এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,১৮ জুলাই : সাম্প্রতিক সময়ে গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে একের পর এক তৃণমূল নেতাদের দাদাগিরির চিত্র প্রকাশ্যে আসছে । কোথাও ন্যায় বিচারের নামে প্রকাশ্য রাস্তায় মহিলাকে ফেলে বেদম পেটানো হচ্ছে । ইতিমধ্যে তৃণমূল নেতাদের নেতৃত্বে গণধোলাইয়ের অনেক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । মঙ্গলবার উল্টো রথের দিন পূর্ব বর্ধমানের কালনা রাজবাড়ির ভিতরে নিরাপত্তা রক্ষীর উদ্দেশ্যে খারাপ ভাষা ব্যবহার করে তাকে ধাক্কা দিয়ে ঠেলে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত কালনা পুরসভার পৌরপতি ’আনন্দ দত্তের বিরুদ্ধে । এবার এই তালিকায় নবতম সংযোজন হলো বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কৃর্তি আজাদ । মানুষের কাছে নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে উপস্থিত গ্রামবাসীদের মাঝে রীতিমতো দাদাগিরি করতে দেখা গেল ওই তৃণমূল সাংসদকে । বেহাল রাস্তা পরিদর্শনে গিয়ে রাস্তা থেকে পাথরকুচি তুলে সাথে আসা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের হাতে ধরিয়ে দেন তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ । তবে তিনি এখানেই ক্ষান্ত হননি,এরপর তিনি কিছু পাথরকুচি আধিকারিকের প্যান্টের দুই পকেটেও ভরে দেন । তার এই আচরণে উপস্থিত গ্রামবাসীদের হাততালি জুটলেও নিজের দলের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তৃণমূল সাংসদকে ।
দেখুন ভিডিও 👇
জানা গেছে,পূর্ব বর্ধমানের গলসীর মনোহর সুজাপুরে সম্প্রতি একটি পিচ রাস্তা তৈরি করা হয় । কিন্তু এক মানুষের মাথায় রাস্তাটির বেহাল অবস্থা হয়ে যায় । গোটা রাস্তার পাথরকুচি উঠে আসতে করে অল্প কিছুদিন পর থেকেই । অভিযোগ পাওয়ার পর মঙ্গলবার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তাটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কৃর্তি আজাদ । তাদের সঙ্গে ছিল সাংসদের দলের কিছু নেতাকর্মীও ।
জানা গেছে,রাস্তার বেহাল অবস্থা দেখে সাংসদ কৃর্তি আজাদ এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে রাস্তা থেকে দু’হাত ভরে পাথরকুচি তুলে কিছু ইঞ্জিনিয়ারের হাতে ধরিয়ে দেন এবং কিছু পাথর কুচি তার প্যান্টের দু’পকেটে ভরে দেন । পাশাপাশি তিনি আধিকারিককে বলেন, ‘আপনার সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিয়ারকে বলবেন এটা দেখতে । তিনি এটা নিয়ে কী করবেন সেটা ভাবতে বলবেন । এটা কি তার চোখে পড়েনি ?’
কীর্তি আজাদ বলেন,’আমি জেলাশাসককে চিঠি দেবো এবং এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলবো । একই সঙ্গে যে সংস্থা ওই রাস্তা নির্মান করেছে তাদের দিয়েই এই রাস্তা মেরামত করে দেওয়ার জন্য বলবো ।’ পাশাপাশি সাংসদ আবার গ্রামবাসীদের কাছে থেকে নিমন্ত্রণ চেয়ে নেন এবং বলেন,’আমার কাছে খবর গেলে অবশ্যই আসবো ।সরাসরি আমার কাছে আসুন। টিভিতে দেখে নয়।’
যদিও তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার কীর্তি আজাদের এহেন আচরণের সমালোচনা করেছেন । তিনি বলেছেন,’এটা কোনও পদ্ধতি নয় । কাজে অনিয়ম হলে তার জন্য আইন আছে ।’।