এইদিন ওয়েবডেস্ক,হামবুর্গ,০৬ জুন : জার্মানির হামবুর্গ শহরের কেন্দ্রস্থলে সেন্ট পিটার এবং সেন্ট জেমসের প্রধান গির্জাগুলিতে অজানা ব্যক্তিরা শতাব্দী প্রাচীন পেইন্টিংগুলি কেটে ফেলেছে । প্রাচীন ছবিতে শিশু যীশুকে ছুরি দিয়ে জবাই করা হয়েছিল । গত ২৬ শে মে থেকে ৩১ শে মে এর মধ্যে হামবুর্গ শহরের সেন্ট জেমসের হামবুর্গের একের পর এক প্রধান গির্জাগুলিতে এই ঘটনা ঘটে । শতাব্দী প্রাচীন পেইন্টিংগুলি কেটে আঁচড়ে ফেলা হয়েছিল ।
শুধুমাত্র সেন্ট পিটার চার্চেই সাতটি চিত্রকর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাস্টার ফ্রাঙ্কের “খ্রিস্ট অ্যাজ এ ম্যান অফ সরোজ” নামে বিখ্যাত ছবি,যেটি ১৪৩৫ সালের দিকে তৈরি করা হয়েছিল, যার একটি অনুলিপি চার্চে ঝুলছে । অমূল্য আসলটি হ্যামবার্গার কুন্সথালে ১৯২৪ সাল থেকে রয়েছে । গটফ্রিড লিবাল্ট (1649) এর তৈরি “দ্য নেটিভিটি” চিত্রটির শিশু যিশুর ঘাড়ে ছুরি দিয়ে আঁচড়ে দেওয়া হয়েছে ।
সেক্সটন মার্টিন মেয়ার অনুমান করেছেন যে পুনরুদ্ধারের খরচ হবে ৫০,০০০ থেকে ৮০,০০০ ইউরো । মেয়ার ঘটনায় গভীরভাবে দু:খ প্রকাশ করে বলেছেন,’আমি গভীরভাবে রাগান্বিত এবং ভীত । এই ধরনের কাজে আমরা বিপন্ন,এবার আমাদের গির্জা বন্ধ করতে হবে বলে মনে হচ্ছে ।’
প্রসঙ্গত,বছরের পর বছর ধরে জার্মানিতে চার্চ অপবিত্রতা করার ঘটনা ঘটেছে । খ্রিস্টান সাধুদের গায়ে থুথু দেওয়া হয়, ক্রস অপবিত্র করা হয়,এমনকি পবিত্র স্থানে প্রস্রাব করার ঘটনাও ঘটে । যেমন থুরিঙ্গিয়ার নর্ডহাউসেনে ২৫ বছর বয়সী একজন আফগান শরণার্থী একটি ক্রুশ ভেঙে দেয়, যেটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নর্ডহাউসেনের বোমা হামলার পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল । হাজার হাজার এই ধরনের ঘটনার মধ্যে একটি মাত্র মামলা হয় । বাকি ইসলামের প্রতি অনুরাগী চার্চগুলোর কর্তৃপক্ষ সাধারণত নীরব থাকে ।
উল্লেখ্য,হিন্দু, খ্রিস্টান ও অমুসলিম মূল্যবোধের প্রতি ইসলামিক বিদ্বেষ শুধু জার্মানিতেই সীমাবদ্ধ নয় বরং ইউরোপীয় দেশগুলিতেও তা প্রবলভাবে দেখা যায় । উদাহরণস্বরূপ, ন্যান্টেসের ক্যাথেড্রালে অগ্নিসংযোগের ঘটনা,বাংলাদেশ ও পাকিস্থানে হিন্দু মন্দিরে হামলা ও দেবদেবীর মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা অমুসলিম প্রতীকগুলির উপর মুসলিমদের মধ্যে কতটা বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়েছে তা প্রকাশ করে । জার্মানি সহ ইউরোপের দেশগুলিতে গির্জা, চ্যাপেল, কবরস্থান, এমনকি পর্বতশৃঙ্গের ক্রসও মুসলমানদের দ্বারা আক্রান্ত হয় । বাংলাদেশ ও পাকিস্থানে হিন্দু মন্দির ও দেবদেবীর প্রতিমা ভাঙচুর নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷।