দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৬ নভেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় গঙ্গা নদীতে স্নান করার সময় ফটোস্যুট করতে গিয়ে তলিয়ে গেল দুই পড়ুয়া । আজ সোমবার দুপুর দুটো নাগাদ কাটোয়ার দেবরাজ ঘাটে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটে । নিখোঁজ দুই পড়ুয়ার নাম অভিষেক সিং (১৭) ও দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায় (১৭) । বর্তমানে গঙ্গা নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা । যদিও সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই পড়ুয়ার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে ।
জানা গেছে,নদীর জলে নিখোঁজ পড়ুয়াদের বাড়ি বর্ধমান শহরে। তাদের মধ্যে অভিষেক কাটোয়ার বিআইটি কলেজের ছাত্র এবং দীপঙ্কর বর্ধমান শহরে একটি স্কুলে একাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা করে । অভিষেক ও দীপঙ্কর ছাড়াও কাটোয়া বিআইটি কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া বর্ধমান শহরের বাসিন্দা জিৎ ভৌমিক,খণ্ডঘোষ থানা এলাকার বাসিন্দা সত্যম ঘোষ এবং বর্ধমানের সরঙ্গা এলাকার বাসিন্দা সৌম্যদীপ ধাড়া,ওই ৫ বন্ধু মিলে এদিন দুপুর দুটো নাগাদ তারা কাটোয়ার দেবরাজ ঘাটে স্নান করতে গিয়েছিল । প্রথমে চারজন স্নানের জন্য জলে নামে । কেবল জিৎ নামেনি । অল্প কিছুক্ষণ জলে স্নানের পর সৌম্যদীপও ঘাটে উঠে আসে । অভিষেক,দীপঙ্কর ও সত্যম মিলে নদীর জলে আনন্দ করছিল এবং নিজেদের মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও রেকর্ড করছিল । সেই সময় সত্যম তার দুই বন্ধুকে জলের স্রোতে তলিয়ে যেতে দেখে । বিষয়টি আন্দাজ করে সে দুই বন্ধুর দিকে গামছা ছুড়ে দেয় । কিন্তু অভিষেক ও দীপঙ্কর কেউই সেই গামছা ধরতে পারেনি । ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে নদীর স্রোতে তলিয়ে যায় দুই বন্ধু । এরপর সত্যম কোনোরকমে পাড়ে উঠে আসে। খবর পেয়ে নদীর ঘাটে যায় কাটোয়া থানার পুলিশ । আসে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরাও । শুরু হয় তল্লাশি । ইতিমধ্যে খবর পেয়ে কাটোয়ায় চলে আসে দুই নিখোঁজ পড়ুয়ার পরিবারের লোকজনও । এই প্রকার মর্মান্তিক ঘটনায় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন । প্রচুর স্থানীয় বাসিন্দা জড়ো হয়ে যায় কাটোয়ার দেবরাজ ঘাটে ।
জানা গেছে,ঘটনার সময় নদীর ঘাটে হাতে গোনা দু’একজন লোক ছিল । তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন প্রদীপ বিশ্বাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা তিনি বলেন,’ছেলেগুলোকে প্রথমেই বেশি জলে না নামার জন্য সতর্ক করেছিলাম, কারন চোরাস্রোতের ভত আছে । কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি । শুনলে এই ঘটনা ঘটত না ।’ তিনি আরও বলেন,’আমি ছেলে দুটোকে বাঁচানোর জন্য ছুটে যাই । কিন্তু তার আগেই জলের তোড়ে তারা তলিয়ে যায় ।’।