এইদিন ওয়েবডেস্ক,উগান্ডা,৩০ মে : উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি মুসেভেনি নতুন এলজিবিটিকিউ বিরোধী আইনে স্বাক্ষর করেছেন। এর আগে দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান আইনপ্রণেতাদের বিলটি সংশোধন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই মাসের শুরুতে আইনটির একটি নতুন খসড়া উপস্থাপন করা হয়েছিল । উগান্ডার রাষ্ট্রপতি ইওওয়েরি মুসেভেনি বিলটি পাশে সম্মতি দিয়েছেন । এর ফলে এই অঞ্চলের এলজিবিটিকিউ (লেসবিয়ান, গে, উভকামী, ট্রান্সজেন্ডার এবং কুয়ার মানুষ) সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করবে ৷ নতুন এই আইন অনুযায়ী এইচআইভি পজিটিভ হলে সমকামী যৌনতার জন্য মৃত্যুদণ্ড এবং সমকামিতাকে ‘প্রচার’ করার জন্য ২০ বছরের সাজার বিধান রয়েছে । বিলটি পাস হওয়ার পর সংসদের স্পিকার অনিতা আমং সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ।
এদিকে উগান্ডার এলজিবিটি অধিকার কর্মী ক্লেয়ার ব্যারুগাবা বলেন, দিনটি উগান্ডার জন্য একটি অত্যন্ত অন্ধকার এবং দুঃখজনক দিন। সবার মানবাধিকার সমুন্নত না হওয়া পর্যন্ত বিচার,বিভাগের মাধ্যমে এই নৃশংস আইনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। ক্লেয়ার বলেন, ‘আমরা জিতব, কারণ মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, মহাবিশ্বের নৈতিক চাপ সর্বদা ন্যায়ের দিকে ঝুঁকে যায় ।’ নতুন আইনের ব্যাপক নিন্দা করেছে অধিকার গোষ্ঠী এবং পশ্চিমা দেশগুলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বিডেন নতুন আইনের নিন্দা করেছেন। এটিকে ‘সর্বজনীন মানবাধিকারের দুঃখজনক লঙ্ঘন‘ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। আইনটি অবিলম্বে বাতিলের আহ্বান জানিয়ে উগান্ডায় মার্কিন সহায়তা এবং বিনিয়োগ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন ।
তবে উগান্ডা একমাত্র দেশ নয় যেখানে সমকামী সম্পর্ককে অবৈধ বলে গণ্য করা হয় । এমন ৩০ টিরও বেশি আফ্রিকান দেশে সমকামিতা নিষিদ্ধ করার জন্য কঠোর আইন রয়েছে । মরিতানিয়া, সোমালিয়া এবং নাইজেরিয়ায় যেখানে শরিয়া আইন প্রয়োগ করা হয় সেখানে সমকামিতার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সুদান, তানজানিয়া, উগান্ডা এবং জাম্বিয়ায় সমকামী সম্পর্কের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।গাম্বিয়া, কেনিয়া এবং মালাউইতে ১৪ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে । সমকামিতার কারনে দেশে দেশের এইচআইভি মহামারী ধারণ করতে পারে এই আশঙ্কায় কেনিয়ার হাইকোর্ট ২০১৯ সালে সম্মতিমূলক সমকামী যৌন কার্যকলাপকে অপরাধী বলে একটি আইন বহাল রেখেছে । মিশরে সমকামিতা অপরাধ নয় । তবে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ব্যাপক বৈষম্য রয়েছে । তানজানিয়ায় এলজিবিটিকিউ স্বাস্থ্য ক্লিনিকগুলিতে কনডম এবং লুব্রিকেন্ট সরবরাহ নিষিদ্ধ করেছে। এমনকি ২০১৮ সাল থেকে দেশটি জোরপূর্বক মলদ্বার পরীক্ষার ব্যবহার বাড়িয়েছে, যা ব্যক্তিগত মর্যাদার লঙ্ঘন ।।