এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৬ এপ্রিল : একদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যখন মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কবলিত এলাকায় রয়েছে, অন্যদিকে কলকাতার সল্টলেক পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশন দপ্তরের সামনে তখন মোথাবাড়ি, ধূলিয়ান, সামসেরগঞ্জ, সুতি সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দুদের উপর আক্রমণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে পিড়িত হিন্দুদের ধর্না অবস্থানে নেতৃত্ব দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । মঞ্চ থেকে তিনি “জিহাদের চামড়া গুটিয়ে দেবো আমরা” ও “জালি হিন্দু মমতা নিপাত যাক” প্রভৃতি শ্লোগান তুললেন । গলা মেলালেন পীড়িত হিন্দুরাও।
“দাঙ্গাবাজদের নিয়ে সভা করেছেন মমতা ব্যানার্জি”
আজ মমতা বলেছেন, ‘মুর্শিদাবাদের দাঙ্গা কবলিত প্রায় ৪০০টি পরিবারের সাথে দেখা করলাম। তাঁদের দুঃখে আমি ব্যাথিত। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৩৬টি পরিবারের হাতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার চেক প্রদান করলাম।’ অন্যদিকে কলকাতার মঞ্চ থেকে শুভেন্দু পালটা বলেন,’সামসেরগঞ্জে দাঙ্গাবাজদের নিয়ে সভা করেছেন মমতা ব্যানার্জি । ৯০০ টি পীড়িত হিন্দু পরিবারের মধ্যে ৮৬০ টি পরিবার সেই সভায় যায়নি । পুলিশ ৪০ টি পরিবারকে ভয় দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ।’ তিনি আরও জানান, যে জাফরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা পিতা হরগোবিন্দ দাস ও পুত্র চন্দন দাসকে জবাই করে খুন করেছিল সেই গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের প্রতিটি হিন্দু বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীকে ধিক্কার জানাতে সকাল ১১ টা থেকে কালো পতাকা টাঙানো হয়েছিল ।
“মমতা ব্যানার্জি নিজেই দাঙ্গা করিয়েছেন এবং দাঙ্গাবাজদের সুরক্ষা দিচ্ছেন”
মুর্শিদাবাদে দাঙ্গার জন্য সোমবার মমতা বিজেপির ঘাড়ে দায় চাপান । বিএসএফ গুলি চালানোর কারনেই দাঙ্গা ছড়িয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি । এবিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘হ্যাঁ.. বিজেপি দাঙ্গা করে হিন্দুদের বাড়ি ভাঙলো ! বিজেপি দাঙ্গা করে মন্দির ভাঙলো ! বিজেপি দাঙ্গা করে জবাই করার তরবারি দিয়ে হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের গলা কাটলো । এই মহিলার মাথাটা গেছে । আর তোষণ করতে করতে সব সীমা পেরিয়ে গেছে ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’আজ দাঙ্গাবাজদের নিয়ে সভা করছেন মুখ্যমন্ত্রী । ধুলিয়ানের চেয়ারম্যান দাঙ্গাবাজ । ফারাক্কার বিধায়কের দাদা দাঙ্গায় ছিল । ফারাক্কার বিধায়ক নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের মিছিলে হাঁটে । যার মন্ত্রিসভায় সিদ্দিকুল্লা এবং ফিরহাদ হাকিম আছে,উনি কাকে কি বলছেন ? মমতা ব্যানার্জি নিজেই দাঙ্গা করিয়েছেন এবং দাঙ্গাবাজদের সুরক্ষা দিচ্ছেন ।’
এদিন ধর্না অবস্থান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সদ্য বিধবা হওয়া হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের স্ত্রীরা । শুভেন্দু অধিকারী তাদের প্রনাম করেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ না নিয়ে তার হাত থেকে ক্ষতিপূরণের চেক নেওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানান । শুভেন্দু অধিকারী এও জানান যে দাঙ্গা পীড়িত প্রতিটি হিন্দু পরিবারকে তিনি ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেবেন ।।