এইদিন ওয়েবডেস্ক,রাজশাহী,২২ মার্চ : বাংলাদেশে হিন্দুদের ধর্মস্থলের উপর জিহাদি হামলা নতুন কোনো ঘটনা নয় । ওই সমস্ত ঘটনায় হামলাকারীদের সাধারণত কোনো শাস্তির মুখেও পড়তে হয় না । ফলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে হিন্দুদের উপর হামলা চালাতে উৎসাহী হয় । এবারে খোদ থানার ওসির নেতৃত্বে হিন্দুদের ধর্মস্থল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে । জানা গেছে, বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার তানোর থানার অন্তর্গত কামারগাঁ কেন্দ্রীয় মন্দির কমিটি বারুনী উৎসব উপলক্ষে বিশেষ পূজা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল । মঙ্গলবার সকাল থেকে ১৬ প্রহর ব্যাপী লীলা কীর্তন অনুষ্ঠান চলার কথা ছিল । সেই উপলক্ষে পূণ্যার্থীদের জন্য মন্দির প্রাঙ্গণে বড়সড় প্যান্ডেল করা হয়েছিল । কিন্তু সোমবার গভীর রাতে তানোর থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী গিয়ে প্যান্ডেলে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ । যদিও সেই সময় মন্দির কমিটির লোকজন তখন উপস্থিত ছিলেন না । কিন্তু ভাঙচুরের ঘটনাটি দু’একজন প্রতিবেশীর নজরে পড়ে ।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে ঘটনার কথা চাওড় হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় হিন্দুরা । তারা পুলিশকে ঘিরে ধরে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । তবে তানোর থানার ওসি পূজো প্যান্ডেলে কেন হামলা চালালেন তা স্পষ্ট নয় । উদ্যোক্তরা জানিয়েছেন, তাঁরা প্রশাসনের কাছে যথাযথ অনুমতি নিয়েই উৎসবের আয়োজন করেছিলেন । কিন্তু পুলিশের তান্ডবে এখন উৎসব পন্ড হওয়ার মুখে । এদিকে এই ঘটনার পর বাংলাদেশের পুলিশ ও প্রশাসনের মধ্যে মৌলবাদের অনুপ্রবেশের প্রমাণ ফের একবার প্রকাশ্যে এলো।
প্রসঙ্গত,প্রতি বছর বাংলার চৈত্র মাসের শতভিষা নক্ষত্রযুক্ত মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে বারুনী স্নান অনুষ্ঠিত হয় । এই স্নান বস্তুত্ব হিন্দুদের কাছে মকর সংক্রান্তির স্নানের মতই একটি পূন্য স্নান উৎসব । বারুণী পূজা ভারতের ওডিশা ও বাংলাদেশের হিন্দুদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় । ধর্মীয় তাৎপর্য ছাড়াও, বারুণী পূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমাবেশের মাধ্যম হিসাবে মনে করা হয় । পূণ্যার্থীরা পূজা উদযাপন করতে, খাবার এবং পানীয় ভাগ করে নিতে এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে একত্রিত হয় । যারা এই পূজোতে অংশগ্রহণ করে তাদের জন্য আশীর্বাদ, সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসে বলে মনে করা হয়।।