এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৭ সেপ্টেম্বর : শিকলে বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে জন বাংলাদেশিকে বোয়িং ৭৭৭ বিমানে ঢাকার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত বৃহস্পতিবার রাতে নামিয়ে দিয়ে চলে গেছে মার্কিন বাহিনী । বিমানবন্দরের মুখপাত্র স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ মাসুদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা একটি চার্টার্ড ফ্লাইট ৩০ জন বাংলাদেশিকে বৃহস্পতিবার রাতে নামিয়ে দিয়ে গেছে। এদের মধ্যে একজন নারী, বাকি ২৯ জন পুরুষ। গত ছয় মাসে কয়েক দফায় অন্তত ১৮০ জন বাংলাদেশিকে এভাবে ফেরত পাঠিয়েছে আমেরিকা । তাদের আমেরিকায় অনুপ্রবেশের কাহিনীও রোমাঞ্চকর । বাংলাদেশি দালালের মাধ্যমে ৪০ থেকে ৮০ লাখ টাকা খরচ করে তারা অবৈধভাবে আমেরিকায় পাড়ি জমায় । ওই বিপুল অঙ্কের টাকা জোগাড় করতে তাদের প্রচুর ধারদেনা করতে হয়েছে । তাদের যাত্রাপথও ছিল দুর্গম৷ ঢাকা থেকে বিমানে প্রথমে ব্রাজিল যায় তারা । সেখান থেকে তিন মাস ধরে বলিভিয়া, কোস্টারিকা, পানামার পাহাড়-জঙ্গল আর ভয়ঙ্কর ‘ডারিয়েন গ্যাপ’ পেরিয়ে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুপ্রবেশ করে । শেষমেষ টাকা পয়সা খুইয়ে শেকলবন্দি আর হাতকড়া পরে অপরাধীর বেশে দেশে ফিরতে হয়েছে তাদের। উড়োজাহাজে করে পাঁচ দিনের দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে ঢাকায় নামিয়ে দিয়ে গেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
বন্দি অবস্থায় দেশের মাটিতে নেমে ক্ষুব্ধ নোয়াখালীর আজগর হোসেনের কথায়,প্রায় অর্ধকোটি টাকা শেষ করেছেন আমেরিকা যাত্রার পেছনে। নিজের জমানো টাকার পাশাপাশি ধারদেনাও হয়েছে। এখন চোখে কেবল অন্ধকার, বাড়িতে ইতোমধ্যেই পাওনাদারদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেছে। অথচ আরও ভালো প্রবাস জীবনের আসায় বছরখানেক আগে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফেরেন তিনি। দালালদের খপ্পরে পড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করা তার এই ভয়ঙ্কর যাত্রা শেষ হয় ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পুলিশের হাতে ধরা পরার পর । তাদের দলে অনেকেই আছেন যারা পাওনাদারদের ভয়ে ঢাকায় নামার পর বাড়িতে যাননি,বলে জানান তিনি।
বন্দি অবস্থায় দেশের মাটিতে নেমে ক্ষুব্ধ, অপমানিত মধ্যবয়সী নোয়াখালীর আজগর হোসেন বলেন, প্রায় অর্ধকোটি টাকা শেষ করেছেন আমেরিকা যাত্রার পেছনে। নিজের জমানো টাকার পাশাপাশি ধারদেনাও হয়েছে। এখন চোখে কেবল অন্ধকার, বাড়িতে ইতোমধ্যেই পাওনাদারদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেছে। অথচ আরও ভালো প্রবাস জীবনের আসায় বছরখানেক আগে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফেরেন তিনি। দালালদের খপ্পরে পড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করা তার এ ভয়ঙ্কর যাত্রা শেষ হয় ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পুলিশের হাতে ধরা দেওয়ার মাধ্যমে।
