প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২২ মে : এ যেন উলট পুরান কাণ্ড।লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার চরম মাশুল গুনতে হল অপর্ণা মন্ডল ও সঞ্চিতা মন্ডল নামে দুই মহিলা তৃণমূল কর্মীকে।ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে তাঁদের জখম করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি আশ্রিত দুস্কৃতিদের বিরুদ্ধে। হুগলীর চররামপুরের এই দুই সক্রিয় মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী এখন পূর্ব বর্ধমানের কালনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । আক্রমণের ঘটনা নিয়ে হগলীর বলাগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে আক্রান্তরা জানান । আক্রান্ত দলের দুই কর্মীকে দেখতে এদিন কালনা হাসপাতালে আসেন। হুগলী জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ রায় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ব্লক সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়রা।বিজেপি নেতৃত্ব যদিও সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছে।
পঞ্চম দফায় অর্থাৎ গত ২০ মে ভোট হয় হুগলী লোকসভা আসনে। সেই লোকসভা অধীন হুগলীর চরকৃষ্ণবাটি পঞ্চায়েতের চররামপুরের দুই মহিলা তৃণমূল কর্মী অপর্ণা মন্ডল ও সঞ্চিতা মন্ডল ভোটে অংশ নেন।তাঁরাও বুথে গিয়ে ভোট দেন। কালনা হাসপাতালের বেডে শুয়ে তৃণমূল কর্মী অপর্ণা মন্ডল এদিন বলেন,“ভোটের দিন দুপুরে ভোটকেন্দ্র ভোট দিয়ে আমি ও সঞ্চিতা বাড়ি ফিরছিলাম।
তখন স্থানীয় বেলতলা মোড়ের কাছে বিজেপির লোকজন দাঁড়িয়েছিল।তারা আমাদেরকে বলে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিস,তোদের হাত কেটে ফেলব।এই কথা বলেই ওই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতিরা দা-এর মত ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাদের গলায় কোপ মারতে যায়।আমি হাত দিয়ে তা আটকালে আমার হাতে কোপ লাগে।তার পরেও বিজেপি আশ্রিত দুস্কৃতিরা থামেনি।তারা আমাদের কে ব্যাপক মারধোরও করে । মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের প্রথম হুগলীর জিরাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের লোকজন পরে তাঁদের কালনা হাসপাতালে ভর্তি করেন।আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে অপর্ণা মণ্ডল জানিয়েছেন।
চিকিৎসাধীন অপর্ণা মন্ডল ও সঞ্চিতা মন্ডলকে দেখতে বুধবার কালনা হাসপাতালে আসেন হুগলী জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ রায় বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্লক সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়রা।নবীনবাবু জানান,“ভোটের দিন আমাদের সক্রিয় কর্মী অপর্ণা মন্ডল ও সঞ্চিতা মন্ডল চররামপুরের বুথে ভোট করছিল।ওইদিন দুপুরে ভোট দিয়ে তারা বাড়ি ফিরছিল।পথে বিজেপির লোকেরা তাদের ঘিরে ধরে ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে।প্রতিবাদ করলে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে তাদের জখম করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতিরা।
যদিও সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন, বিজেপির হুগলীর বলাগড় ২ নং মন্ডলের সহ সভাপতি কাশীনাথ কোলে ও মন্ডল সভাপতি সুজয় বিশ্বাস। পাল্টা অভিযোগে এই দুই বিজেপি নেতা বলেন, ‘ভোটের দিন তৃণমূলের ওই দুই মহিলা কর্মী চররামপুরের একটি বুথের ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন।এমনকি তারা বুথে অশান্তির বাতাবরন তৈরী করেন।এলাকার মানুষজন তা প্রতিরোধ করেন।কোন বিজেপি কর্মী বা সমর্থক তাদের মারধর করেননি।বিজেপি কর্মীদের ফাঁসাতে পরিকল্পনা করে এইসব মিথ্যা অভিযোগ তুলছে তৃণমূল।’।