এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০৪ আগস্ট : ওয়াকফ অ্যাক্টের (Waqf Act) ৪০ টি সংশোধনের প্রস্তাব পাশ হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় । শুক্রবার রাতে এই প্রস্তাব পাশ হয় বলে জানা গেছে । তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ওয়াকফ বোর্ডের প্রতিটি পুরানো ও নতুন সম্পত্তির বাধ্যতামূলক যাচাই করা হবে,জেলা শাসকদেরও ওয়াকফ সম্পত্তি পর্যবেক্ষণ করার অধিকার থাকবে, ওয়াকফ বোর্ডের যে কোনো সম্পত্তিকে ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করার অধিকার খর্ব করা হবে প্রভৃতি । যদিও নেটিজেনদের দাবি যে পুরো ওয়াকফ অ্যাক্টকেই বাতিল করে দেওয়া হোক ।
স্বাধীনতার পর ১৯৫৪ সালে, জহরলাল নেহেরু ওয়াকফ আইন পাস করেন । এরপর ১৯৯৫ সালে, কংগ্রেসের নরসিমা রাও সরকার ওয়াকফ বোর্ডকে সীমাহীন ক্ষমতা দিয়েছিল, এই অনুসারে ওয়াকফ বোর্ড যেকোনো সম্পত্তি বোর্ডের সম্পত্তি বলে দখল করার অধিকার পেয়ে যায় । তামিলনাড়ুর তিরুচেন্দুরাই (Thiruchendurai) গ্রামে ভগবান শিবের মান্দিয়াভল্লী সায়েথা চন্দ্রশেখর স্বামী মন্দিরটি নবম শতাব্দীতে চোল রাজবংশের রাজা পরন্তক চোলের পুত্রবধূ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল । ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, ১৫০০ বছরের এই প্রাচীন মন্দির সহ আস্ত হিন্দু গ্রামকেই নিজের সম্পত্তি বলে দাবি করে ওয়াকফ বোর্ড । এছাড়া সুরাটে সরকারি ভবন, বেঙ্গালুরুতে তথাকথিত ইদগাহ মাঠ, হরিয়ানার জাথলানা গ্রাম, হায়দ্রাবাদের একটি পাঁচতারা হোটেল পর্যন্ত নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি পেশ করে ওয়াকফ বোর্ড । শ্রী কৃষ্ণ জন্মভূমি, শ্রী কাশী বিশ্বনাথের আসল স্বয়ম্ভু শিবলিঙ্গ যা জ্ঞানবাপি কমপ্লেক্সে আছে,এরকম হাজার হাজার মন্দির ও ধর্মীয় স্থান রয়েছে, যেগুলো ভেঙ্গে তাদের উপর মসজিদ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে । মথুরার শাহী ইদগাহ, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ, অযোধ্যার একসময়কার বাবরি মসজিদ, ধরর ভোজশালা ইত্যাদি এই সব জায়গা নামাজ পড়ার জন্য ছিল না, বরং হিন্দুদের প্রধান তীর্থস্থানগুলিকে বিজয়ের প্রতীকে পরিণত করেছিল মুসলিম হানাদাররা । আজ এসবই ওয়াকফ বোর্ডের দখলে ।
ভারতে মোট ভূমি ধারণের ক্ষেত্রে ওয়াকফ বোর্ড তৃতীয় স্থানে রয়েছে। প্রথম স্থানে রয়েছে সেনাবাহিনী এবং দ্বিতীয় স্থানে রেল দপ্তর । ওয়াকফ বোর্ডের মালিকানাধীন জমির পরিমাণ হল প্রায় ৯ লাখ একর । আয়তন হিসাবে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের অর্ধেক এলাকার সমান ওয়াকফ বোর্ডের জমি রয়েছে এদেশে । ওই পরিমান জমি থেকে প্রতি বছর সরকারের ২০,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আসা উচিত । কিন্তু রাজস্ব বাবদ ভারত সরকার মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা পায় বলে জানা গেছে । ওয়াকফ বোর্ডের মোট জমির পরিমানের দিক থেকে ভারত এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে । দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তুরস্ক । অনেক পিছনে রয়েছে পাকিস্তান । আগামী সপ্তাহে সংসদে ওয়াকফ অ্যাক্টের সংশোধনী বিল পেশ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে । সেদিন বিরোধী দলগুলির বিরোধিতায় সংসদ উত্তপ্ত হয়ে ওঠার প্রবল সম্ভাবনা ।।