্যে পার্থক্য কী?” মীনা ১৯৭২ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মারা যান।।

