এইদিন ওয়েবডেস্ক,ব্যারাকপুর,০৮ অক্টোবর : ‘তৃণমূল ভদ্রলোকের পার্টি নয়’ বলে মন্তব্য করলেন বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী । আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্যারাকপুরে দলীয় নেতা অর্জুন সিং এর বাড়িতে বসে শুভেন্দু বলেছেন, ‘তৃণমূল পার্টি কোন ভদ্রলোক করে না । এই পার্টিতে মুসলমানরা যুক্ত আছে, কারণ তারা মনে করে যে বিজেপি হিন্দুদের পার্টি ।’ জনৈক এক সাংবাদিক দিন কয়েক আগে নৈহাটির পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের রেল কোয়ার্টার এলাকায় অজয় প্রসাদ নামে এক যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিরোধী দলনেতা বলেন,’এই পার্টিতে বাকি যেটুকু লোকজন আছে, মুসলিম ছাড়া, তারা সবাই দুর্বৃত্ত ৷ তাদের বোমা বন্দুক আর পিস্তল নিয়ে কারবার । তোলাবাজি করা আর সিন্ডিকেট চালানো তাদের কারবার৷ এগুলো করতে গেলে পুলিশের আশীর্বাদ লাগে । আর পুলিশের আশীর্বাদ তখনই পাওয়া যায় যদি আপনি তৃণমূল হন । স্বাভাবিকভাবেই এই যে হত্যায় জড়িত থাকার ঘটনা এটা তৃণমূল বলেই সম্ভব ।’
প্রসঙ্গত,গত শুক্রবার সকালে বিজেপি নেতা অর্জুন সিং-এর বাড়ির সামনে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে । ভাটপাড়ার তৃণমূল নেতা নমিত সিং এবং তাঁর সঙ্গীরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন অর্জুন। পরের দিন শনিবার বোমাবাজির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার) করেছে পুলিশ । দলীয় নেতার বাড়ির সামনে বোমাবাজির ঘটনার প্রতিক্রিয়া শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘ব্যারাকপুরে তৃণমূল পুলিশকে সামনে রেখে গুন্ডামি করছে আর করেকম্মে খাচ্ছে । তাদের পথের কাঁটা হল অর্জুন সিং । তারা বিজেপির পিছনে তো লেগে থাকেই কিন্তু ওদের পথের কাঁটা অর্জুন সিং । ওরা জানে যে অর্জুন সিং কে অনৈতিকভাবে হারিয়ে তারা ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে জিতেছে । সেই ফলাফল মানুষের জনমতের প্রকৃত প্রতিফলন ছিল না । তাই আগামী দেড় বছরের মধ্যে রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন হবে, তার আগে ওরজুন সিংকে সরিয়ে দেওয়া এদের পরিকল্পনা ছিল৷’
পাশাপাশি তিনি পুলিশকে এক হাত নেন । পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেন, ‘সব যে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো যে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ভূমিকা৷ আমরা যে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছি এবং অর্জুন সিং এর নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ যে ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশকে দিয়েছে তার উপরে কোন কাজ হয়নি৷ নাম মাত্র একজন কি গ্রেফতার করেছে৷ অর্জুন সিং যখন আদালতের দ্বারস্থ হন তখন উল্টে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের নামে পুলিশ স্বতপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা করেছে । এটাতে স্পষ্ট যে পুলিশ আর তৃণমূলের মধ্যে এখানে কোনো পার্থক্য নেই । সেই কারণে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা গুলি বিচার ব্যবস্থা এন আই এ অথবা সিবিআই এর হাতে তুলে দিয়েছে । এই কারণেই টালা থানার ওসি প্রমাণ লোপাট এবং কর্তব্যে অবহেলার জন্য গ্রেফতার হয়েছে । পুলিশের যে কাজ সেটা করছে না বলেই আজকে এই অবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মমতা ব্যানার্জি প্রাক্তন হলে এই পুলিশই সোজা হয়ে যাবে । যেমন উত্তরপ্রদেশে সোজা হয়েছে । বিহারের সোজা হয়েছে । ওগুলোতেও তো জঙ্গলের রাজত্ব ছিল । মুলায়ম সিং যাদব আর মায়াবতীদের রাজত্বে তো সুশাসন ছিল না । বিহারের লালু প্রসাদ যাদবের আমলে তো সুশাসন ছিল না । সেখানে কুড়ি থেকে ত্রিশ বছর জঙ্গলের রাজত্ব ছিল । যোগী আদিত্যনাথ আর নিতিশ কুমার এসে পুলিশকে সোজা করেছে । পশ্চিমবঙ্গেই জঞ্জাল অপসারণ করতে হলে সবাইকে একজোট হয়ে বিজেপিকে আনতে হবে।’ সমগ্র সিস্টেমটা খারাপ হওয়ার পিছনে মমতা ব্যানার্জিকে দায়ী করার শুভেন্দু বলেন,’পুলিশের কাজ হল বাঙালি আর অবাঙ্গালীদের মধ্যে বিভেদের সৃষ্টি করে শাসকদলের ভোটব্যাংক বাড়ানো । কারণ মুসলিম ভোট ব্যাংক ফিক্সড আছে। এবার বাঙালি আর অ বাঙ্গালীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে সেই ভোট ব্যাংক যুক্ত হলে দল জিতে যাবে । এই কাজটাই করে পুলিশ।’।