এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০৭ ডিসেম্বর : যখন থেকে ইসলামি জঙ্গি সংগঠন জামাত ইসলামি, বাংলাদেশ ন্যাশানাল পার্টি (বিএনপি) এবং কাতার ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিযবুত তেহরীর সমর্থনে ডঃ মহম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের ক্ষমতায় এসেছে তখন থেকে সেদেশের হিন্দুরা চরম আতঙ্কের মধ্যে আছে । হিন্দুদের খুন, মেয়েদের ধর্ষণ, ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর-লুটপাট- অগ্নিসংযোগ, মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে । ফের মন্দিরে হামলা চালিয়ে কালী প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে । বিশ্ববিখ্যাত যোগী লোকনাথ ব্রহ্মচারী বাবার আশ্রম দখলের ডাক দিয়েছে মুসলিমরা । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য হিন্দু অধ্যাপককে জোর করে মুচলেকা নিয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করেছে মুসলিম ছাত্ররা । ধর্মনিন্দার জিগির তুলে একজন হিন্দু কিশোরের উপর মৃত্যুর ফতোয়া জারি করা হয়েছে । বর্তমানে কিশোরসহ গোটা পরিবার ঘরছাড়া । বাংলাদেশ হিন্দুদের জন্য কার্যত বিভিষীকায় পরিনত হয়েছে।
বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের খবরের পেজগুলি থেকে জানা যাচ্ছে যে নেত্রকোণা সদর উপজেলার কালী মন্দিরে হামলা ও দেবী প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে । খবর পেয়ে নেত্রকোণা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহের খান পাঠান এবং নেত্রকোণা মডেল থানার ওসি শাহ নেওয়াজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় লক্ষীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির যুবলীগ সভাপতি জয়নুল আবেদিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,এ ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনাস্থলে নেত্রকোণা মডেল থানার পুলিশ টহল দিচ্ছে । বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
জানা গেছে,চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ অনুপম সেনকে জোর করে পদত্যাগ করানো হয়েছে । তিনি সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যাপক ছিলেন । পড়ুয়াদের কাছে খুব প্রিয় ছিলেন তিনি । এছাড়া বহু দুঃস্থ ছাত্র ছাত্রীর কলেজ ফি নিজের পকেট থেকে দিয়েছিলেন । কিন্তু শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার অপরাধে জামাত ইসলামি ও বিএনপির জঙ্গিরা অনুপম সেনের পদত্যাগের জন্য বেশ কয়েকদিন ধরে সরব হয়েছিল । শেষ পর্যন্ত তারা ভয় দেখিয়ে তাকে পদত্যাগের মুচলেকায় স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে ।
এদিকে বাংলাদেশের সোনারগাঁওয়ে মহান যোগীপুরুষ লোকনাথ ব্রহ্মচারীর প্রখ্যাত বারোদী আশ্রম রয়েছে । হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে ওই আশ্রম অত্যন্ত পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হয় । কিন্তু বাংলাদেশের নৈরাজ্য পরিস্থিতিতে মুসলিমরা আশ্রমটি দখলের ডাক দিয়েছে ।সেভ মুসলিম উম্মাহ(অফিসিয়াল) নামে একটা ফেসবুক পেজের অ্যাডমিন সইফুল রহমান ফাহিম তার স্বজাতীয়দের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়ে লিখেছে,’সোনারগাঁয়ের বারদীর মাসজিদুল আকসা।বারদী আশ্রমের দখলদার হিন্দুদের কাছ থেকে উদ্ধার করতে হবে ইনশাআল্লাহ।বারদী আশ্রমের ভিতরে ৩২ শতাংশ জায়গা মসজিদের নামে রয়েছে। কিন্তু তারা রাস্তা না দিয়ে চতুর্পাশে ওয়াশরুম এবং দেয়াল দিয়ে বেষ্টন করে রেখেছে। যার কারনে মসজিদের জায়গা পর্যন্ত যাওয়া যাচ্ছে না। মসজিদও তৈরি করা যাচ্ছে না।সুতরাং বাংলাদেশের সকল তাওহীদি জনতা সহ সোনারগাঁয়ের সকল মুসলিম এক হয়ে আমাদের মাসজিদুল আকসার জায়গা উদ্ধার করতে হবে। উপস্থিত থাকিবেন দেশ বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম। তারিখ:- ৯/১২/২০২৪ ইংরাজী সোমবার,স্থান বারদী বাজার।’ এদিকে হিন্দুদের তরফে আহ্বান জানিয়ে লেখা হয়েছে,’সোনারগাঁওয়ে বারোদী আশ্রম হামলা করে জমি দখলের পরিকল্পনা চলছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার সচেতন প্রগতিশীল মানুষ, আশ্রমের ভক্তবৃন্দ ও সারা দেশের হিন্দু জনগোষ্ঠী সতর্ক হোন এবং সহিংসতা এড়িয়ে এই হামলা প্রতিরোধ করুন৷’
হিন্দু কিশোরের বিরুদ্ধে তোলা ধর্মনিন্দার অভিযোগ প্রসঙ্গে রবিন চন্দ্র রায় নামে এক বাংলাদেশি লিখেছেন,’আমার বাসা লাল্মনিরহাট জেলা,আর এই কাহিনি গত ২ দিন আগের । আমার বাসা থেকে কয়েক কিলকিলোমিটার দূরে “পরিতোষ রায়” নামে একজন হিন্দু ছেলে মুসলিম ছেলের পেস্ট কমেন্ট করে। কমেন্ট টা ঠিক এরকম ছিল যে শুকরের মাংসের পিক দিয়া সে লিখছিল এটা নবির প্রিয় খাবার,,,। ত এইটুকু বিষয় নিয়া আমাদের জেলায় অনেক প্রব্লেম হইছিল,ছেলে পরিবার সহ পলাতক,কিন্তু সে অইরকম করার পর তার একজন খুব কাছের মুসলিম বন্ধুকে মেসেজ দিয়ে কথা গুলা বলছিল । কিন্তু দুক্ষের বিষয় তাও বন্ধুও তার পাশে ছিল না । একসাথে বড় হইছে কিন্তু তারপর ও পাশে থাকল না । তাই সবাই কে বলতে চাই আপনআরা যা পারেন মুসলিম বন্ধু কম বানাবেন । তারা আগে থেকেই ভেবে রেখেছে যে হিন্দুদের সাথে তাদের যুদ্ধ হবে আর তারা ভাবে যে হিন্দুরা তাদের শত্রু৷ তাই জন্য যে যেভাবে পারেন মুসলিম বন্ধু ত্যাগ করেন তারা কোনদিনও আপনার ভালো চাইবে না…ধন্যবাদ ।’।