এইদিন ওয়েবডেস্ক,ওয়াশিংটন,১২ এপ্রিল : কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি পড়ুয়া মাহমুদ খলিলকেে তাড়ানোর নির্দেশ দিল মার্কিন আদালত৷ ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ার পর থেকেই তাকে মাহমুদ খলিলকে তাড়ানোর দাবি উঠছিল । ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনও তাকে তাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছিল । কিন্তু ইতিমধ্যে আদালতে মামলা দায়ের হলে খলিলকে তাড়ানোর প্রক্রিয়ায় বাধাপ্রাপ্ত হয় । অবশেষে ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাহমুদ খলিলকে তাড়িয়ে দিতে পারবে বলে রায় দিয়েছেন একটি মার্কিন আদালতের বিচারক।
যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতিপ্রাপ্ত কখনোই কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হয়নি বলে দাবি করেছে খলিল । গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার লেখা এক চিঠিতে সে বলেছিল, ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিয়ে কথা বলার কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিতে ট্রাম্প প্রশাসন স্নায়ুযুদ্ধকালীন একটি অভিবাসী আইনকে ব্যবহার করতে চাইছে বলে জানিয়েছে ওই ফিলিস্তিনি পড়ুয়া । মার্কিন সরকার বলেছে, এই ধরনের জিহাদি মানসিকতার পড়ুয়ার উপস্থিতি আমেরিকান পররাষ্ট্র নীতির স্বার্থের প্রতিকূল ।কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউ ইয়র্কের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া খলিল সিরিয়ায় এক ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে জন্মেছিলেন, তার আলজেরিয়ার নাগরিকত্ব আছে তার৷ গত বছর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পান। তার স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
শুক্রবার লুইজিয়ানার অভিবাসন আদালতের বিচারকের রায় পক্ষে গেলেও ট্রাম্প প্রশাসন এখনি খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাড়িয়ে দিতে পারছে না। কারন বিচারক খলিলের আইনজীবীদেরকে আপিলের জন্য ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন।গত ৮ মার্চ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে গ্রেপ্তারের পর লুইজিয়ানারই একটি সংশোধনাগারে রাখা হয়েছে খলিলকে। ৩০ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি গত বছর গাজা যুদ্ধের সময় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে হওয়া উৎপাতের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিল । আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) এইনরায়কে ‘আগেই লিখিত’ বলে অভিহিত করেছে।তারা বলছে, মার্কিন সরকার খলিলের বিরুদ্ধে দেওয়া কথিত প্রমাণ জমা দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই রায় এসেছে। এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন যে ‘প্রমাণ’ দিয়েছে, তাতে কেবল পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওর একটি চিঠিই আছে।ওই চিঠিতেই খলিল যে কোনো অপরাধ করেননি, এবং কেবল তার (ফিলিস্তিনের পক্ষে) বক্তৃতার জন্যই তাকে নিশানা করা হয়েছে তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বলছে এসিএলইউ।
রুবিওসহ ট্রাম্প প্রশাসনের অনেকেই বলছেন, খলিলকে বিতাড়নে তাদের চেষ্টার অন্যতম লক্ষ্যই হচ্ছে ‘যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ইহুদি শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও সহিংসতার হাত থেকে রক্ষা করা’। মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম শুক্রবার অভিবাসন আদালতের দেওয়া রায়ের প্রশংসা করেছেন।এদিকে খলিলের আইনজীবীরা বলছেন, খলিলের ‘ইহুদিবিদ্বেষ’ সংক্রান্ত কোনো ধরনের তথ্যপ্রমাণ ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থাপন করা হয়নি। এ মামলায় আরও শুনানি হবে বলেও আশা করছেন তারা। খলিল তার গ্রেপ্তারকে ‘অসাংবিধানিক’ অ্যাখ্যা দিয়ে নিউ জার্সির ফেডারেল আদালতে মামলাও করেছেন। ওই মামলার রায় পক্ষে এলেও তাকে বিতাড়নে ট্রাম্প প্রশাসনের চেষ্টা বিফলে যাবে, বলছেন তার আইনজীবীরা।।