এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১০ জুন : তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার । আসাম,দিল্লি মিলে দু’ডজনের অধিক এফআইআর দায়ের হয়েছিল । তাকে গ্রেপ্তার করতে কলকাতায় ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল আসাম পুলিশ । কিন্তু সেই ওয়াজাহাত খানের নাগাল পায়নি তারা । কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে তোলায় হয় অসহযোগিতার অভিযোগ । ফলে আসাম পুলিশকে ফিরে যেতে হয় । কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে যে কলকাতাতেই লুকিয়ে ছিল ওয়াজাহাত খান(Wazahat Khan)। ঈদ মিটতেই সোমবার সন্ধ্যায় আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় ।
অপারেশন সিঁদূর নিয়ে পাকিস্তানিদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথপোকথনের সময় পুনের আইনের ছাত্রী ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলি নাকি ইসলাম ধর্মের অবমাননা করেছিলেন । শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে গত ১৫ মে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গার্ডেনরিচ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওয়াজাহাত। তার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ১,৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে শর্মিষ্ঠাকে কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করে । রাতারাতি তাকে বিমানে কলকাতায় আনা হয় । শর্মিষ্ঠার গ্রেপ্তারির ধরন ও তার সঙ্গে কলকাতা পুলিশের আচরণ নিয়ে ওঠে এক ঝাঁক প্রশ্ন । শর্মিষ্ঠার গ্রেপ্তারিতে কলকাতা হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয় এরাজ্যের পুলিশকে ।
এদিকে,শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী কলকাতার গার্ডেনরিচের রশিদী ফাউন্ডেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা ৩০ বর্ষীয় ওয়াজাহাত খানের বিরুদ্ধেও ওঠে দেবদেবীদের নিয়ে কটুক্তি করার অভিযোগ । সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সেই সমস্ত পোস্টগুলি ভাইরাল হয় । তারপর আসাম, দিল্লি মিলে একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে দায়ের হয় একের পর এক অভিযোগ । গল্ফগ্রিন-সহ কলকাতার একাধিক থানাতেও ওয়াজাহাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। তাকে গ্রেপ্তার করতে এসে ফিরে যেতে হয় আসাম পুলিশকে ।
যেকারণে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে তোলায় হয় অসহযোগিতার অভিযোগ ৷ যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে কলকাতা পুলিশ । ডিসি পোর্ট কলকাতার এক্স হ্যান্ডেলে এই দাবির নিন্দা করে লেখা হয়েছিল,’কলকাতা পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত অসম পুলিশের সাথে অসহযোগিতা করার বিভ্রান্তিকর দাবির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। আসাম পুলিশের একটি দল তদন্তের জন্য পিএস গার্ডেনরিচের অধীনে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছে। তাদের প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা যথাযথভাবে প্রদান করা হয়েছিল। স্থানীয় থানার সহায়তায় দলটি অভিযান পরিচালনা করে এবং কোনও প্রতিরোধ বা সমস্যা দেখা দেয়নি। দলটি কলকাতা পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং প্রয়োজনে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।আমরা সকলকে এই ধরনের ভিত্তিহীন দাবি করার আগে তথ্য যাচাই করার জন্য অনুরোধ করছি।’ শেষ পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ ওয়াজাহাত খানকে গ্রেপ্তার করল তাকে । কিন্তু শর্মিষ্ঠা পানোলিকে যে অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, একই অভিযোগে অভিযুক্ত ওয়াজাহাত খান, যে কলকাতাতেই লুকিয়ে ছিল, অথচ তাকে গ্রেপ্তার করতে এত সময় লাগলো কেন ? এই প্রশ্ন উঠছে ।।

