এইদিন ওয়েবডেস্ক,লন্ডন,০১ অক্টোবর : কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের নাশকতা চালানোর সুবিধার জন্য কামিকাজে ড্রোন তৈরি করার অভিযোগে গ্রেফতার হল ব্রিটেনের পিএইচডি ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র । ২৬ বছর বয়সী মোহাম্মদ আল- বারেদ(Mohamad Al-Bared) নামে ওই ছাত্রকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ব্রিটিশ আদালত । আদালতের পরবর্তী শুনানিতে তার কারাদণ্ডের মেয়াদ ঘোষণা করা হবে ।
তদন্তে ব্রিটিশ পুলিশ জানতে পারে যে কামিকাজে ড্রোন তৈরি করার জন্য একটি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের নকশা অনুলিপি করেছিল মোহাম্মদ আল- বারেদ । যেটি পাঁচ মাইল দূরত্বে একটি বোমা বা রাসায়নিক অস্ত্র সরবরাহ করতে সক্ষম । মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েট ওই মুসলিম যুবক একটি ৩ডি প্রিন্টারে উইংস তৈরি করে এবং ইসলামি স্টেট গ্রুপে তার সাপ্তাহিক আপডেট পাঠাত যাতে তার ডিজাইনগুলো প্রতিলিপি করা যায় । মোহাম্মদ আল- বারেদের কাজ দেখে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি এতটাই প্রভাবিত হয়েছিল যে এটি এনক্রিপ্ট করা মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে একটি প্রচারমূলক চলচ্চিত্রে তার একটি ভিডিও শেয়ার করেছিল ।
ব্রিটিশ পুলিশ জানুয়ারীতে কভেন্ট্রিতে আল-বারেদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল তারা তার বেডরুমে ড্রোনটি আইএস সদস্যতার জন্য একটি পূরণকৃত আবেদনপত্রের সাথে পেয়েছিল । সেই সময় ওই যুবক বলেছিল যে তার ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে ৷ একটি মানববিহীন আকাশযানের গবেষণা ও বিকাশ করে তার প্রযুক্তিগত নকশার বিবরণ সন্ত্রাসী সংগঠনে শেয়ার করে এবং ইসলামিক স্টেটে যোগদানের জন্য বিদেশ ভ্রমণের মিথ্যা কথা বলে যুক্তরাজ্যের একটি কোম্পানিকে যোগ দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতির জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাকে ।
জানা গেছে,আল-বারেদের বাবা-মা সিরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন কিন্তু রোমানিয়াতে চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়নের জন্য চলে গিয়েছিলেন তারা । যেখানে তাদের তিনটি সন্তানের জন্ম হয় । দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে রোমানিয়ায় ছিলেন ওই চিকিৎসক দম্পতি । পরিবারটি ২০১৪ সালে ব্রিটেনে বসতি স্থাপন করে । তাদের জ্যেষ্ঠপুত্র আল-বারেদ কভেন্ট্রি ইউনিভার্সিটি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করে । ওয়ারউইক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর এবং বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি অধ্যয়নরত ছিল সে । আল-বারেদ জানুয়ারিতে তার আইএস পরিচিতিদের বলেছিলেন যে তিনি ব্রিটেন ছেড়ে তাদের সাথে যোগ দিতে চান । সর্বসম্মতভাবে দোষী সাব্যস্তের রায় আসায় সময় আল-বারেদের বাবা-মা উভয়েই আদালতে ছিলেন। আল-বারেদের মা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং তাকে আদালত থেকে সাহায্য করতে হয়েছিল ।।