প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৩ অক্টোবর : বছর ঘুরলেই এই রাজ্যে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন।তার আগে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে মাত্রা ছাড়ালো তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ।বিজয়া সম্লিলনীর মঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতিকে ক্লাস ফোর পাশ করতে না পারা ’মূর্খ’ বলে বিষোদগার করলেন তৃণমূলেরই এক পঞ্চায়েত প্রধান।দলেরই নেতাকে উদ্দেশ্য
করে পঞ্চায়েত প্রধানের এমন কটাক্ষ করার বিষয়টি জামালপুরের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল ফেলে দিয়েছে। যা নিয়ে উল্লশিত বিরোধী শিবিরের নেতারা বলছেন,সবে শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর রক্তক্ষয়ী লড়াই দেখবে জামালপুরবাসী ।
জামালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি
মেহেমুদ খাঁনের পাল্টা শনিবার বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিরুদ্ধ গোষ্ঠী । যার নেতৃত্বে ছিলেন , জামালপুরের চকদিঘী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গৌরসুন্দর মন্ডল। অনুষ্ঠানে পূর্বতন ব্লক তৃণমূল সভাপতি সহ অনেক নেতা, জনপ্রতিনিধী ও কর্মী সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।চকদিঘীতে অনুষ্ঠিত বিজয়া সমিলনীর মঞ্চে সন্ধ্যায় বক্তব্য রাখতে উঠে আগাগোড়াই ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মেহেমুদ খাঁনের বিরুদ্ধে সুর চড়া প্রধান গৌরসুন্দর মণ্ডল । মেহেমুদ খানের নাম মুখে না এনে তিনি বলেন,“জামালপুর ব্লক তৃনমূলের সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ’মূর্খ’। দল একটা ’মূর্খ’ লোককে সম্মান দিয়েছ। ক্লাস ফোর পাশ এমন একটা মূর্খ লোককে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি করেছে। উনি সামলাচ্ছেন পঞ্চায়েত সমিতি।তার পরেও দল ওনাকে পুনরায় ব্লক তৃঢমূলের সভাপতি নির্বাচিত করেছে ।
ব্লক তৃণমূলের সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা
নিয়ে চড়া ভাভায় আক্রমণ করেই খান্ত হন নি গৌর বাবু । তিনি অভিযোগ করেন, সম্মেলনে তাঁদের অনুগত তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা যাতে আসতে পারে, তার জন্য তারা গাড়ি বাস, ট্রেকারের ব্যবস্থা রেখেছিলাম। কিন্তু আমরা যাতে বাস ট্রেকার না পাই তার জন্য ব্লক তৃণমূলের সভাপতি হুইপ জারি করে তার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু উনি হুইপ জারি করে আমাদের বাস,ট্রেকার না পাওয়ার ব্যবস্থা
করেও আমাদের পক্ষের মানুষকে মানুষ জনের আসা আটকাতে পারলেন কি? ওনার দুর্বলতা কোথায় তা প্রমাণিত হলো। উনি ভয় পান আমাদের ।
গৌর মণ্ডল প্রশ্ন তোলেন,দল উনাক বলে দিয়েছে নাকি জামালপুরে পুরাতন কর্মীদেরকে বাদ দিয়ে দল করতে। যদি দল সেটাই উনাকে বলে থাকে ,তাহলে দলের কাছে আমাদের দাবি আমরা মাথা উঁচু করে দরজা দিয়ে ঢুকেছিলাম, যেদিন বেরোবো সেদিন মাথা উঁচু করেই বেরোবো। দলের যদি এরকমই চিন্তা ভাবনা থাকে তাহলে জানিয়ে দিন যে, আমাদের দলে প্রয়োজন নেই,আমরা বেরিয়ে যাও। কথা দিলাম অন্য দল করবো না। মাথা উঁচু করে দল থেকে বেরিয়ে চলে আসবো“। আমাদের সম্মেলনে কমবেশি প্রায় ২৫ হাজার লোক হয়েছে। তাহলে দলের কি এই ২৫ হাজার ভোটের প্রয়োজন নেই? দল আমাদের জানাক, এই ২৫ হাজার লোকের ভোটের প্রয়োজন আছে না নেই। তাহলে আমরাও ভাববো কি করব, না করব। ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বদলের দাবিতে সম্মেলনে অংশ নেওয়া কর্মীরা কিছু সময়ের জন্য চকদিঘিতে মেমারি-তারকেশ্বর রোড অবরোধ
করেও ওই দিন সন্ধ্যায় বিক্ষোভ দেখায়।
যদিও এ ব্যাপারে জামালপুর ব্লক তৃনমূল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খাঁনের বক্তব্য,“দলের জেলা সভাপতিকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছি। যা বলার উনি বলবেন“।আর জেলা বিজেপির সাধারন সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের দাবী, ‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদন্দের কারনেই এই ঘটনা। তাদের একটাই নীতি টাকা তোলা।তাই এইসব ঘটনা ঘটছে ।ওদের গোষ্ঠী লড়াই এখনই শুরু হয়ে গিয়েছে ।এরপর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জামালপুরের বাসিন্দারা তৃঢমূলের দুই গোষ্ঠীর রক্তক্ষয়ী লড়াই দেখবে ।’।