দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৫ ডিসেম্বর : এলাকায় দুর্বৃত্তায়ন রুখতে শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর উপর জোর দিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার পুলিশ । আর এই সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর উপকারিতা এবার হাতেনাতে মিলতে শুরু করেছে । সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের সুত্র ধরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মোটরবাইক চুরি ও এক মহিলার ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনার কিনারা করল পুলিশ । গ্রেফতার করা হল দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতিকে । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সাদ্দাম শেখ ও ভোম্বল শেখ ওরফে সাদ্দাম । প্রথমজনের বাড়ি কাটোয়ার কেশিয়া মাঠপাড়ায় । দ্বিতীয়জন মঙ্গলকোটের ঝিলু গ্রামের বাসিন্দা । রবিবার বিকেলে ঝিলু থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,গত শুক্রবার কাটোয়া আদালত চত্বর থেকে বাইক চুরির ঘটনাটি ঘটে । বাইক মালিক আবদুল রেজ্জাক মণ্ডল কাটোয়া আদালতে লক্লার্ক হিসাবে কর্মরত । প্রতিদিনের মত ওইদিনেও তিনি আদালত চত্বরে বাইকটি লক করে নিজের অফিসে কাজে চলে যান । কিন্তু বাড়ি ফেরার সময় দেখেন বাইক উধাও হয়ে গেছে । বাইকটি চুরি হয়েছে বুঝতে পেরে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । এদিকে একই দিনে কাটোয়ার ভূতনাথতলার বাসিন্দা রাণী চৌধুরী নামে এক মহিলার ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে । মহিলার ব্যাগে ১৭০০ টাকা,একটি স্মার্টফোন ও কিছু কাগজপত্র ছিল । ঘটনার পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা ৷
এদিকে একই দিনে জোড়া অভিযোগ পেতেই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ । শহরে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে দুষ্কৃতিদের চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয় ৷ চিহ্নিত করা হয় সাদ্দাম শেখ ও ভোম্বল শেখকে ৷ মোট সাতটি পৃথক ক্যামেরায় তাদের গতিবিধি ধরা পড়ে । ভিডিও ফুটেজ থেকে পুলিশ জানতে পারে ওই দিন ১-৪৬ মিনিট নাগাদ একটি বাইকে চড়ে কাটোয়া কোর্টে আসে সাদ্দাম ও ভোম্বল । তারপর রেজ্জাক মণ্ডলের বাইকটি নিয়ে তারা চম্পট দেয় । বাইক চুরির ঠিক দু’ঘন্টা পর তারা রাণী চৌধুরী নামে ওই মহিলার ব্যাগ ছিনতাই করে পালায় । তারপর থেকেই ওই দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতির সন্ধান চালাচ্ছিল পুলিশ । শেষে এদিন বিকেলে গোপন সুত্র থেকে খবর পেয়ে পুলিশ দু’জনকে মঙ্গলকোটের ঝিলু গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে । সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে বলে জানা গেছে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,ধৃত দু’জনেই দাগি আসামি বলে চিহ্নিত । সাদ্দাম শেখের বিরুদ্ধে খুনসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগে মামলা চলছে । অন্যদিকে ভোম্বল শেখ বাইক চুরি চক্রের একজন পান্ডা ৷ ইতিপূর্বে তাদের একাধিকবার জেলেও যেতে হয়েছে ৷ কিন্তু জেল থেকে ফিরে এসে যথারীতি তারা ফের অপরাধমূলক কাজকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে । ওই দু’জন বীরভূমের একটি চক্রের মাধ্যমে চোরাই বাইক বিক্রি করে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ । পুলিশ জানায়, শুক্রবার জোড়া অপরাধের ঘটনার সময় সাদ্দাম ও ভোম্বলের সঙ্গে আরও দু’জনকে দেখা গেছে । ওই দু’জন ছাড়াও চক্রের বাকিদের হদিশ পেতে পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে ।।