এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০২ জুলাই : একুশে জুলাই জুলাই ‘মমতার ডিম ভাত খাওয়ার’ অনুষ্ঠানের দিন উত্তরকন্যা অভিযান এবং ৯ ই আগস্ট অভয়া ধর্ষণ খুনের বর্ষপূর্তিতে নবান্ন অভিযান ঘোষণা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকার । ল’কলেজের ছাত্রীকে কলেজের ভিতরে নারকীয় গণধর্ষণের প্রতিবাদে আজ বুধবার বিকেলে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার ডাকে(বিজেওয়াই এম) ‘কসবা চলো’র ডাক দেওয়া হয় । বিতর্কিত ওই কলেজের উল্টোদিকে হাইকোর্টের অনুমতি ক্রমে পথসভা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী । প্রবল বৃষ্টির মাঝেও বিজেপির অসংখ্য দলীয় কর্মীরা শুভেন্দু অধিকারীর ভাষণ মনোযোগ দিয়ে শোনেন । ওই সভাতেই আগামী কর্মসূচি গুলির কথা ঘোষণা করেন বিরোধী দলনেতা ।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আগামীকাল আমরা বিজেপির নতুন সভাপতিকে বরণ করবো । আর আমরা ঘোষণা করে দেবো পরবর্তী কর্মসূচি ৷ আজকে আমাদের ইনচার্জ সুনীল বনশল, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও জিএস অমিতাভ চক্রবর্তীকে রেখে ফাইনাল করে এসেছি, যেদিন মমতার ডিম ভাতের অনুষ্ঠান একুশে জুলাই কলকাতায় হবে সেদিন যুবমোর্চা শিলিগুড়ির উত্তরকন্যা অভিযান করবে ।
একুশে জুলাই মমতার জিহাদিরা, চোরেরা ডিম ভাত খাওয়ার জন্য কলকাতায় আসবে । আর আমরা শিলিগুড়িতে গিয়ে উত্তর কন্যাটা নড়াবো ।’ তিনি বলেন,’৫ তারিখে পানিহাটিতে উল্টো রথে যাব । ঐদিন আমি অনুমতি নিয়ে অভয়ার বাবা-মায়ের কাছে যাব। আর বাবাকে বলবো পতাকা ছাড়া ৯ ই আগস্ট অভয়া ধর্ষণ খুনের বর্ষপূর্তিতে নবান্ন অভিযান করতে হবে ।’
তিনি বলেন,’ল’কলেজও সুরক্ষিত নয় । আমাদের যুব মোর্চাকে অনেক লড়াই কলকাতা হাইকোর্টে গিয়ে এই অনুষ্ঠান করতে হয়েছে । রথযাত্রার দিন যেদিন প্রথম ঘটনা ঘটে সেদিন কসবা থানার সামনে অনুপম ভট্টাচার্য, রাকেশ সিং, ইন্দ্রনীল খানদের নেতৃত্বে প্রথম বিজেপি কর্মীরা থানায় বিক্ষোভ শুরু করে । তারপরে আমাদের রাজ্য সভাপতি ডক্টর সুকান্ত মজুমদার সহ নেতৃত্বকে বলপূর্বক গরিয়াহাট মোড় থেকে টেনেহেঁজরে মমতার পুলিশ কুখ্যাত মনোজ ভার্মা লালবাজারে নিয়ে গিয়ে সারা রাত্রি ধরে আটকে রাখেন । তারপরের দিন ২৮ তারিখে আমরা গড়িয়াহাট থেকে বড় মিছিল করে প্রতিবাদ সংগঠিত করেছিলাম । আমরা বলেছিলাম কসবা আমরা আসবো । ক্ষমতা থাকলে মমতা পুলিশ, মমতার জিহাদি বাহিনী, ভাইপো গ্যাং আটকে দেখাও ।’
তিনি বলেন,’আমাদের যুব মোর্চার ভাইয়েরা হাইকোর্টে গেছে । হাইকোর্ট বলল থানার দিকটায় যাবেন না । কারণ থানাতে নাকি তৃণমূলের ভাইপো গ্যাংয়ের তিন ধর্ষক পুলিশ রিমান্ড নেওয়া আছে। আমরা বললাম আমরা কসবা যাব । কোর্ট বলল হ্যাঁ যাবেন কসবা । আমরা বললাম কসবা ল’কলেজের সামনে যাব, যেখানে আমাদের বোনকে ধর্ষণ করা হয়েছে । মা-বাবাকে যতই আটকে রাখুন বাংলার মা বোনেরা আজকে ঝাড়ু নিয়ে এসেছে । আজকে এক হাজার ঝাড়ু নিয়ে আমাদের মা বোন দিদিরা যুব মোর্চার মিছিলে এসেছে ।’ এরপর তিনি “ঝাড়ু মেরে কর সাফ, মমতার পদত্যাগ” স্লোগান তোলেন ।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমরা আওয়াজ দিয়েছি “মমতা হটাও বাংলা বাঁচাও”। আমরা আওয়াজ দিয়েছি “ধর্ষকদের ফাঁসি চাই” । আমরা মমতার পতন দেখতে চাই ।’ সেই সময় প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয় । শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন , ‘গোটা রাস্তা ভিজেছেন আর এইটুকু ভিজলে কি আছে । এক বছর আগের অভয়ের কথা ভুলে গেলেন ? চোখ থেকে জল বেরোয়নি রক্ত বেরিয়েছে । কি কষ্ট দিয়েছে ডাক্তার বোনটাকে । হাসখালি, কালিয়াগঞ্জ, কামদুনি, সন্দেশখালি, কাটোয়া, কাকদ্বীপ, মাটিগাড়া, ময়নাগুড়ি, রামপুরহাটের বগডুই গোটা বাংলায় মমতার বাহিনী ধর্ষকের ভূমিকায় । তাই এদেরকে তুলে ফেলতে হবে । এতো সবে শুরু, অভিযান থামবে না । বিজেপি রাজপথে আছে । বৃষ্টি তো দূরের কথা আমরা গুলি খেতে প্রস্তুত আছি।’
তিনি শ্লোগান তোলেন, ‘নো ভোট টু মমতা’,’মমতা হটাও বাংলা বাঁচাও’, ‘কন্যা বাঁচাও মমতা হাটাও’ প্রভৃতি৷ তিনি বলেন,’এ লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে । প্রত্যেকদিন রাস্তায় থাকবেন তো ?’ এরপর ফের বিরোধী দলনেতা শ্লোগান তোলেন, ‘দড়ি ধরে মারো টান হীরক রানী হবে খানখান’, ‘হীরক রানী হায় হায়’ , ‘ধর্ষকদের নেত্রী কে, মমতা আবার কে’, ‘চোর মমতা হায় হায়’, ‘মমতা পুলিশ হায় হায়’ প্রভৃতি ।
সব শেষে বিরোধী দলনেতা বলেন,’কোর্ট বলেছে পাঁচটায় শেষ করতে, কিন্তু এটা শেষ নয় এটা শুরু । লড়াই হবে । মনোজ ভার্মা কালকে হাইকোর্টে এক চড় খেয়ে ছিলেন । আজকে এই মঞ্চটা করতে দেবেনা । কোথায় কসবার ওসি ? আজকের ২ চড় খেয়েছেন । কালকে মনোজ ভার্মা এক চড় খাবেন । আজকের দুটো চড়ের একটা ভাইপোকে আর একটা পিসিকে একটা পাঠিয়ে দেবেন ।’ মঞ্চ থেকে নামার সময় কসবা ল’কলেজের দিকে আঙুল উচিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘মমতা ছিঃ’ ।।

