প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৫ জুন : ঘর ভাড়ার টাকাতেই হত দিন গুজরান।সেটা পাওয়াও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বড়ই বিপাকে পড়ে গিয়েছেন সহায় সম্বলহীন এক বৃদ্ধা।এর কারণটাও যথেষ্ট চমকে দেওয়ার মতো। বৃদ্ধার ঘর দখল করে পার্টি অফিস করার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে।ওই ঘর দখলমুক্ত করার জন্য প্রশাসনের নানা মহলের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বৃদ্ধা।কিন্তু কোন সুরাহা মেলে নি।অন্যায় ও অনৈতিক কাজ নিয়ে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে কড়া বার্তা দেওয়ার পর ঘর ফিরে পাওয়ার আশা জাগে বৃদ্ধার।তাই আজ মঙ্গলবার ফের তিনি প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন । অশতীপর বৃদ্ধার নাম পু্ষ্পা চক্রবর্তী।তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের বৈকন্ঠপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের হ্যাচারি রোডে।বৃদ্ধার বাড়ি ভাড়া নিয়ে ২০১৯ সালে তৈরি হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়। যার নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা মিতা দাস। পর পর দু’বছর নিয়মিত ওই বাড়ির ভাড়া পেয়েছেন পুস্পা দেবী। অভিযোগ,তারপর থেকে তিনি তাঁর ঘরের ভাড়া আর পাচ্ছেন না। কার্যত তাঁর ঘর জবর দখল করে রাখা হয়েছে বলেই বৃদ্ধার দাবি ।
বৃদ্ধা পুষ্পা দেবীর কথা অনুযায়ী, বাড়িতে তিনি একাই থাকেন। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ।তিনি এক প্রকার শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন।
এই অবস্থায় তাঁর বোন মমতা দেবী মাঝে মধ্যে এসে তাঁর দেখাশোনা করেন। বোনের বাড়ি বুদবুদ এলাকায়। ভাড়া না পাওয়ায় চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছেন বলে পুষ্পা দেবী জানান। তিনি এও বলেন, ঘরের ভাড়া না মেলার কথা তিনি পঞ্চায়েতয় সদস্যা মিতা দাসকে একাধিক বার জানিয়েছেন।বাড়ি ভাড়ার জন্যে বারবার মিতা দাসের কাছে দরবারও করেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি । ভাড়ার টাকা চাইলেও মিলে না।অসহায় হয়ে পুস্পা দেবী গোটা বিষয়টি জানিয়ে বর্ধমান ২ নম্বর ব্লকের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতি, থানা ও পঞ্চায়েত অফিসে জানান।কিন্তু তাতেও সুরাহা হয় না। এমত অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পর আশান্বিত হয়ে দিদি পুষ্পাদেবীর পাশে দাঁড়িয়ে এখন ঘর ফেরতের আর্জি জানাচ্ছেন বোন মমতা দেবীও।
মঙ্গলবার ফের বর্ধমান ২ নম্বর বিডিও অফিসে যান পুস্পা চক্রবর্তীর বোন মমতা দেবী।বাড়ি জবরদখল করে থাকা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যা মিতা দাসের এদিও। ঘর জবর দখল মুক্ত করে দেওয়ার আর্জিও তিনি বিডিওর কাছে রাখেন।
যদিও বৈকন্ঠপুর-২ পঞ্চায়েতের সদস্যা মিতা দাস
ভাড়া না দেওয়ার অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেছেন।তিনি জানান,“২০১৯ সাল থেকে আমি সঠিক সময়ে ভাড়া দিয়ে আসছি। এটা একটা দলীয় কার্যালয়। মিথ্যা অভিযোগ করছেন।এভাবে দলীয় কার্যালয় বন্ধ করা যাবে না। সদস্যা মিতা দেবীর কথায়, একটা রুলিং পার্টির পার্টি অফিস যেখানে একজন সদস্য বসেন, তাই উনি বললেই অফিস বন্ধ করা যাবে না“।তবে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে দল যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। তৃণমূল কারও সাথে অন্যায় হতে দেবে না।
বিডিও দিব্যজ্যেতি দাস বলেন,’আমরা অভিযোগ পেয়েছি।ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত তদন্ত করেছে।এবার হেয়াররিং করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ ।।