এইদিন ওয়েবডেস্ক,জলপাইগুড়ি,৩১ আগস্ট : বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রতিপক্ষ আই ডট এন ডট ডি ডট আই ডট এ জোটের তৃতীয় বৈঠক হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে । নতুন ওই জোটের শরিক তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রীমো তথা এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তাঁর ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জি বৈঠকে যোগ দিতে বর্তমানে মুম্বাইয়ে রয়েছেন । এদিন জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর ভাইপোকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন,’আমি দেবেন্দ্র পাঠককে ফোন করে বলেছি, চোররা গেছে, মুম্বাইবাসীদের সাবধানে জিনিসপত্র রাখতে বলবেন,কাপড় জামাও তুলে নিয়ে চলে আসতে পারে । পশ্চিমবঙ্গ থেকে দুটো বড় চোর গেছে-পিসি আর ভাইপো ।’ পাশাপাশি তিনি আই ডট এন ডট ডি ডট আই ডট জোটকে নিশানা করে বলেন,’আই ডট এন ডট ডি ডট আই ডট এ লিখে দিলেই রাষ্ট্রবাদী হয়না । তাহলে ইন্ডিয়ান মুজাহিদ্দিনের জঙ্গিদেরও রাষ্ট্রবাদী হতে হয়, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিও রাষ্ট্রবাদী হত । পরিবারবাদী, ভ্রষ্টাচারী আর তোষামোদ কারী লোকেরা ওখানে মিলিত হয়েছে ।’
ধুপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী তাপসী রায়ের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার করছেন শুভেন্দু অধিকারী । আজ বৃহস্পতিবার বারঘরিয়ার বিবেকানন্দ ক্লাব ময়দানে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন তিনি । পরে দুই অবজার্ভারের সঙ্গে দেখা করতে জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে গিয়েছিলেন শুভেন্দু । তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় । অবজার্ভারদের সাথে দেখা করার পর সার্কিট হাউসের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন । ধুপগুড়ির উপনির্বাচনের কাজ থেকে বানারহাটের ওসি শান্তনু সরকার ও রাজ্য সরকারের কর্মী কৌশিক চন্দ্রকে অপসারণের দাবি তোলেন শুভেন্দু অধিকারী ।
তিনি বলেন,’পশ্চিমবঙ্গে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ভোট লুট হয়েছে,এই লুট শুধু তৃণমূল গুন্ডারা করেনি,ভোট লুটে পুলিশ ও বিডিওরাও যুক্ত ছিল । ৮০০ কোম্পানির প্যারামিলিটারি ফোর্সকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল । কৌশিক চন্দ্র বলে একজন জেলা শাসককে চিঠি পাঠিয়েছে,এটা মমতা ব্যানার্জির অফিসে সৌমেন ব্যানার্জি বলে একজন এটা করিয়েছেন,ডবলু বি সিএস এসোশিয়েশন করেন, এই কৌশিক চন্দ্র গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালের পৌর প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে কাউন্টিং সেন্টারে ঢুকে গননা লুট করার নায়ক । কৌশিক চন্দ্রকে ধুপগুড়ির উপনির্বাচনের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছি ।’
তিনি বলেন,’দ্বিতীয়ত বানারহাটের ওসি শান্তনু সরকার,ইনি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ৫১ জন বিজেপির কর্মকর্তার নামে চার্জশিট দিয়ে জেলে ঢোকানোর ব্যবস্থা করেছিলেন । সেই ভূয়ো চার্জশিট আদালত বাতিল করেছে । ভোটের দিন রিগিং এর সময় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের উপর তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডাবাহিনী আক্রমণ করেছিল,কিন্তু এখনো পর্যন্ত একজনকেও গ্রেফতার করেননি বানারহাটের ওসি । শুধু বিজেপি কর্মীরাই নয়, সাংবাদিকরাও বানারহাটের ওসির কাছে সুরক্ষিত নন । মহিলা সাংবাদিকদেরও শারিরীক ভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে । শান্তনু সরকার জলপাইগুড়িতে থাকেন । আইন অনুযায়ী কোনো জেলার বাসিন্দাকে তিন বছরের উর্ধে ওই জেলাতে রাখা যায়না । আমরা জেনারেল অবজার্ভার ও পুলিশ অবজার্ভারকে বলেছি শান্তনু সরকারকে জেলার বাইরে পাঠিয়ে দিতে হবে ।’
তিনি আরও বলেন,’ও(শান্তনু সরকার) বিগত তিন দিন ধরে বিজেপির বুথ সভাপতি ও ভোটে নিযুক্ত কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে আক্রমণ করছেন । যাদের বাড়িতে আইসি যাচ্ছেন তাদের বাড়িতে আমরা সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি । যাতে ভোটের আগে পুলিশ বিজেপি কর্মীদের কোনো ভাবে বিরক্ত করতে না পারে । আমরা প্রমাণ নিয়ে আদালতে গিয়ে ওই পুলিশকে সাসপেন্ড করাবো । আমরা বলেছি অবিলম্বে শান্তনু সরকারকে সরিয়ে দেওয়া হোক ।’
পাশাপাশি তিনি বলেন,’ধুপগুড়ি বিধানসভার ২৬০ টি বুথ, এখানে ২৫ কোম্পানি ফোর্স দিলে ভালো হত । ২০০ মিটারের ভিতরে সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশ থাকবে না । আমরা আশাবাদী ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটের মত ভোট লুট হবে না । অবাধ ভয়মুক্ত পরিবেশে ভোট হবে ।’।