এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদীয়া,০৪ ফেব্রুয়ারী : নদীয়া তৃণমূলের মুসলিম মহিলা কর্মীর নাম ২ বিধানসভার ভোটার লিস্টে ছিল বলে অভিযোগ তুললেন বিজেপির যুবনেতা ও হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি । আজ এক্স-এ একটা পোস্টে তিনি লিখেছেন,’তৃণমূলের শেফালি খাতুনের নাম দুটো বিধানসভার ভোটার লিস্টে ছিল। গতকাল একটা বাদ দেওয়া হয়েছে শুনলাম। কেন বাদ দেওয়া হয়েছে তার কারণটা দিলাম। প্রথম পদক্ষেপে জয়লাভ হয়েছে কিন্তু দ্বিতীয় দিকটা এখনো বাকি আছে। দুই জায়গায় নাম কি করে থাকলো এবং এই ব্যক্তি দু জায়গায় ভোট দিয়েছে কিনা সেই বিষয়ে তদন্ত প্রয়োজন। ইনি আবার সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা । স্কুলে যান কিনা এবং মাইনে তোলেন কিনা সেটাও দেখা দরকার।’
নদীয়ার নাকাশিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারী পাঠানো অভিযোগপত্রটিও শেয়ার করেছেন তরুনজ্যোতি তিওয়ারি । সেই অভিযোগপত্রের বিষয়বস্তুতে তিনি লিখেছেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ভোটার তালিকায় জালিয়াতি সরকারি রেকর্ড বিকৃতি এবং নির্বাচনী প্রতারণার বিষয়ে তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ ।’ অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছেন,’আমি তরুণজ্যোতি তেওয়ারী, পিতা স্বর্গীয় তপন কুমার তেওয়াররী, ঠিকানা পশ্চিম জগদানন্দপুর অঞ্চল পাড়া বেথুয়াডহরি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত নদীয়া, আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি একটি গুরুতর অপরাধের দিকে যা শুধু নির্বাচনী ব্যবস্থার স্বচ্ছতাকে নষ্ট করছে না বরং গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিকেই বিপন্ন করছে।
আমার কাছে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে একই ব্যক্তি শেফালী খাতুন স্বামী জিয়াউর রহমান দুটি পৃথক বিধানসভা কেন্দ্র নাকাশিপাড়া ও কালিগঞ্জে ভোটার হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছেন । নির্বাচন কমিশনের রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে এই ব্যক্তির দুটি পৃথক ভোটার পরিচয়পত্র রয়েছে যা সুস্পষ্টভাবে জনসাধারণের প্রতারণা সরকারি নথি জালিয়াতি ।
এবং বেআইনি উপায়ে ভোটাধিকার প্রভাবিত করার ষড়যন্ত্র প্রতিফলিত করে: এই অভিযোগপত্রে কয়েকটি দিক নিয়ে বিশেষভাবে তদন্ত প্রয়োজন ।’
তিনি লিখেছেন,’এক শেফালী খাতুন দুই হাজার আঠারো সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে দুই হাজার চব্বিশ সালের আসন্ন লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত উভয় ভোটার পরিচয়পত্র ব্যবহার করে একাধিকবার ভোট দিয়েছেন কি না তা যাচাই করা হোক। দুই শেফালী খাতুন পেশায় একজন শিক্ষিকা তিনি কোন বিদ্যালয়ে কর্মরত এবং সরকার থেকে বেতন গ্রহণ করেন কি না তা তদন্ত করা হোক? যদি বেতন গ্রহণ করেন তাহলে তার স্কুলে উপস্থিতির হার কত? তিনি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। সেই ক্ষেত্রে তার সাম্মানিক তিনি নেন কিনা?
তিন,একই ব্যক্তির নামে দুটি পৃথক ভোটার পরিচয়পত্র কীভাবে ইস্যু হলো এবং এই জালিয়াতির সঙ্গে কারা কারা যুক্ত তা খুঁজে বের করতে হবে। চার, উক্ত নামের ব্যক্তির ভোটার পরিচয়পত্র কবে থেকে সক্রিয় রয়েছে এবং কীভাবে তিনি দুটি পৃথক কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেন তা তদন্ত করা হোক। পাঁচ, শেফালী খাতুন একজন সরকারি শিক্ষিকা এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নথিতে শেফালী খাতুন সম্পর্কে কী তথা সংরক্ষিত আছে এবং সরকার কি তাকে একজন ভোটার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কিনা তা যাচাই করা হোক। নিচের বিষয়গুলো নিয়েও গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন :
এক,নাকাশিপাড়া ও কালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকা পরীক্ষা করে শেফালী খাতুনের নামে থাকা দুটি ভোটার পরিচয়পত্রের সত্যতা যাচাই করা হোক ।
দুই,যারা এই বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত তথ্য প্রদানকারী অনুমোদনকারী ও সুবিধাভোগী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।।
তিন, এই জাতীয় আরও প্রতারণামূলক ঘটনা চিহ্নিত করার জন্য উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। যদি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির ক্ষেত্রে এটা হয় তাহলে অন্যান্য কতগুলো ক্ষেত্রে এই একই বিষয়ে হয়েছে দেখা উচিত।
সবশেষে তরুনজ্যোতি লিখেছেন,নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখা গণতন্ত্রের মৌলিক শর্ত এই ধরনের প্রতারণার ফলে শুধুমাত্র অবৈধভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা হচ্ছে না বরং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকেও চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে সুতরাং এই গুরুতর অপরাধের তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার কাছে আবেদন জানাচ্ছি । সংযুক্তি: নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দুটি ভোটার পরিচয়পত্রের নথি । আপনার দপ্তর থেকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আমি আশাবাদী ।’
তিনি এও জানিয়েছেন যে অভিযোগপত্রের প্রতিলিপি নাকাশিপাড়া বিডিও, নদীয়ার জেলা শাসক এবং পশ্চিমবঙ্গ মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের কাছে পাঠানো হল ।।