এইদিন ওয়েবডেস্ক,লখনউ,১৬ জানুয়ারী : মহাকুম্ভ ঘিরে বিশ্বজুড়ে হিন্দু শ্রদ্ধালুদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে । কোটি কোটি শ্রদ্ধালু উত্তরপ্রদেশে হিন্দুদের পবিত্র তীর্থস্থান প্রয়াগরাজে জড়ো হয়েছেন ।এসেছেন বহু বিদেশী শ্রদ্ধালুও । প্রবল ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী নদীর ত্রিবেনী সঙ্গমে পূণ্যস্থান করছেন শ্রদ্ধালুরা । শুধুমাত্র ১৪ জানুয়ারী মকর সংক্রান্তির দিন প্রায় দেড় কোটি মানুষ পূণ্যস্নান করছেন বলে অসমর্থিত সূত্রের খবর । এরই মাঝে উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের বাসিন্দা এবং সৌদি আরবে কর্মরত রাকেশ যাদব নামে একজন যুবক গুজব রটিয়ে দেয় যে মহাকুম্ভে প্রবল ঠান্ডায় নাকি ১১ শ্রদ্ধালুর হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে । যুবকের ফেসবুক পেজ ‘রাকেশ যাদব আজমগড়িয়া’র ওই পোস্ট নজরে পড়তেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ । পুলিশ ওই যুবকের পাসপোর্ট বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে । ফলে তার চাকরি এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে এবং সে ভারতে এলে তাকে গ্রেফতার পর্যন্ত করতে পারে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ।
আসলে, গত ১৪ জানুয়ারী মকর সংক্রান্তির দিন ওই ব্যক্তি ফেসবুক পোস্টে লিখেছিল,’বিগ ব্রেকিং নিউজ : কুম্ভ মেলায় ঠান্ডার কারনে ১১ জনের হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে । আপতকালিন আইসিইউ ক্যাম্পে রোগীদের ভিড়ে ঠাসা ৷’ যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে এটা নিছক গুজব বলে উড়িয়ে দেয় ইউপি পুলিশ । আজমগড় জেলার ফুলপুর থানার পুলিশ এই ঘটনায় একটা এফআইআর রজু করে গুজব ছড়ানো যুবকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় । আজমগড় জেলা পুলিশ সুপার চিরাগ জৈন একটা ভিডিও বার্তায় বলেছেন,’১৪ জানুয়ারী ফুলপুর থানা এলাকায় একটা ফেসবুক পোস্ট পুলিশের নজরে পড়ে । তাতে ব্যবহারকারী রাকেশ যাদব আজমগড়িয়া দ্বারা মহাকুম্ভে শ্রদ্ধালুদের ঠান্ডায় হৃদরোগে মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়েছিল । পুলিশ এই দাবি তাৎক্ষণিকভাবে অস্বীকার করে এবং একটা মামলা দায়ের করা হয় । তদন্তে জানা যায় যে গুজব ছড়ানো ব্যক্তি ফুলপুরের বাসিন্দা এবং বর্তমানে সৌদি আরবে রয়েছে । আমরা তার পাসপোর্ট নিয়ে তদন্ত করছি এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিচ্ছি ।’
এদিকে পুলিশের এই কড়া পদক্ষেপে টনক নড়ে গেছে রাকেশ যাদব নামে ওই ব্যক্তির । সে নিজের কৃতকর্মের জন্য পরে একটা পোস্ট করে গুজব ছড়ানোর জন্য ক্ষমা চেয়ে নেয় । তাতে সে লিখেছে,’শ্রীমানজি, অজ্ঞাতসারে আমি যে ভুল করে ফেলেছি তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী ৷ ভবিষ্যতে আমি এই ধরনের গুজব থেকে নিজেদে দূরে রাখব । ক্ষমা চাইছি ।’
এদিকে এই ঘটনায় বিজেপি নেতা গুজব ছড়ানো ব্যক্তির ফেসবুক পোস্টের স্ক্রীন শর্ট এক্স-এ শেয়ার করে লিখেছেন,’নীচে যে ভদ্রলোককে দেখা যাচ্ছে তিনি হলেন রাকেশ যাদব… তিনি আজমগড়ের ফুলপুর এলাকার বাসিন্দা… স্যার সৌদি আরবে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন এবং বর্তমানে সেখানেই আছেন।
সৌদিতে বসে সে স্বপ্ন দেখেছিল যে ভারতের কুম্ভমেলায় মানুষ ঠান্ডায় মারা যাচ্ছে… সে ফেসবুকে পোস্ট করেছে… আসলে, সাইফাইয়ের দাসত্বের রহমানি পোকামাকড়গুলি তাকে পিঠে কামড়াচ্ছিল… তাই পোকামাকড়ের কামড় তাকে বলেছিল যে বর্তমান সরকারকে অপমান করার এটাই সুযোগ, তাকে মিথ্যা বলতে হতে হবে… তাতে একটা ধর্মীয় ঘটনা হোক বা অন্য কিছু… কিন্তু তাদের মানহানি করো… তবে ভাইয়া জি, মালিক সাব, আকা হুজুর ক্ষমতা পাবে…।
আমাকে একটা ফেসবুক পোস্ট পাঠিয়েছে…আচ্ছা, এই ধরনের লোকদের বিরুদ্ধে প্রতিটি পোস্ট টুইটারে অনুসন্ধান করা হয়েছিল এবং এসএসের মাধ্যমে ইউপি পুলিশকে তথ্য দেওয়া হয়েছিল… এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল… এবং ফলাফল আমাদের সামনে।
এখন পর্যন্ত, এক ডজন লোকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে এই ভদ্রলোকও রয়েছেন…
তাদের পাসপোর্ট বাতিল করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে… তাদের সৌদি থেকে বহিষ্কার করা হবে… অথবা যদি তারা সেখানে লুকিয়ে থাকে, তাহলে সবাই জানে সৌদির অবস্থা, তারা কী করে… তুমি যদি এখানে আসো, পুলিশ তোমাকে গ্রেপ্তার করবে… তোমার চাকরি এবং ব্যবসা চলে যাবে… আইনি ব্যবস্থার খরচ আলাদা… দাসত্বের পোকামাকড়ের কারণে তারা তাদের স্ত্রী এবং সন্তানদের জীবনও ধ্বংস করেছে… সে মুলায়মের ছেলের ভবিষ্যৎ গড়তে গিয়েছিল…. এখন সে তার নিজের সন্তানদেরও ঝুঁকিতে ফেলেছে…এখন সাইফাই থেকে কেউ তাদের বাচ্চাদের দেখাশোনা করতে আসবে না… এটা একটা শিক্ষা…. যারা এটা শেখে তাদের জন্য ! কারণ পরে যদি তুমি ক্ষমাও চাও, তবুও এই লোকেরা যেমন চাইছে তেমন কিছুই হবে না !’