এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৯ আগস্ট : গতকাল নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি এই প্রকল্পের নামকরণ করেছেন- “শ্রমশ্রী” । এই প্রকল্প অনুযায়ী পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরে এলে তাদের এককালীন সহায়তা হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । এরপরও বিকল্প কাজ না পাওয়া অবধি (১ বছর পর্যন্ত) প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে অর্থ সাহায্য পাবেন পরিযায়ী শ্রমিকরা । কিন্তু রাজস্থানের একজন পরিযায়ী শ্রমিক প্রশ্ন তুলেছেন যে এই টাকায় কি হবে ? পরিবর্তে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি ।
ওই পরিযায়ী শ্রমিকের একটা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে । ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা গেছে, “মাননীয়া, শুভ নন্দন । পরিযায়ী শ্রমিক বলছিলাম । তো শুনলাম আপনার ৫,০০০ টাকার ব্যাপারটা । ৫০০০ টাকা করে দিয়ে দিচ্ছেন, বারো মাসে হয় ৬০ হাজার টাকা । তো আপনার ইলেকশনটা হচ্ছে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে । তারপরে ভগবান না করুন, আপনি যদি না থাকেন তারপরে কে দেবে ? আমরা যে এখানে কাজকর্ম ফেলে চলে যাব… এই যে দুটো রুম নিয়েছি… এই দুটো রুমের ভাড়া হচ্ছে মাসে ১২০০০ টাকা । আমরা পুরো ফ্যামিলি মিলে মাসে ৭৫ থেকে ৮০ হাজার টাকার কাজ করি এখানে ।
বাড়ি গেলে তিনজনার হয় ১৫ হাজার টাকা, ঠিক আছে ? তার সাথে ইলেকট্রিক বিল, খাওয়া-দাওয়া, এভরিথিং হাবিজাবি নিয়ে আরো খরচা বেড়ে যাবে । তাহলে ১৫ হাজার টাকা তে কি হবে মাননীয়া ? তার জন্য বলছি কাজ দিন… কাজ । যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ দিন। ঠিক আছে ?”
তিনি আরও বলেছেন,”বিশ্বাস না হলে নিউ কোচবিহার স্টেশনে বৃহস্পতিবার আর শনিবার গিয়ে সোয়া তিনটার দিকে একটু দাঁড়িয়ে থাকবেন । তাহলে দেখবেন কতগুলো মানুষ ডেইলি রাজস্থানে আসছে । ঠিক আছে মাননীয়া ? আপনার কাছে বিনীত নিবেদন যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ দিন । ঠিক আছে ? শুভ নন্দন ।”
এদিকে মমতা ব্যানার্জির ঘোষণা অনুযায়ী, রাজ্য সরকার অনুদান দেওয়ার জন্য ‘শ্রমশ্রী’ পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে বাংলার ২২ লক্ষ ৪০ হাজার শ্রমিক পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করেছে ৷ ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা পড়ে যায় শ্রমিকদের পরিচয় পত্র দেবে বলেও জানিয়েছে রাজ্য সরকার৷ এছাড়াও পরিযায়ী শ্রমিকদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা, খাদ্যসাথী ও স্বাস্থ্যসাথী কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । এই প্রকল্পের রূপায়ণ ও কার্যকারিতা সরাসরি নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ।
এদিকে মমতা ব্যানার্জির এই ‘স্বপ্নের প্রকল্প’ নিয়ে উঠছে বিস্তর প্রশ্ন । পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে থেকেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে যে বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত না হলে এই ৫ হাজার টাকার ভরসায় কী করে রাজ্যে ফিরবেন শ্রমিকরা ? আবার ফিরলেও ১ বছর পর আর ভাতা মিলবে না, তখন কী হবে ? তাদের কথায়, মমতা ব্যানার্জির কোথায় ভরসা করে ফিরে এলে পরেনা খেতে পেয়ে মরতে হবে ওটা পরিবারকে৷ তাই অনুদান নয়, তারা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি তুলছেন ।।