দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৯ জানুয়ারী : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার মালঞ্চ ও দেয়াসিন গ্রামের মাঝে ব্রহ্মাণী নদীর ওপর সেতু নির্মানের কাজ চলছে । বুধবার ওই কাজ পরিদর্শন করতে এসে ‘গো ব্যাক’ শ্লোগান শুনতে হল বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডলকে । ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা অভিযোগ তোলেন, সেতু নির্মানের কাজ করা স্থানীয় বেশ কিছু শ্রমিকের মজুরি বকেয়া আছে । এছাড়া নির্মানসামগ্রী সরবরাহ করেও এযাবৎ তার লক্ষাধিক টাকা মেলেনি । সাংসদের কাছে এনিয়ে বারবার তদ্বির করেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ । এদিন ওই সমস্ত টাকা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে সাংসদকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান কাটোয়ার মালঞ্চ এলাকায় স্থানীয় বেশকিছু গ্রামবাসী । তাঁরা সাংসদের উদ্দেশ্যে ‘গো ব্যাক’ শ্লোগানও দেয় । শেষে সাংসদের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যান ।
জানা গেছে,কাটোয়ায় মালঞ্চ ও দেয়াসিন গ্রামের মাঝ বরাবর বয়ে গেছে ব্রহ্মাণী নদী । নদীর উপর কোনও স্থায়ী সেতু ছিল না । স্থায়ী সেতু নির্মানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি তুলছিলেন দুই গ্রামের মানুষ । এরপর ২০১৮ সালে সাংসদ কোটায় ২ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয় সেতু নির্মানের জন্য । প্রথমে যে ঠিকাদারকে সেতু নির্মানে জন্য বরাত দেওয়া হয়েছিল তিনি নদীর উপরে কয়েকটি পিলার তৈরির কাজ করার পর কাজ অসম্পূর্ণ রেখে চলে যান । তারপর দ্বিতীয় এই ঠিকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ,চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরবরাহ করা নির্মাণসামগ্রীর মোট ৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা বকেয়া আছে । এছাড়া ওই সময় কালে বহু শ্রমিককে কাজ করিয়ে টাকা দেওয়া হয়নি । সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা বকেয়া আছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা । গ্রামবাসী আশীষ কুমার মণ্ডল বলেন, ‘সাংসদ সুনীল মণ্ডল মধ্যস্থতা করে আমাদের সব টাকা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন । কিন্তু এযাবৎ বকেয়া টাকা কেউ পাননি ।’
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,এদিন দুপুরে সেতুর কাজ পরিদর্শনের জন্য সুনীল মণ্ডল এলে মালঞ্চ এলাকায় স্থানীয় বেশকিছু গ্রামবাসী জড়ো হয়ে তাঁকে ঘিরে ধরে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন । বিক্ষোভের জেরে গ্রাম ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন সাংসদ । এই বিষয়ে সুনীল মণ্ডল বলেন, ‘গ্রামবাসীরা যার কাছে টাকা পায় সেই ঠিকাদার এখন আর কাজ করছে না । ঠিকাদার বলেছে ২-৪ লক্ষ টাকা বকেয়া আছে। কিন্তু গ্রামবাসীদের কথায় ২০ লক্ষ টাকা বকেয়া আছে । ঝামেলা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য আমি জেলাশাসককে বলেছিলাম । এখন ওই ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে গ্রামবাসীদের ঠিক কি চুক্তি হয়েছিল আমার জানা নেই ।’।