দুর্গম পথ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় গিয়ে পৌঁছেছিলেন বাংলাদেশের আজগর হোসেনরা। এভাবে অনেকগুলো দেশ পেরিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপে পৌঁছানোর বিষয়টিকে এখানে বলা হয় ‘টারজান ভিসা’। আজগর বলেন, “এখানে কারও ৮০ লাখও গেছে, কারও ৫০, কারও ৪০। একেকজনের একেক রকম গেছে। কেউ সৌদি আরব থেকে গেছেন, কেউ ঢাকা থেকে গেছেন। আমি দালালের মাধ্যমে ভিসা লাগাইছিলাম ব্রাজিলের। গত বছরের (২০২৪) সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে ব্রাজিল গেলাম। এরপর গাড়িতে করে বলিভিয়া। সেখান থেকে বর্ডার পেরিয়ে পেরু। পেরুর দালালরা গাড়িতে করে আবার কোস্টারিকায় নামায় দিল।”
এ যাত্রাপথে আজগরদের কখনো ট্রাক, কখনো বাস বা পিকআপে যাত্রা করতে হয়েছে। কখনো বরফ শীতল ঠান্ডার মধ্যে আবার কখনো দমবন্ধ করা বদ্ধ ট্রাকে করে যেতে হয়েছে তাদের। অনেকে অসুস্থ হয়েছেন, তবে থেমে গেলেই বিপদ এটা জেনে কেউ থামতে চাননি। কোস্টারিকা থেকে তারা গেলেন পানামা। পানামার এই যাত্রা ছিল পুরোটাই পায়ে হাঁটা। কখনো বিরাট উঁচু পাহাড়, কখনো জঙ্গল পাড়ি দিতে হয়েছে। শুকনো খাবার নিয়ে পাহাড়-জঙ্গলের ক্যাম্প করে থাকতে হয়েছে তাদের।
আজগর বলেন, “পানামার জঙ্গলের ভেতর চার দিন ছিলাম। সঙ্গে খাবার বলতে ছিল শুধু শুকনা খেজুর আরেকটা বিস্কুটের মতো কী যেন বলে ওরা। এই নিয়ে ঘন জঙ্গলের মধ্যে। জঙ্গলের মধ্যে শুয়ে থাকতে হয়েছে। তিনটা পাহাড় ডিঙাইতে হইছে। একেকটা পাহাড় পার হইতে গিয়া জান যায় যায় অবস্থা। যাদের হার্ট দুর্বল, শরীর দুর্বল তারা ওখানে টিকতে পারবে না, মারা যাবে।” “ওখানে আমরা যাত্রাপথে কয়েকটা লাশ দেখছি, যারা আমাদের মতো এভাবে যাচ্ছিল। আর একবার দুর্বল হয়ে গেলে দালালেরা তো আর দয়া দেখাবে না। আসলে ওখানে দয়া দেখানোর সুযোগও নাই। ডাক্তার নাই, অ্যাম্বুলেন্স নাই। আপনি পড়ে গেলেন তো শেষ।”
পানামার পাহাড় পার হয়েই আসে ভয়ঙ্কর পাহাড়, জঙ্গল আর জলাভূমিবেস্টিত ‘ডারিয়েন গ্যাপ’। বিশ্বের বিপদসঙ্কুল অনিয়মিত অভিবাসন পথ হিসেবে কুখ্যাত এটি। কলাম্বিয়া ও পানামার মধ্যে অবস্থিত এই দুর্গম জলাভূমি এবং পার্বত্য বনাঞ্চল পাড়ি দিয়ে প্রতি বছরই যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকে কয়েক হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী। ডারিয়েন গ্যাপ শুধু প্রাকৃতিকভাবেই দুর্গম ও বিপদসঙ্কুল নয় এখানে ফাঁদ পেতে থাকে বিভিন্ন ধরনের সশস্ত্র গ্রুপ, মানব পাচারকারী চক্রের মাফিয়ারা। রয়টার্সের গত ২ জানুয়ারির এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ২০২৪ সালে তিন লাখের মতো মানুষ ডারিয়েন গ্যাপ অতিক্রম করেছে, যাদের মধ্যে ৬৯ শতাংশই ভেনেজুয়েলার। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও শিশুও রয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে যাওয়া আজগর বলেন, পানামার জঙ্গলগুলো ভয়ঙ্কর। ডোরিয়েন গ্যাপে ঢোকার পর হিংস্র পশু-পাখির ডাক শোনা যায়। তিনি বলেন, “ডারিয়ান ক্যাম্পে আমরা কয়েকদিন ছিলাম। ভয়ঙ্কর জায়গা। প্রচুর পোকামাকড়, মশা। এর মধ্যেই ক্যাম্প বানায় রাখছে দালালেরা।” ডারিয়েন গ্যাপ পার হয়ে ঢাকা থেকে রওনা দেওয়ার প্রায় তিন মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে পা দেন নোয়াখালীর আজগর হোসেন। তিনি বলেন, “আমেরিকায় গিয়াই আমরা ওদের সীমান্তে গিয়া আত্মসমর্পন করি। সবাই এভাবেই গেছে এতদিন ধরে। বর্ডার পুলিশ পরে সবাইরে ধরে নিয়ে ক্যাম্পে (অবৈধ অভিবাসী ক্যাম্প) নিয়া যায়। তারপর সেখান থেকে নানা প্রক্রিয়া শেষে কোনো একটা শহরে পাঠায় দেয় ওরা, কাজেরও অনুমতি দেয়।”
