এইদিন ওয়েবডেস্ক,রাঁচি,০৩ জানুয়ারী : কিশোরীকে ধর্ষণের পর ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে করতে গিয়ে গ্রেফতার হল ভূয়ো ডিএসপি আসলাম আনসারি । সে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের আজিজ নগর আরা মোড় ভুলির বাসিন্দা হলেও রাঁচির আলকামার কলোনিতে থাকছিল । বোকারোর সিটি ডিএসপি কুলদীপ কুমারের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদপত্র জাগরন জানিয়েছে, বোকারোর চাস ছাড়াও রাঁচির কোতোয়ালি, ওরমাঞ্জি এবং হাজারিবাগ সদর থানায় তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগে মামলা চলছে । ধানবাদে রাস্তার ভুয়ো ডিএসপি পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে ইতিমধ্যেই সে জেলে গিয়েছিল । চাসেও সে ভুয়া পুলিশ অফিসার সেজে তোলাবাজি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসলাম খান জানিয়েছে সে ছয়টি বিয়ে করেছে । এর আগে সে ব্যাঙ্ক মোড়ের বাসিন্দা নিশা পারভীনের সাথে বিয়ে করেছিল । তার দুটো সন্তান আছে । ওরমানঝির কানিজা ফাতিমাকে দ্বিতীয় বিয়ে করে সে। তার চেয়েও বেশি সন্তান আছে তার । পেটোয়ারে কুন্তা কুমারীর সঙ্গে তৃতীয় বিয়ে করে আসলাম । এরপর সে কাতরাসের রুখসানার সঙ্গে চতুর্থ বিয়ে করে । তার পঞ্চম স্ত্রী সুপ্রিয়া হেমব্রম এবং ষষ্ঠ মঞ্জু এক্কা ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,গত বছরের ডিসেম্বরে হারলায় এক নাবালিকা মেয়েকে সপ্তমবারের মতো বিয়ে করার চেষ্টা করে আসলাম । কিন্তু খবর পেয়ে
পুলিশ পৌঁছতেই সে চম্পট দেয় । হারলা এলাকার ওই হিন্দু কিশোরী সঙ্গে বিয়ে করার জন্য নিজের ধর্ম পরিচয় গোপন করে নিজেকে সঞ্জয় কাসেরা হিসাবে পরিচয় দিয়েছিল । টাকার প্রলোভন দেখিয়ে এবং নিজেকে পুলিশের ইন্সপেক্টর বলে মেয়েটিকে ভয় দেখায়। সে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে এবং তাকে হুমকি দিয়ে বিয়ে করার চেষ্টা করে । বরযাত্রীর শোভাযাত্রা নিয়ে সে মেয়েটির বাড়িতে চলে যায় । মালাবদলও হয় । কিন্তু বিয়ের বাকি অনুষ্ঠানের আগেও সেখানে হানা দেয় পুলিশ । তবে পুলিশ আসার সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় । পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নকল পিস্তল এবং অভিযুক্তের জাল ইন্সপেক্টরের ইউনিফর্ম উদ্ধার করেছে । পরে গ্রেফতার করা হয় আসলামকে ।
নির্যাতিতা কিশোরী জানিয়েছে, একদিন তার মা ব্যাঙ্কে গেলে আসলামের সঙ্গে দেখা হয় । আসলাম নিজেকে পুলিশ অফিসার ও সঞ্জয় কাসেরা হিসাবে পরিচয় দেয় । তাদের দুই বোনের চাকরি করে দেওয়ার নাম করে তার মায়ের কাছে ফোন নম্বর নেয় । তারপর সে ফোনে কথা বলা শুরু করে এবং পরে বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে । এরই মাঝে সে বিয়ের জন্য অভিভাবকদের চাপ দিতে থাকে । রাজি না হলে অপহরণের হুমকি দেখায় । তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও করে । শেষে বাবা-মাকে হুমকি দিয়ে ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে দেওয়ানোর জন্য রাজি করিয়ে ফেলে আসলাম ।
পুলিশের কাছে ওই প্রতারক জানিয়েছে,তার বাবা নিজামউদ্দিন খান পুলিশে চাকরি করত । সেই কারণে পুলিশের ইউনিফর্ম এবং তারকা সম্পর্কে তার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল । আর সেই অভিজ্ঞতা ও পুলিশের পোশাককে কাজে লাগিয়েই একের পর এক মেয়ের সর্বনাশ করে দিয়েছে আসলাম আনসারি । হারলার ওই কিশোরীকে ফাঁদে ফেলতে সে পরিদর্শকের ইউনিফর্ম পরে হারলা থানা এলাকাতে ঘোরাঘুরি পর্যন্ত করত । পুলিশের পোশাকের আড়ালে ওই ব্যক্তি আদপে যে একজন মুসলিম এবং প্রতারক তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কিশোরী ও তার পরিবার ।।
ছবি ও তথ্য : জাগরন ।