জলের মধ্যে কখন যে একটা গোটা দিন ডুবে যাচ্ছে
তা বোঝার আগেই ঝুপ করে সন্ধ্যা নেমে এলো নদীর পাড়ে !
অর্ধেক সূর্য মাঝ নদীতে ভেসে আছে ।
আমার মনে হলো পৃথিবীর সমস্ত জ্বরা ডুবে যাচ্ছে চিরতরে
আর কোথাও কোনো দুঃখ নেই .. কোনো ব্যথা নেই ..
সূর্যাস্তের রক্তিম আভায় ফুরিয়ে যাচ্ছে সব ,
সারাদিনের ক্লান্তি .. কৃষকের ঘাম .. সব মুছে যাচ্ছে নক্ষত্রের ভেসে ওঠা অন্ধকারে ।
এই সময় আলো জ্বলে ওঠে মন্দির, মসজিদ, গির্জায়
বাতাসে প্রার্থনার সুর ভাসে ।
আমি মন্ত্র পাঠের মত বলে উঠি-
ভালো থেকো হে মানুষ ..হে আমার পৃথিবী ..
হে আমার প্রিয় মুখ ..
বহু দিন তোমায় স্বপ্নে খুঁজেছি
নদীর সমস্ত ঢেউ বুকে নিয়ে
ভালো থেকো ।
একদিন এই গাছের ছায়ায়, নদীর কাছে আমাদের কথা হয়েছিল ।
তুমি বলেছিলে তুমি এই পৃথিবীর জলের মত
আমি শ্যাওলার মত প্রেম ছড়িয়ে দিয়েছি আকাশের নিচে।
তুমি নেই !
তুমি বলেছিলে মানুষ একবার মরে,
আমি মহাকালের নীলে তোমাকেই আঁকলাম সমস্ত দিন সমস্ত রাত ।
তুমি নেই !
আজ অসময়ের বৃষ্টিতে ভেজা চন্দনের গন্ধ ,
আমি একা জেগে থাকি সমস্ত রাত্রি ।
তুমি নেই !
অন্ধকারের ফুলেরা গন্ধ নিয়ে ফিরে আসে আমার কাছে মুঠো ভরে অঞ্জলি দিই
মূর্তিহীন দেবালয়ে ।
আরতি শেষে শূন্য হাতে যখন ফিরে আসি পথ দিয়ে
সমস্ত পৃথিবী শিশুর কান্না নিয়ে অনাহারে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে।
আমি তখনো তোমাকেই খুঁজেছি
তোমাকেই ডেকেছি বারবার
তুমি নেই !