এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৩ মে : স্ত্রী মারন রোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন । ভুগছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে । সপ্তাহ দুয়েক আগে মৃত্যু হয় তাঁর । স্ত্রীর মৃত্যুর পর স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছিলেন স্বামী । কিন্তু কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না স্ত্রীর শোক । শেষ পর্যন্ত আত্মহননের পথ বেছে নিলেন ওই বৃদ্ধ । মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার গোয়াই গ্রামে । বুধবার সন্ধ্যায় গোয়াই গ্রামের কাছে ফাঁকা মাঠের একটা গাছ থেকে গেনা মাজি(৬০) নামে ওই বৃদ্ধের গলায় গামছার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলতে দেখে গ্রামবাসীরা । খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে । আজ বৃহস্পতিবার দেহটি ময়নাতদন্তের পর গ্রামে নিয়ে এসে সৎকার করা হয় ।
জানা গেছে,গোয়াই গ্রামের বাসিন্দা গেনা মাজির তিন ছেলে। সিদ্ধেশ্বর-চন্দ্রেশ্বর ও সন্তোষ । সিদ্ধেশ্বর চাষাবাদ করেন এবং বাকি দুই ছেলে ভিনরাজ্যে কাজ করেন। রেলের ঠিকাদার সংস্থায় নৈশপ্রহরীর কাজ করতেন গেনা মাজি । নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার । গেনা মাজির স্ত্রী লক্ষীদেবী বেশ কিছুদিন ধরে শারিরীক অসুস্থতায় ভুগছিলেন । সম্প্রতি তার ক্যান্সার ধরা পড়ে । গত ১০ মে মৃত্যু হয় লক্ষীদেবীর । মায়ের মৃত্যুর পর দুই ছেলে বাড়ি ফিরে আসেন । শুক্রবার পরিবারের ঘাটে ওঠার কথা । কিন্তু তার আগেই আত্মঘাতী হন ওই বৃদ্ধ ।
জানা গেছে,গোয়াই গ্রামের পার্শ্ববর্তী নবগ্রামে রেলের সেতু নির্মাণের কাজ চলছে । বুধবার সকালে যথারীতি কাজে চলে যান গেনা মাজি । কিন্তু তার বাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন ছেলেরা । তখন গ্রামের কাছে ফাঁকা মাঠের একটা গাছ থেকে তাকে গামছার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলতে দেখতে পান তারা । সিদ্ধেশ্বর বলেন,’মায়ের ঠিকমত চিকিৎসা করাতে না পারায় হতাশায় ভুগছিলেন বাবা । খাওয়া দাওয়া এক প্রকার বন্ধ করে দিয়েছিলন । তবুও মায়ের শোক ভুলতে কাজে যাচ্ছিলেন বাবা । ভেবেছিলাম বাবা হয়ত নিজের মনকে বুঝিয়ে আবার ছন্দে ফিরে আসবেন । কিন্তু উনি যে আত্মহত্যা করবেন তা আমরা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি ।’
এদিকে মায়ের মৃত্যুর পর রীতি অনুযায়ী কাছা পরে শুক্রবার শ্রাদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেলেন বৃদ্ধ দম্পতির তিন ছেলে । কিন্তু আজ সেই কাছা পরেই শ্মশানে গিয়ে বাবার দাহ সৎকার করে আসেন তারা । মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে বাবা-মাকে হারিয়ে শোকে ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ দম্পতির তিন ছেলে ।।