তবে এবার ট্রাম্প প্রশাসনের ভীষণ কঠোরতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা বর্ডার পুলিশরে গিয়া বললাম আমরা তোমাদের দেশে থাকতে চাই। আমরা চোরাইভাবে তোমাদের দেশে ঢুকতে চাই না, তোমরা হেল্প করো। আমাদের দেশে রোহিঙ্গারা আইসা থাকতেছে না, ব্যাপারটা ওরকম।
“আমরা যখন আমেরিকায় ঢুকছিলাম তখন ক্ষমতায় জো বাইডেন। তবে কয়েকদিন পরেই ক্ষমতায় এলেন ট্রাম্প। হ্যাতে ক্ষমতা নিয়াই আমাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিল। ওরা আমাদের ডাইরেক বলি দিল, ‘নতুন প্রেসিডেন্ট তোমাদের রাখতে দিবে না, সবাইকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে’। এরপর আর অভিবাসন ক্যাম্পে না পাঠিয়ে তাদের পাঠানো হয় কারাগারে। সেখানে শুরু হয় আরেক নিদারুণ জীবন। কারাগারের খাবার খেতে পারতেন না আজগর। সেখানে ন্যুডলস স্যুপের বোল কিনতে পাওয়া যায়। সেটিই কিনে খেতেন। এজন্য বাংলাদেশ থেকে টাকা পাঠাতেন স্বজনেরা।
আজগর বলেন, “জেলের খাবার খাইতে পারি না ভাই। বাঁচার মতো কুনো অবস্থা নাই, মরিই যাইতাম। ওইখানে যে খাবার দেয় ওগুলো আমরা কেউ খাইতে পারি না, কুত্তারেও মানুষ এর চেয়ে ভালো খাবার দেয় । পরে আমরা ন্যুডলস স্যুপ কিনে কিনে খাইতাম। বোলের মধ্যে নুডলসের ডবল পানি দিয়ে ওভেনে ঢুকায় দিলে সেটা সিদ্ধ হয়ে স্যুপ নুডলস হতো। ওইটা খাইতাম খালি জীবনটা বাঁচানোর জন্য। ওইখানে একটা ওভেন ছাড়া রান্নার আর কিছু ছিল না। এই খাইয়াই এতগুলা মাস কাটাইছি। আমার চেহারার যে হাল হইছে, বাড়ির লোকজন দেইখা কানছে খালি।”
কীভাবে ফিরলেন জানতে চাইতেই কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন আজগর। বলেন,’আমরা তো জানি আমেরিকা মানবাধিকারের দ্যাশ। কিন্তু আসলে ওখানে কোনো মানবাধিকার নাই। ওদের ওইখানে কুত্তার দাম আছে আমাদের মতো মানুষের কোনো দাম নাই। আপনারা সিনেমায় দেখছেন না হাতে শিকল লাগায় লাইন ধইরা তোলে ওইরকম আমাদেরও করছে। আমার প্যাটে একটা শিকল লাগাইছে, ওইটার সঙ্গে হাতে শিকল বাইন্ধা ফ্লাইটে তুলছে। এইভাবে পাঁচ দিন লাগছে ঢাকায় আসতে। প্লেনের মধ্যে কিছু খাবার দিয়া রাখছে আমরা যে যেমনে পারি নিয়া খাইছি।’
উড়োজাহাজটির ভেতরে বাংলাদেশ ছাড়াও আরও অনেক দেশের লোক ছিলেন। যাদেরও একইভাবে শেকলে বেঁধে পাঠানোর কথা বললেন আজগর।
তিনি বলেন,’আমারে ফ্লাইটে উঠাইছে অ্যারিজোনা থাইকা। এরপর আরও পাঁচটি রাজ্যে গিয়া লোক তুলছে। পুরাটা সময় আমাদের হাতকড়া লাগায়া বাইন্ধাই রাখছে। এরমধ্যে দুই রাত রাখছে একটা সেফহোমের মতো ঘরে। তখন হাতের বাঁধন খুলি দিছে। আবার বিকালে যখন প্লেনে উডাইছে তখন আবার হাত বানছে। পরে বিভিন্ন ক্যাম্প থাইকা লোক আনছে ওয়াশিংটন ডিসি। সেখান থাইকাই প্লেনটা রওনা হইছে।’
তার কত টাকা খরচ হল জানতে চাইলে আজগর বলেন, শুধু দালালকেই দিয়েছেন ৩৭ লাখ টাকা। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে কারাগারে থাকাকালীন প্রতিমাসে ২০০ ডলার (প্রায় ২৫ হাজার টাকা) করে লেগেছে। কারণ তিনি সেই কারাগারের খাবার খেতে পারতেন না। শুধু বাঁচার জন্য বাংলাদেশ থেকে এই টাকাটা নিয়ে গেছেন। সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে ৪৫ লাখ টাকার বেশি। তার পাসপোর্টটাও নোয়াখালীর আর এক দালাল আটকে রেখেছে। যেজন্য আরও টাকা দাবি করা হচ্ছে ।
