প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৬ জুন : ভাগ্নিকে প্রাণে মারার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন মামা ও দিদিমা । ধৃতদের নাম জিয়ারুল রহমান ওরফে খোকন এবং কুরাশিয়া বেগম। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার লতিফপুর গ্রামে তাদের বাড়ি। মৃত তরুণী পায়েল খাতুনের মা রিজিয়া বেগমের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ রবিবার দুই ধৃতকে পেশ করে বর্ধমান আদালতে । তদন্তের প্রয়োজনে তদন্তকারী অফিসার বিশ্বজিৎ সিংহ মৃতার মামা জিয়ারুলকে ৭ দিন পুলিশি হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান । ভারপ্রাপ্ত সিজেএম জিয়ারুলকে ৫ দিন পুলিশি হেপাজত ও দিদিমা কুরাশিয়া বেগমকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ।
পুলিশ ও স্থানীর সূত্রে জানা গিয়েছে, পায়েল খাতুনের মা রিজিয়া বেগমের সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিচ্ছেদ হয়ে যায় প্রায় ২০ বছর আগে। তার পর থেকে মেয়ে রিজিয়াকে নিয়ে খণ্ডঘোষের
বাবার বাড়িতেই থাকতেন রিজিয়া বেগম ।
পায়েল মানসিক ভাবে সুস্থ ছিল না । তাই তাঁর মামা জিয়ারুল ও দিদিমা কুরাশিয়া জিয়ারুল একদম পছন্দ করতেন না পায়েলকে। তাকে প্রায়শই তারা মারধর করতো। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পায়েল মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যেত। ঘটনার দিন সাতেক আগেও পায়েল কাউকে কিছু না জানিয়ে মামার বাড়ি থেকে অন্য কোথাও চলে যায়।
শনিবার সকালে ভাগ্নি পায়েলকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন জিয়ারুল।সেই সময়ে পায়েলের মা বাড়িতে ছিলেন না । অভিযোগ ওই সময়ে জিয়ারুল ও তার মা কুরাশিয়া লাঠি দিয়ে পায়েলকে মারধর করে ।মারধরে পায়েলের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিস দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। ঘটনার বিষয়ে রিজিয়া বেগম রাতে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ মৃতার মামা ও দিদিমাকে
গ্রেপ্তার করে ।
যদিও এদিন প্রিজন ভ্যানেওঠার সময়ে দিদিমা কুরাশিয়া দাবি করেন , তাঁরা পায়েলকে প্রাণে মারেন নি । পরিবারের সন্মানহানী হচ্ছিল বলে নাতনিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার পর তিনি ও তাঁর ছেলে তাকে শাসন করছিলেন । সেই সময় নাতনি নিজেই দেওয়ালে মাথা ঠুকতে শুরু করে । এরপরেই বুকে ব্যথা হচ্ছে বলে জানিয়ে পায়েল জল চায়। জল খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই নাতনি পায়েল মারা যায়।।