এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২৮ জুন : দুই তৃণমূল সমর্থক পরিবারের মধ্যে একটি জমি নিয়ে কিছুদিন ধরে ঝামেলা চলছিল । তার জেরে বচসা থেকে এক পক্ষের বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর,ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠল অপর পক্ষের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার তুলসিহাটা অঞ্চলের ছোট পারোগ্রামে । ঘটনার পর থেকে সর্বস্ত হারিয়ে তিন শিশুসন্তান নিয়ে কার্যত পথে বসেছেন আক্রান্ত টুম্পা খাতুন নামে তৃণমূলের এক মহিলা কর্মী। হামলাকারী তৃণমূল কর্মী আনোয়ারা বিবিসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে তিনি এনিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ।
টুম্পা খাতুনের অভিযোগ,তিনি সন্তানদের নিয়ে গৃহহারা,অভুক্ত অবস্থায় দিন যাপন করলেও দল তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি । এনিয়ে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন । এই বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শাহজাহান আলী বলেন, ‘দুইজনেই আমাদের দলের লোক । বাস্তু ভিটে নিয়ে ওদের গন্ডগোল ছিল । তিন বা চার দিন আগে কেউ বা কারা বাড়ি ভাঙচুর করেছে । এখনো সেখানে যাওয়া হয়নি । এবার যাবো । অবশ্যই পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব ।’
জানা গেছে, পারো গ্রামের বাসিন্দা টুম্পা খাতুনের স্বামী নুর আলম পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক । বর্তমানে তিনি কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে আছেন । তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে রয়েছেন ওই মহিলা । দিন আনা দিন খাওয়া সংসার । একটি জমি নিয়ে প্রতিবেশী আনোয়ারা বিবির সঙ্গে টুম্পা খাতুনদের বেশ কিছুদিন ধরে বিবাদ চলছিল । দুই পরিবারই তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক । তিন চার দিন আগে দু’পক্ষের মধ্যে এনিয়ে তুমুল বচসা শুরু হয় ।
অভিযোগ,সেই সময় আনোয়ারা বিবি দলবল নিয়ে এসে টুম্পা খাতুনের বাড়িঘর ভাঙচুর করে তাঁকে মারধর করে । এমনকি বাড়ির মধ্যে থাকা গয়না,আসবাবপত্র,জামাকাপড়, খাদ্য সামগ্রী লুটপাট করে নিয়ে পালিয়ে যায় । এদিকে ঘরসহ সর্বস্ব হারিয়ে তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে একটি গোয়ালে গিয়ে আশ্রয় নেন টুম্পা খাতুন । কখনও সখন তাঁকে পাটের জমিতে গিয়েও কাটাতে হচ্ছে । এমনকি সর্বস্ব লুট হয়ে যাওয়ায় তাঁদের অর্ধাহারে অনাহারে কাটাতে হচ্ছে ।
আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী টুম্পা খাতুন বলেন, ‘জমি নিয়ে প্রতিবেশী আনোয়ারা বিবির সঙ্গে একটা ঝামেলা চলছিল । তার জন্য আমার ঘরবাড়ি ভেঙে সর্বস্ব লুট করে নিয়েছে । ফলে তিন শিশুসন্তানকে নিয়ে গোয়ালঘরে,নদীর বাঁধে, পাটের জমিতে রাত কাটাতে হচ্ছে । দু’বেলা ঠিকমত খাবার জুটছে না । আমি তৃণমূল করি । আমাদের পঞ্চায়েত সদস্য কে জানিয়েছে । কিন্তু এখনও কেউ খবর নিতে আসেননি। ফোন করলে ধরছেন না । পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। আমার সুবিচার চাই।’
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মানিক দাস বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারলাম। ওই অঞ্চলের নেতৃত্বকে খোঁজ নিতে বলবো । দল যদি কোন ভাবে জড়িত থাকে তাও খোজ নেব । যা ঘটেছে তা যদি সত্যি হয় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’
অন্যদিকে বিজেপির জেলা সম্পাদক কিষান কেডিয়া তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘তৃণমূল নিজেদের মধ্যেই মারামারি করছে । যে মহিলাটির বাড়ি ভাঙা হয়েছে তিনি এখন গোয়াল ঘরে আশ্রয় নিয়েছে । মানুষ বুঝুক কাদের ভোট দিয়েছেন । তৃণমূল দলটাই দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত ।’।