আজগরের কথায়, প্রায় ১০ বছরের মতো দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসজীবন কাটিয়েছেন তিনি। সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় প্রায়ই বাংলাদেশি বা বিদেশিদের দোকানপাটে হামলা হত, গুলি করত সন্ত্রাসীরা। যে কারণে ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন তিনি। দেশে ফিরে নিজের জমানো টাকা এবং কিছু টাকা ধার-দেনা করে যুক্তরাষ্ট্রের পথে পাড়ি জমান তিনি। আজগর বলেন,’আফ্রিকায় মারামারিতে বাঙালি অনেকেই মারা গেছেন। তো ওইখান থাইকা অনেকে বলল ভালো হবে আমেরিায় চইলা যাওয়া। নিজের কাছে কিছু টাকা ছিল, কিছু হাওলাত করলাম। ভাবছিলাম ওইদিকে ভালো একটা লাইফ সেট করতে পারব।’
নোয়াখালীতে আজগরের স্ত্রী ও দুই সন্তান এবং বৃদ্ধা মা থাকেন। বলেন,’আমি যেই কয়দিন আছিলাম না আমার পরিবার প্রচুর কষ্ট করছে। হাওলাত কইরা কইরা বাজার সদাই করছে, আমারে টাকা পাঠাইছে। এখন কী করবো তা জানি না।’
‘আর আমার লগে আরও কয়েকটা ছেলে আছে এরা পাওনাদারের ভয়ে বাড়িতে আসতেছে না। আমারে বলছে, ‘বাড়িত গেলে টাকা দেওয়া লাগব। এত টাকা এহন কই পামু। গলায় দড়ি দেওয়া ছাড়াত উপায় নাই।’ একটা ছেলে আছে মাসে তিন লাখ টাকা সুদের উপ্রে টাকা তুলছে। এখন ওই সুদের টাকা ক্যামনে দিব হ্যাতে জানে না। আমার বাড়িতেই দেনাওয়ালারা অলরেডি আইসা ঘুইরা গেছে।’
মামলা বা কোনরকম আইনগত ব্যবস্থা নিতে চান কী না জানতে চাইলে আজগর বলেন, “আমি নিজেই ভাইবা পাইতেছি না মামলা কইরা আমি কী করমু। দালালদের সাথে আমার চুক্তি হইছে তারা আমারে আমেরিকায় ঢুকায় দিব। তো তারা ঢুকাইছে। তাদের সঙ্গে তো ফেরত আসলে কী হইবো এরকম কোনো চুক্তি হয়নি। আর আমি নিজের ইচ্ছায় ভালো লাইফ করার জন্য উৎসাহিত হয়ে গেছি। এখন ওরা বাইর কইরা দিছে ওইটা আমার নসীব।
“এখন যে পরিস্থিতি, আইজ হউক কাইল হউক টাকা তো দিতে হইবে। কিন্তু দেশের মানুষের কথা কী কমু বলেন এক ‘মেক্সিকো দালালে’ আমার আর আমার বন্ধুর পাসপোর্টটা আটকাই রাখছে। ওর বাড়িও নোয়াখালী । আমার স্ত্রী ফোন দিছিল কয় ৩০ হাজার করি টাকা পাঠাইতে। এখন ওরে টাকা কোইত্থে দিমু। এরা লাশের থাইকাও টাকা খায়। কী কমু এরা মানুষ না অন্যকিছু। হ্যাতে আমার পাসপোর্টটা নিয়া কী করবো সেইটাই বুঝি না। আমি বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ কইরা পাসপোর্টটার ওজন বাড়াইছিলাম।”
প্রসঙ্গত,ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর অভিযান জোরদার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা বিমানবন্দরে বাংলাদেশি পুলিশের বিশেষ শাখা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি দলসহ সরকারের কয়েকটি দপ্তরের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ফেরত পাঠানো অভিবাসীদের সহায়তার জন্য সেখানে ছিলেন ব্রাক অভিবাসন কর্মসূচির কর্মকর্তারা।
সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তারা বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পরপর উড়োজাহাজটি নামলেও তিন ঘণ্টা সেটি রানওয়েতে ছিল। এ সময়েও তাদের হাতকড়া ও শেকল খোলা হয়নি। উড়োজাহাজটিতে থাকা বাংলাদেশি যাত্রীদের পরিচয় যাচাই সম্পন্ন করেন পুলিশের কর্মকর্তারা। এরপর তাদের নামিয়ে আনা হয়। তবে এভাবে হাতকড়া ও শিকল পড়ানোর বিষয়টি সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের পুলিশ বা পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। কর্মকর্তারা এ নিয়ে কোনো কথাই বলতে চাইছেন না ।।

