এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৮ অক্টোবর : এস আই আরের বিরোধিতায় দলের বড়-মেজো-ছোটো নেতাদের কেউ লণ্ডভণ্ড করার,কেউ আগুন জ্বালোনোর, কেউ বিজেপির লোকেদের খুনের হুমকি পর্যন্ত দিচ্ছেন । তৃণমূল নেতাদের নাগাড়ে এই সমস্ত হুমকির মাঝে আজ মঙ্গলবার তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির “ভাইপো” অভিষেক এবার সরাসরি দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকেই হুমকি দিয়ে বসলেন । তিনি হুমকি দিয়ে বলেন,’আগেও বলেছি, একটা বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে বাংলা থেকে এক লক্ষ লোক গিয়ে কমিশনের অফিস ঘেরাও করবে। অমিত শাহের দিল্লি পুলিশ আটকে দেখাক ।’ এখানেই থেকে থাকেননি ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূল সংসদ । তিনি জ্ঞানেশ কুমারকেই হুমকি দিয়ে বলেন,’আমি সাংসদ হিসাবে এদের ওয়ার্নিং দেব, আজ নয় কাল সরকার বদলাবে। জ্ঞানেশবাবু দেশ ছেড়ে পালাবেন না। বিজেপি থাকবে না, দেশের সংবিধান থাকবে। অমিত শাহ থাকবে না। পাতাল থেকে মাটি খুঁড়ে বের করে আনবো ।’
রীতিমতো মানচিত্র দেখিয়ে অভিষেক দাবি করেছেন, বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের সঙ্গে ভারতের যে যে রাজ্যগুলির সীমানা রয়েছে, সেই ন’টি রাজ্যের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই এসআইআর হচ্ছে। কমিশনের এই পদক্ষেপের মধ্যে ‘অভিসন্ধি’ রয়েছে বলে তিনি মনে করছেন । তিনি প্রশ্ন তোলেন, অসমে কেন এসআইআর হচ্ছে না?সেখানে বিজেপি ক্ষমতায় আছে বলেই কি এসআইআর হচ্ছে না? এমনকী, ভারতের ম্যাপ খুলে রাজ্যগুলির অবস্থান নিয়ে৷ অসমেও বাংলাদেশের বর্ডার আছে। তাহলে শুধু বাংলাতেই কেন এসআইআর ?’ বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে অভিষেক ভবিষ্যৎবানী করেন,’যতই এসআইআর হোক, ২০২১ সালের তুলনায় একটি হলেও বিধানসভা ভোটে বেশি আসন পাবে তৃণমূল।’
অভিষেকের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া এক্স-এ জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির যুবমোর্চার সহ-সভাপতি ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি । তিনি লিখেছেন,’চার আনার কলমি শাক তার আবার ক্যাশ মেমো! যে ছেলেটা ভোট চুরি, হিংসা, দুর্নীতি আর পিসির ছায়াতলে রাজনীতি শিখেছে, সে আজ হুমকি দিচ্ছে! নিজের যোগ্যতায় কিছু করতে পারেনি, অথচ কোটি কোটি টাকার মালিক। এখন ভোটার তালিকা শুদ্ধিকরণ শুরু হতেই বাঙালিদের ওপর অত্যাচারের গল্প বানাচ্ছে! ভাইপো জানে না? একসঙ্গে বারোটি রাজ্যে এই প্রক্রিয়া চলছে — শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়। বিহারে হয়েছে প্রথম পর্যায়ে এবং এবার ধীরে ধীরে পুরো দেশে হবে।
গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের তো খুশি হওয়ার কথা — তাহলে ভাইপো রেগে যাচ্ছে কেন? কারণ ও জানে, এর সময় শেষ। এবার আর জালি ভোট, মৃত মানুষের ভোট বা দাদাগিরিতে কাজ হবে না। ভাইপো মানুষকে ভুল বুঝিয়ে উস্কাতে চাইছে, কিন্তু বুদ্ধিমান মানুষ এবার আর ভুলবে না। নিজের মুখে বড় বড় কথা বলার আগে ছোট্ট একটা কাজ করুক — জানাক, কোন কাজ না করে কোটি কোটি টাকার মালিক হলো কীভাবে! যদি সেটা বলে দিতে পারে, তবে পশ্চিমবঙ্গের সব মানুষই বড়লোক হয়ে যাবে।
একাধিক দুর্নীতির মামলা যার বিরুদ্ধে, সে আবার সততার জ্ঞান দেয়! বিনয় মিশ্র কোথায় পালিয়েছে সেটা আগে বলুক। দুবাইতে কার সঙ্গে দেখা করতে যায়, সেটাও স্পষ্ট করুক। ECI আইন মেনে, সংবিধান মেনে কাজ করছে। তাতেই এত গায়ে জ্বালা কেন ভাইপো? আইনকে ভয় পেলে হুমকি নয়, নিজের হিসাব মিলিয়ে রাখো। এবার পালানোর নয়, জেলে যাওয়ার পালা।’।
