প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০১ ডিসেম্বর : গ্রামে ভূত প্রেতের ভয় নেই ! তবুও রাত হলেই ভয়ে শিঁটিয়ে থাকতে হচ্ছে বিজেপির প্রতীকে পঞ্চায়েত ভোটে জয়ী মহিলা সদস্যা বন্দনা টুডু ও তার স্বামী মোহনলাল টুডুকে ।এনিয়ে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের বিজেপি নেতৃত্ব এবং তাঁদের ওই পঞ্চায়েত সদস্যা প্রশাসনের কাছে অভিযোগে যা জানিয়েছেন, সেটাও যথেষ্ট চমকে দেওয়ারই মতন । বিজেপি সদস্যা ও তাঁর স্বামীকে তৃণমূলে যোগদান করানোর জন্যে ’ভীতি প্রদর্শন’ করতে রাত হলেই নাকি পাড়াতল-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতর উপ-প্রধান শাসক দলের লোকজনকে নিয়ে তাঁদের বাড়িতে হানা হচ্ছে।আর এই ঘটনা নিয়েই এখন উত্তেজনায় ফুঁষছে জামালপুরের পাড়াতল-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা । যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি শাসক দলের নেতৃত্ব ।
এবারের পঞ্চায়েত ভোটে পাড়াতল-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পর্বতপুর গ্রামের ১২৮ নম্বর বুথে বিজেপি প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করেন বন্দনা
টুডু । তিনি মঙ্গলবার লিখিত ভাবে প্রশাসনকে জানিয়েছেন,ভোট দিয়ে এলাকাবাসী তাঁকে জয়ী করে পঞ্চায়েতে পাঠান। যদিও সংখ্যা গরিষ্ঠতার বিচারে তৃণমূল পাড়াতল-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করে।কিন্তু তার পরেও একেবারে বিরোধী মুক্ত পঞ্চায়েত গড়ার সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এলাকার শাসক দলেরা লোকজন এবং পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান উত্তম হাজারী । তাই বেশ কিছুদিন যাবৎ রাত হলেই উত্তম হাজারী তাঁর দলবল নিয়ে আমার বাড়িতে চলে আসছে । তৃণমূল কংগ্রেস দলে আমি যাতে যোগদান করি তার জন্যে তারা আমাকে ও আমার স্বামী মোহনলাল টুডুকে ভয় ভীতি প্রদর্শন করছে । এমন কি ব্লক তৃণমূলের পার্টি অফিসে আমাদের নিয়ে গিয়ে তৃণমূলে যোগদান করানোর জন্যে প্রায় প্রতিদিনই চাপ সৃষ্টি করছে । প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার বিহিত চেয়েছেন পাড়াতল-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য বন্দনা টুডু ।
বিজেপির মণ্ডল সভাপতি প্রধানচন্দ্র পাল বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস দলে যোগদান করানোর জন্য আমাদের দলের পঞ্চায়েত সদস্যা ও তার স্বামীকে ভীতি প্রদর্শন করছে শাসক দলের উপ-প্রধান ও তার দলবল । আমার এই বিষয়টি লিখিতভাবে বিডিও ও থানায় জানিয়েছি । প্রশাসন যদি এসব বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বিজেপি বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে ।’
যদিও উপ-প্রধান উত্তম হাজারী ক্যামেরার মুখোমুখি হতে না চাইলেও অভিযোগ মিথ্যা বলে তিনি জানিয়ে দেন। আর ব্লক তৃণমূলের সহ- সভাপতি ভূতনাথ মালিক বলেন,’বিধানসভা ভোটের মত পঞ্চায়েত ভোটেও জামালপুরের মানুষ বিজেপি ,সিপিএম দুই দলকেই প্রত্যাখ্যান করেছে । ব্লকের কোন পঞ্চায়েতেই বিরোধীরা বোর্ড গঠন করত পারেনি ।এমন পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের আগে ’মাইলেজ’ পেতে বিজেপি নেতারা উদ্দেশ্য প্রণদিত ভাবে তৃণমূলের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে ।’
বিডিও (জামালপুর)পার্থসারথী দে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে । অভিযোগের তদন্ত হবে ।’ একই ভাবে থানার পুলিশ কর্তারাও অভিযোগের তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।।