এইদিন ওয়েবডেস্ক,আহমেদাবাদ,২৫ আগস্ট : গাজায় পীড়িতদের নামে সংগৃহীত চাঁদার অর্থের একটি বড় জালিয়াতির উন্মোচন করেছে গুজরাট পুলিশ । এতে চার সিরিয়ান নাগরিকের বিরুদ্ধে গাজায় পীড়িতদের নামে অনুদান সংগ্রহ এবং সেই অর্থ তাদের বিলাসবহুল জীবনের জন্য ব্যয় করার অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ আহমেদাবাদের এলিসব্রিজ এলাকার একটি হোটেল থেকে দামেস্কের বাসিন্দা আলি মেগাত আল-আজহারকে গ্রেপ্তার করেছে। তার কাছ থেকে ৩,৬০০ মার্কিন ডলার এবং নগদ ২৫,০০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি তিন অভিযুক্ত জাকারিয়া হাইথাম আলজার, আহমেদ আলহাবাশ এবং ইউসুফ আল-জাহর বর্তমানে পলাতক । তারা সকলেই একই হোটেলে অবস্থান করছিল । ভারত থেকে যাতে পালাতে না পারে সেজন্য পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করেছে। যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধ শাখা) শরদ সিংহল জানিয়েছেন যে তদন্ত চলছে এবং বাকি অভিযুক্তদের তল্লাশি করা হচ্ছে।
তুরস্কের ওই দলের সঙ্গে কলকাতার যোগ
তদন্তে জানা গেছে যে এই চারজন ট্যুরিস্ট ভিসায় ভারতে এসেছিলেন। তারা ২২ জুলাই কলকাতায় অবতরণ করেন এবং ২ আগস্ট আহমেদাবাদে পৌঁছান । এখানে অভিযুক্তরা মসজিদে গিয়ে গাজার ক্ষুধার্ত পরিবারের ভিডিও দেখিয়ে অনুদান সংগ্রহ করত। পুলিশ এখনও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ পায়নি যে এই অর্থ গাজায় পাঠানো হয়েছিল। পিটিআই-এর সাথে কথা বলতে গিয়ে শরদ সিংহল বলেন, কেন তিনি প্রথমে কলকাতা গিয়েছিলেন এবং তারপর আহমেদাবাদে এসেছিলেন তা তদন্তের বিষয়।
তারা আসলেই অনুদান সংগ্রহ করছিল কিনা, নাকি অন্য কোনও উদ্দেশ্যে ভারতে এসেছিল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, মার্কিন ডলার উদ্ধার এবং কিছু ডিজিটাল লেনদেনও সন্দেহ জাগিয়ে তোলে। পুলিশ এখন তাদের কার্যকলাপ এবং যোগাযোগ বোঝার জন্য সিসিটিভি ফুটেজ স্ক্যান করছে। প্রাথমিক তদন্তে আরও জানা গেছে যে অভিযুক্তরা কিছু সন্দেহভাজন ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ রেখেছিল। তদন্তের সাথে জড়িত সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা গুজরাটের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (ATS) এবং জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA) অভিযুক্তদের আসল উদ্দেশ্য খুঁজে বের করতে এবং সংগৃহীত অর্থ কোথায় পাঠানো হয়েছিল তা জানতে মামলার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ তাদের নেটওয়ার্ক এবং যোগাযোগ খুঁজে বের করতে সিসিটিভি ফুটেজ স্ক্যান করছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময়, গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্ত স্বীকার করেছে যে সে এই অর্থ তার বিলাসবহুল জীবনের জন্য ব্যয় করেছে। পুলিশের মতে, অনুদান সংগ্রহ করে সে তার ভিসা নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। সরকার এখন তাকে কালো তালিকাভুক্ত এবং নির্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত,সন্ত্রাসী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালে ইসরায়েলে আক্রমণ করে, প্রায় ১,৩০০ ইসরায়েলি এবং বিদেশী নাগরিককে হত্যা করে এবং শত শত আহত করে। অনেক ইসরায়েলি এবং বিদেশী নাগরিককে হামাস পনবন্দি করে গাজায় নিয়ে আসে।এর পর, ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করার জন্য একটি বৃহৎ পরিসরে সামরিক অভিযান শুরু করে। এই সময় গাজায় হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে। হামাস স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের বহুবার দেশত্যাগে বাধা দিয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে পাঠানো খাদ্য ও ওষুধের মতো মানবিক সাহায্যেও বাধা দিয়েছে । পরিবর্তে সাধারণ মানুষদের মানবঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি । এর ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হামাসের লক্ষ্য হল গাজার দুর্ভিক্ষ ও সংকটের জন্য ইসরায়েল দায়ী দেখানো। হামাস যদি পনবন্দিদের মুক্তি দিত, তাহলে যুদ্ধ শেষ হতে পারত। কিন্তু তা হয়নি, এবং এই কারণেই প্রায় দুই বছর ধরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ চলছে।।