এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা(বাংলাদেশ),০৭ এপ্রিল : নামাজের সময় বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জ উপজেলায় মসজিদের ভিতরে তুমুল সংঘর্ষে জড়ালো দুই গোষ্ঠীর লোকজন । সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয় পুলিশকেও। সংঘর্ষে আহত হয়েছে ৩ পুলিশ কর্মীসহ অন্তত ১৬ জন । শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চরচারতলা মোল্লা বাড়ি ও কিছকি বাড়ি গোষ্ঠীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে । এদিকে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে গোটা এলাকা কার যত পুরুষ-শূন্য হয়ে গেছে । মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসেও মসজিদে নামাজ পড়ার লোক নাই ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, চরচারতলা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে মোল্লা বাড়ির নেতা মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা ইমামতি করেন। শুক্রবার ইশা ও তারাবিহ নামাজ শেষে মসজিদের মুসল্লি কিছকি বাড়ির নেতা ঠিকাদার শফিকুর রহমান ইমামের অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু মাসাআলা নিয়ে মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতে মুসল্লিদের দুপক্ষের মধ্যে তুমুল বাগবিতণ্ডা শুরু হয় । পরে নামাজ শেষে উভয় পক্ষ লাঠিসোঁটা,ধারালো অস্ত্র, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে । ভেঙে ফেলা হয় মসজিদের দরজা-জানালা । বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি মুখ মোকাবেলা করার চেষ্টা করে । পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইঁটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে নামাজিরা । দাঙ্গাকারীদের লক্ষ্য করে পালটা রবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ । কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা ।
এই বিষয়ে মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, তারাবিহ নামাজ শেষে কিছকি বাড়ির নেতা ঠিকাদার শফিকুর রহমান দুই মিনিট কথা বলতে আমার অনুমতি চাইলে আমি তাকে অনুমতি দেই। তিনি তার বক্তৃতায় মসজিদের কোনো মুসল্লিরই নামাজ হয় না বলে ফতোয়া দিলে উপস্থিত মুসল্লিরা এর প্রতিবাদ করে। এতে শফিকুল ইসলামের বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদসহ আমাদের বাড়ির লোকজনের উপর হামলা করে। এসময় আমাদের বাড়ির ৫ জন আহত হয়।
তবে মসজিদের মুসল্লি ঠিকাদার শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি তারাবিহ নামাজ শেষে নিয়ম অনুযায়ী অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু গুরত্বপূর্ণ মাসআলার বিষয়ে ইমাম সাহেব ও মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। নামাজের প্রয়োজনীয় তাসবিহ পাঠের জন্য রুকু, সেজদা ও দাড়ানোতে পর্যাপ্ত সময় দান ও কাতার সোজা করা করার গুরুত্ব নিয়ে এসব বিষয়ে খেয়াল দিতে ইমাম সাহেবকে অনুরোধ করি। এতে ইমাম সাহেব ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের ভিতরেই আমাদের উপর হামলা চালায় । পরে তারা আমার ও আমার এক ভাইয়ের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। আমার ব্যবহারের গাড়ি ও দুটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে। আমাদের বাড়ির ৮ জন গুরুতর আহত হয়।’
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহম্মেদ বলেছেন, সংঘর্ষ বাধার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ বাহিনী । সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। এসময় অফিসারসহ ৩ জন পুলিশ আহত হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’ বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান ।।