এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্বস্থলী,৩০ ডিসেম্বর : ‘করোনা যাবে কি না বা কবে যাবে কোনও ডাক্তারবাবু বলতে পারছেন না । কোনও বিজ্ঞানী,গবেষক এমনকি জ্যোতিষরাও বলতে পারছেন না । কিন্তু ২০২১ সালে তৃণমূল যাচ্ছে,এই দলটা যাচ্ছে,এই সরকারটা যাচ্ছে এটা একশ শতাংশ নিশ্চিত । কারন তৃণমূলের ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে গেছে । মঙ্গলবার ভারতীয় জনতা সংখ্যালঘু মোর্চার উদ্যোগে পূর্বস্থলী-১ ব্লকের নওপাড়া মোড়ে আয়োজিত বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরে এসে এই ভাষাতেই শাসকদলকে নিশানা করলেন বিজেপির রাজ্য সহ সভানেত্রী মাফুজা খাতুন ।
এদিন রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে তৃণমূল সরকারকে এক হাত নেন মাফুজা । তিনি বলেন, ‘রাজ্যে কি রকম স্বাস্থ্য পরিষেবা চলছে দেখুন, একবার বহরমপুর আসার পথে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোর দুর্ঘটনার কবলে পড়েন । কিন্তু তিনি রাজ্যে চোখের চিকিৎসা না করিয়ে ভিন রাজ্যে চিকিৎসা করাতে চলে যান । তৃণমূলের মন্ত্রী, এমপি,এমএলএ, তৃণমূলের কোনও নেতা কলকাতার কোনও হাসপাতালে চিকিৎসা করান না । আর মুখ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন আমার রাজ্যের চিকিৎসা ব্যাবস্থা গোটা বিশ্বের মধ্যে এক নম্বরে । যদি তাই হবে তাহলে ভাইপোর চিকিৎসা কেন বাইরে নিয়ে গিয়ে করিয়েছিলেন,দিদিমনি ?’
এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মাফুজাদেবী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী, পথসাথী, সবুজসাথীসহ এত সাথী করছেন যে ওনার সাথীরা বিজেপিতে চলে যাচ্ছেন । ওনার মন্ত্রী,এমএলএ, এমপিরা সব চলে যাচ্ছেন । উনি যত সাথী করছেন ততই ওনার সাঙ্গপাঙ্গরা বিজেপিতে চলে যাচ্ছেন ।’
মাফুজা খাতুন বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের ৭৬ হাজার কৃষক প্রধানমন্ত্রী কৃষান সম্মান যোজনা থেকে বঞ্চিত হলেন । ২০১৯ সালে ৬ হাজার, ২০২০ সালে ৬ হাজার আর করোনার জন্য ২ হাজার মিলে মোট ১৪ হাজার টাকা থেকে বঞ্চিত হলেন এরাজ্যের কৃষকরা । ওই টাকাটা পেলে নিম্নবিত্ত কৃষদের অনেক উপকার হত ।’ এরপর তিনি শাসকদলকে নিশানা করে বলেন, ‘তৃণমূলের নয় কাটমানি আছে । ছাঁটমানি আছে । ফুলমানি আছে। হাফমানি আছে। তোলাবাজি আছে । সিন্ডিকেট আছে । চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা তুলছে । ওদের তো টাকার কোনও অভাব নেই । খুল্লামখুল্লা চুরি করছে,দূর্নীতি করছে । আমফানে ত্রাণের টাকা, করোনা মোকাবিলার জন্য কেন্দ্র সরকার যে টাকা দিয়েছিল সমস্ত খুল্লামখুল্লা চুরি করল ।’ তাঁর কথায়, ‘চুরি চলছে। দুর্নীতি চলছে । লোপাট চলছে ।’
এরপর তিনি বলেন, ‘সেজন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের রাজ্যের আইটির ছেলেরা লিখেছে ‘এসেছি একা,যাবো একা,আর মাঝপথে চাল চোর-গম চোর তৃণমূলের সাথে দেখা ।
সভার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মাফুজা খাতুন বলেন, ‘যে জায়গায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির করা হচ্ছে সেখানে আশেপাশে কোনও হাসপাতাল নেই । প্রায় ২০ কিমি দুরে চাঁদপুরে একটা হাসপাতাল আছে । তাই এলাকার মানুষ যাতে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পান সেই উদ্দেশ্যে খড়দহের ডক্টরস ফোরামের সহযোগিতায় এদিনের এই স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে ।’
এদিন পূর্বস্থলী-১ ব্লকে বিজেপির ৩৭-এ মন্ডলের অন্তর্গত নওপাড়া মোড়ে বিনামূল্যে এই স্বাস্থ্য শিবিরটির আয়োজন করা হয়েছিল । বিজেপি নেত্রী মাফুজা খাতুন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপি রাজ্য সংখ্যালঘু মোর্চার সহ-সভাপতি বশির আলম,পূর্ব বর্ধমানে বিজেপির সাংগঠনিক কাটোয়া জেলার সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ, কাটোয়া সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি ডালিম মোল্লা,ডঃ কে ডি ভট্টাচার্য্য, বিজেপির পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভার কনভেনার রক্ষিত পরামানিক, ৩৭-এ মন্ডলের সভাপতি সৌমেন রায়, পূর্ব বর্ধমান জেলার ওবিসি মোর্চার সম্পাদক মাধব ঘোষ ও স্বাস্থ্য সহায়ক মেডিকেল টিম।
এদিন সাহাজাদপুর,ধর্মতলা,বকপুরসহ ১৫-২০ টি গ্রামের দুই শতাধিক মানুষ এই শিবিরে চিকিৎসা করাতে আসেন । বৃহস্পতিবার একই জায়গায় চক্ষু পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন করা হবে বলে উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ।।