এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২১ মার্চ : পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামে ১১ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ধর্ষক টুয়েল শেখকে(২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ । প্রমাণ লোপাটে ছেলেকে সহায়তা করায় গ্রেফতার করা হয়েছে ধর্ষক টুয়েলের মা রুবিনা সুলতানা ওরফে সাহিদা বিবিকেও(৪৫) । ধৃতদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ,খুন,পকসো, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টাসহ একাধিক ধারায় মামলা রজু করেছে পুলিশ । আজ ধৃতদের কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে ৬ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় । জানা গেছে,পুলিশের প্রাথমিক জেরায় মেয়েটিকে ধর্ষণ-খুনের কথা কবুল করেছে টুয়েল । টুয়েল জানায় যে ঘটনার দিন রাতে সে মেয়েটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করে । তারপর সে তার মায়ের পরামর্শে মেয়েটির দেহটি গলায় ফাঁস লাগিয়ে বাড়ির চিলেকোঠার ঘরে ঝুলিয়ে দেয়,যাতে আত্মহত্যার ঘটনা বলে তারা চালিয়ে দিতে পারে । ধৃত মা ও ছেলেকে কেতুগ্রাম থানার সুলতানপুর গ্রামে তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পুলিশ ঘটনার পুণঃনির্মান করবে বলে জানা গেছে ৷
মৃতা কিশোরীর জন্মের কয়েক মাস পরেই তার বাবা স্ত্রী ও সন্তানকে ফেলে পালিয়ে যায় । তারপর মেয়েকে নিয়ে কেতুগ্রাম থানার রাইখাঁ গ্রামে বাপের বাড়িতে চলে আসেন কিশোরীর মা । পরিচারিকার কাজ করে মা ও মেয়ের খরচ চালাতেন তিনি । অভাবের সংসারে কিছুটা সুরাহার আশায় মেয়ের ১০ বছর বয়স হতেই রাইখাঁ থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে সুলতানপুর গ্রামে জালাল শেখের বাড়িতে পরিচারিকার কাজে লাগিয়ে দেন কিশোরীর মা । প্রথম কয়েকদিন মেয়েটি কাজ সেরে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে চলে যেত। কিন্তু পরে রুবিনা সুলতানা তাকে রাতে বাড়িতে যেতে দিত না । আর এই সুযোগ কাজে লাগায় রুবিনার ছেলে টুয়েল শেখ ।
জানা গেছে,গত সোমবার থেকেই মেয়ের কোনো সন্ধান পাচ্ছিল না মৃতার মা । তিনি রুবিনাকে বারবার মেয়ের কথা জিজ্ঞাসা করলে সে জানাচ্ছিল যে তার মেয়ে কোথায় পালিয়ে গেছে । এদিকে কিশোরী উধাও হয়ে যাওয়ার কথা বলে মেয়েটির ছবিসহ ফেসবুকে পোস্টও করেছিল চতুর টুয়েল শেখ । কিন্তু মা ও ছেলের এতকিছু চালাকির পরেও তাদের উপরেই সন্দেহ গিয়ে পড়ে মৃত কিশোরীর পরিবারের । বুধবার সন্ধ্যায় কিশোরীর পরিবার ও রাইখাঁ গ্রামের লোকজন টুয়েল শেখের বাড়ি কার্যত ঘিরে রেখে জোর করে ভিতরে ঢুকে তল্লাশি চালাতেই বাড়ির চিলেকোঠা ঘর থেকে কাপড় ঢাকা অবস্থায় কিশোরীর নিথর দেহ উদ্ধার হয় । এদিকে মা ও ছেলের এই প্রকার নৃশংস কর্মকাণ্ডে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রাম । ধর্ষক-খুনি ছেলে ও কিশোরীর দেহ পাচারের পরিকল্পনাকারী মায়ের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা ।।