শেখ মিলন,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৯ মে : করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। থেমে নেই মৃত্যু মিছিলও । সংক্রমণকে লাগাম টানতে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে আংশিক লকডাউন । রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার ব্লকেও করোনা সংক্রমণের গ্রাফ ক্রমশ উর্দ্ধমুখী । আক্রান্তের নিরিখে বর্ধমান পূর এলাকার পরেই স্থান ভাতারের । তাই এলাকার কোভিড আক্রান্তদের জন্য দুটি সেফ হোম তৈরি করার উদ্যোগ নিলেন ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী । বিধায়ক জানিয়েছেন, মোট ৩০ শয্যা বিশিষ্ট ওই দুই সেফ হোমের জন্য জোর কদমে প্রস্তুতি চলছে । বৃহস্পতিবার থেকে চালু হয়ে যাবে ।
প্রতিদিনই ভাতারে কোভিড আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে । জেলার মোট আক্রান্তের নিরিখে সেই সংখ্যাটি খুব একটা কম নয় । পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, মঙ্গলবার জেলায় মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৬৩ জন । তার মধ্যে বর্ধমান পূর এলাকায় ১২৭ জন । তার ঠিক পরেই ছিল ভাতারের স্থান । ভাতারের আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৭ । এভাবে প্রতিদিন ভাতার এলাকায় কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় চিন্তায় প্রশাসন ৷ উদ্বিগ্ন বিধায়কও ।
এবার কোভিড আক্রান্তদের এলাকার সেফ হোমে রেখে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে উদ্যোগী হলেন ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী । এদিন এনিয়ে ভাতারের বিডিও অফিসে জরুরী বৈঠকে বসেন বিধায়ক । ওই বৈঠকে বিধায়ক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ভাতারের বিডিও তপন সরকার,ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সংঘমিতা ভৌমিক,যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অরবিন্দ পাল,ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ মহেন্দ্র হাজরা প্রমুখ ।
বৈঠক শেষে মানগোবিন্দবাবু জানিয়েছেন, এলাকার কোভিড আক্রান্তদের থাকা ও চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য আপাতত এলাকায় দুটি সেফ হোম গড়ে তোলার বিষয়ে এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে । সেফ হোমদুটিতে ১৫ টি করে মোট ৩০ টি শয্যা থাকবে । ওই দুটি সেফ হোমের মধ্যে একটি করা হচ্ছে এরুয়ার গার্লস হাইস্কুলে । অন্যটি ভাতারের মুরাতিপুরের একটি বিয়ে বাড়িতে গড়ে তোলা হচ্ছে ৷
পাশাপাশি বিধায়ক জানিয়েছেন,সেফ হোম দুটির জন্য অক্সিজেন যুক্ত একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা থাকবে । এছাড়া এলাকার কোভিড আক্রান্তদের দিবারাত্র পরিষেবা দেওয়ার জন্য আরও তিনটি আম্বুলেন্স ভাতার হাসপাতালে রেখে দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে । তিনি বলেন, ‘অক্সিজেনের ঘাটতি যাতে না হয় তার জন্য অতিরিক্ত অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ।’
প্রসঙ্গত, ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ড গড়ে তোলার বিষয়ে কিছু দিন আগে উদ্যোগী হয়েছিলেন মানগোবিন্দবাবু । কিন্তু পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যার কারনে কোভিড ওয়ার্ড গড়ার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পিছিয়ে আসে বলে জানা গেছে । মানগোবিন্দবাবু জানিয়েছেন, কিছু সংখ্যক আক্রান্তদের যাতে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানো যায় তার জন্য ভাতার হাসপাতালে কোডিড ওয়ার্ড তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে ।।