প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ অক্টোবর : মহাষ্টমীর সন্ধি পুজোর সময় দুর্গার মূর্তির সামনে দাড়িয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করতে করতে কেঁদে ভাসিয়ে ছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়।আর রাজ্যের আর এল মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ রবিবার দশমীর দিন অনাথ আশ্রমে গিয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করে ’জীবন্ত দুর্গা’ রূপে পুজো করলেন অনাথদের।পুজো শেষে দুর্গা মূর্তির সামনে দাড়িয়ে হাপুস নয়নে না কেদেঁও মন্ত্রী মশাই প্রদীপ হাতে নিয়ে ভক্তিভরে অনাথদের দেবী জ্ঞানে আরতিও করেন।অনাথদের প্রতি মন্ত্রী মশাইয়ের এহেন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন আশ্রমিকদের খুবই মুগ্ধ করে।
অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রমটি বেশ কয়েক বছর আগে গড়ে ওঠে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের খাসতালুক পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দামোদরপাড়ায়। এই অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রমে থাকে অনাথ শিশু, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। তাঁদেরসহ স্থানীয় দুঃস্থ মানুষজনকে পুজোয় আনন্দ দিতে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ২০০১ সালে এখানে দুর্গা পুজোর সূচনা করেন। এবছর হল ২৪ তম বছরের পুজো।দশম প্রেণীতে পাঠরত অনাথ আশ্রমের আবাসিক দেবলীনা মাণ্ডি বীজয়া দশমীর দিন দেবী দুর্গা রূপে সাজেন।লক্ষ্মী সাজেন সুরলীনা মাণ্ডি আর সরস্বতী রুপে সাজেন প্রমীলা হাঁসদা। অপর আবাসিকদের মধ্যে গোপাল সরকার কার্তিক রুপে আর রোহিদ সামন্ত গণেশ রূপে সাজেন।এছাও অসুর রূপে সুমি মাণ্ডি, বাঘ রূপে রিয়া ওঁরাও এবং ইঁদুর রূপে বিপিন হাঁসদা সজ্জিত হন।এঁদেরকেই এদিন জীবন্ত দেব দেবী জ্ঞানে পুজো করেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।তিনি আশীর্বাদও প্রার্থনা করেন। পুজো শেষ হতেই সাজ পোশাক খুলে ওই অনাথরা আশ্রমে নিমন্ত্রিত সকল মানুষজনের পাতে তুলে দেন ভাত, মাংস,পটল আলুর তরকারি,চাটনি, মিষ্টি।ষষ্ঠীর দিন থেকে টানা ৫ দিন ধরে অনাথরাই অন্নভোগ বিতরণের দায়িত্ব পালন করে বলে আশ্রমিকদের কথায় জানা গিয়েছে।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন,’আশ্রমে থাকা অনাথ, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, দুঃস্থরা পুজোর আনন্দ থেকে দূরে থাকবে এটা আমি মন থেকে মেনে নিতে পারি নি। তাই আমি ২০০১ সালে এই অনাথ আশ্রমে দুর্গাপুজো শুরু করি। আমার মনে হয়েছে ওদের মধ্যেই ঈশ্বর বিরাজমান রয়েছেন। তাই ওদের মধ্যেই কেউ না কেউ পুজোর উদ্বোধন করেন। পুজো উপলক্ষে অনাথ আশ্রমে থাকা অনাথ শিশুরা অনেক গুরু দায়িত্ব পালন করে ।ওরাই আগমনীর সুরে গান গায়,পুজো দেখতে আসা মানুষজনকে প্রসাদ বিতরণও করে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও ওরাই অংশগ্রহন করে। দশমীর দিন ওরাই কেউ দুর্গা,কেউ গণেশ, কার্তিক সাজে সেজে ওঠে। ওদেরকেই আমি জীবন্ত দেব দেবী জ্ঞানে পুজো করি ।’ অঞ্জলি দি আরতিও করি । এতে মানসিক তৃপ্তি পান বলে স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন।।