প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ ফেব্রুয়ারি : বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নান্ডা দিন দুই আগে বাংলায় জোড়া সভা করে তৃণমূল কংগ্রেসকে চোর ও লুটেরাদের দল বলে কটাক্ষ করেছিলেন।এর ঠিক এক দিন বাদেই পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর একই মাঠে সভা করে বিজেপিকে হার্মাদদের দল দাবি করলেন তৃণমূলের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তাঁর আরও দাবি,বিজেপি গোটা দেশটাকে শেষ করে দিচ্ছে। শুধু কাকলি ঘোষ দস্তিদারই নয়,তৃণমূলের এক ঝাঁক নেতা এদিনের জনসভা মঞ্চ থেকে বিজেপির পাশাপাশি সিপিএমকেও কার্যত তুলোধনা করেন।
পূর্বস্থলীর জনসভায় নিজের বক্তব্যে জেপি নাড্ডা
অভিযোগ করেছিলেন,মমতা এখন নির্মমতা হয়ে গেছে। চাকরি বিক্রির কোটি কোটি লুট করেছে হাওয়াই চটি।এমনকি তিনি এও বলেছিলেন,কয়লা পাচার, গরু পাচারের টাকা রাখা আছে টালির চালে । নাড্ডা জী তাঁর ভাসনে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, লটারি কেলেঙ্কারি প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরে
তৃণমূল কংগ্রেসের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন
। তিনি বলেছিলেন,মমতার রাজত্বে বাংলায় জঙ্গল রাজ, অপশাসন চলছে।বিভিন্ন প্রকল্প খাতে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া অর্থ লুট করার অভিযোগ এনে জেপি নাড্ডা বলেছিলেন,টিএমসি-র ’টি’ হল তোলাবাজি, টেরর। ’এম’ হল মাফিয়া, মানি লন্ডারিং,আর ’সি’ হল করাপশন, কমিশন।
সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতির এইসব মন্তের
জবাব দিতে মঙ্গলবার পূর্বস্থলির একই মাঠে জনসভার আয়োজন করে তৃণমূল নেতৃত্ব । সভা শুরু আগে গঙ্গা জল ছিটিয়ে মাঠের শুদ্ধিকরণ করলেন এলাকার বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় সহ মহিলা ত্ণমূল কর্মীরা।এইসভায় সর্বভারতীয় মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার,সাংসদ সুনীল কুমার মন্ডল,মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ,দলের রাজ্য মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য,জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সহ অনেক নেতা নেত্রী উপস্থিত থাকেন।
সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে তৃণমূল সাংসদ কাকলি
ঘোষ দস্তিদার বিজেপিকে কার্যত তুলোধনা করেন । তিনি বলেন,’বিজেপি কোনও রাজনৈতিক দলই নয়।ওরা হার্মাদ।গোটা দেশকে শেষ করে দিচ্ছে।বিজেপি যেন মনে রাখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় ভাগ বা বিভাজনের কোন জায়গা নেই ।’ পাশাপাশি তিনি সিপিএমের ৩৪ বছরের অপশাসনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন,“ওরা বাংলাকে শেষ করে দিয়েছেন।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বাংলা এগিয়েই চলেছে।সিপিএমকে হুঁশিয়ারি দিয়ে কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন,’আর ফণা তুলবেন না।ফণা আমরা নামিয়ে দিতে জানি ।’ অন্যদিকে দেবাংশু ভট্টাচার্য্য বলেন,’দিদি (মুখমন্ত্রী)বিভিন্ন প্রকল্পে মানুষের হাতে যে টাকা দিচ্ছেন,মোদি সরকার গ্যাস,সার,পেট্রোপণ্য সহ বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়িয়ে সেই টাকা লুটে নিচ্ছে ।’
তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের এইসব মন্তব্যের কড়া জবাব এদিন দিয়েছেন, জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,
কথায় আছে,’চোরের মায়ের বড় গলা’। ঠিক এমনটাই অবস্থা এখন হয়েছে তৃণমূলের । গোটা বাংলার মানুষ এখন জানে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ,
কয়লা পাচার , গরু পাচার এইসব কাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়ে করা কারা জেলে রয়েছে। গরিবের ১০০ দিনের কাজের টাকা আত্মসাৎ করা ,প্রদানমন্ত্রী
আবাস যোজনার টাকা থেকে কাটমানি খাওয়া
এইসব ব্যাপারেই রাজ্যের মানুষ তৃণমূলীর নেতা ও
জনপ্রতিনিধিদের দিকেই আঙুল তুলছেন। গোটা শিক্ষা দপ্তরটাই এখন জেলে। লজ্জা শরম নেই বলেই এত মুখ পোড়ার পরেও তৃণমূলের সাংসদ ও নেতারা মঞ্চে মুখ দেখাচ্ছে বলে সৌম্যরাজ বাবু মন্তব্য করেছে ।’ সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য,’করা ফণা তুলে লুটের রাজত্ত্ব চালাচ্ছে তা গো্টা বাংলার মানুষ জানে।পঞ্চায়েত ভোটে বাংলার মানুষই ওদের ফণা তোলা বন্ধ করে দেবে ।’।