প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৫ জুন : ইন্ডিয়ান অয়েলের পাইপ লাইন থেকে তেল চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার হল একটি রাসায়নিক কারখানার মালিক ও তার বন্ধু। পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে । ধৃতদের নাম সোমনাথ তেওয়ারি ও সুভাষচন্দ্র যশ। বর্ধমান শহরের বোরহাটের তেওয়ারিগলি এলাকায় বাড়ি সোমনাথের। অপর ধৃত সুভাষচন্দ্র গলসির বেলগ্রামের বাসিন্দা। ধৃতদের কারখানা থেকে ১৫০টি ৪০ লিটারের খালি জার ও ছ’টি তেল ভর্তি জার বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।ধৃতরা তেল চুরির কথা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি।
তেল চুরি চক্রে আরও কয়েকজন জড়িত বলে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে। রবিবার ধৃতদের বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। চুরি করা তেল উদ্ধার করতে এবং বাকি জড়িতদের হদিশ পেতে ধৃতদের ১০দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। ধৃতদের সাতদিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম ।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে হলদিয়া–পারাদ্বীপ–বারাউনি পাইপ লাইনে তেলের চাপ কমছিল। কী কারণে তেলের চাপ কমছে তা জানতে তদন্তে নামেন ইন্ডিয়ান অয়েলের বিশেষজ্ঞরা। হলদিয়া–বোলপুর ডিভিশনে কাঁটাপুকুর ও বোলপুরের মাঝামাঝি কোনও জায়গায় তেলের চাপ কম হচ্ছে বলে বুঝতে পারেন বিশেষজ্ঞরা। পাইপ লাইনে ফুটো করে সেখান থেকে তেল চুরি হচ্ছে বলে নিশ্চিত হন তাঁরা। সেইমতো শুক্রবার ইন্ডিয়ান অয়েলের বিশেষজ্ঞরা পাইপ লাইন পরিদর্শনে বের হন।
বেলগ্রাম এলাকায় পাইপ লাইন থেকে চাপ কমছে বলে নজরে আসে বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে পাইপ লাইন থেকে ৩০০ মিটার দূরে অবস্থিত রাসায়নিক কারখানাটির উপর। ইন্ডিয়ান অয়েলের বিশেষজ্ঞরা শনিবার কারখানাটিতে পৌছান। কিন্তু, তাঁদের কারখানায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। কর্মীরা কোনওভাবেই ইন্ডিয়ান অয়েলের অফিসারদের কারখানায় ঢুকতে দিচ্ছিলেন না। অফিসাররা ফোন করে কারখানার মালিককে ডেকে পাঠান। কিছুক্ষণ পরই মালিক সেখানে পৌঁছন। তার সঙ্গে তাঁর বন্ধুও আসে। কারখানার পাঁচিলের পাশে একটি জায়গা দেখে সন্দেহ হয় বিশেষজ্ঞদের। তাঁরা মাটি কাটা যন্ত্রের সাহায্য নেন। মাটি খোঁড়ার পর তাঁরা তাজ্জব বনে যান। পাইপ লাইনে ফুটো করে সেখানে ভাল্ভ বসিয়ে তেল চুরি করা হচ্ছিল। পাইপের সাহায্যে সেই তেল অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এরপরই ইন্ডিয়ান অয়েলের বোলপুর ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শম্ভুনাথ ঘোষ ঘটনার কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
জেলায় এইভাবে তেল চুরির ঘটনা প্রথম নয়। এর আগেও খণ্ডঘোষ, রায়না ও গলসি থানা এলাকা থেকে একই কায়দায় তেল চুরি হয়। একটি বড় গ্যাং তেল চুরিতে জড়িত বলে পুলিশের অনুমান ।।