এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৩ এপ্রিল : মুর্শিদাবাদ জেলা বর্তমানে সাম্প্রদায়িক হিংসার আগুনে জ্বলছে । ইতিমধ্যে দুজন হিন্দু পিতাপুত্রকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে । হিন্দুদের অগণিত ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং লুটপাট করা হয়েছে । এমনকি, হিন্দুরা যাতে পলায়ন করতে বাধ্য হয় সেই কারণে ট্যাঙ্কের জলে বিস মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ । অতশত হিন্দু পার্শ্ববর্তী মালদা জেলায় পালিয়ে যাচ্ছে । বর্তমানে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এলাকায় টহল দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী । এইরকমই এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝে রবিবারের নিজের মধ্যাহ্নভোজনের থালার ছবি শেয়ার করলেন মমতা ব্যানার্জির দল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন । রবিবার দুপুরে নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেজে খাবারের থালার ছবি পোস্ট করে ডেরেক ও’ব্রায়েন লিখেছেন, ‘রবিবার দুপুরের খাবার। বাড়ি। কলকাতা। ভাত। ডাল। পালং শাক। টেংরা মাছের ঝাল। রবিবার দুপুরের খাবারে কী খাচ্ছ তোমরা ?’
এদিকে তৃণমূল সাংসদদের এই প্রকার ও মানবিক আচরণে নিন্দায় সরব হয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার । তিনি ডেরেক ও’ব্রায়েনের ওই পোস্টের স্ক্রিনশট এক্স-এ শেয়ার করে লিখেছেন,’হাজার হাজার নিরীহ হিন্দুকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, জিহাদি জনতার হাত থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে—তারা নিজেদের দেশেই শরণার্থী হয়ে উঠছে। বাংলায় রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কিন্তু ভাবুন আমাদের প্রগতিশীল ‘বড় কথা বলা’ এমপি ডেরেক ও’ব্রায়েন স্যার কী করছেন? রবিবারের দুপুরের খাবারের সাথে একটি ফটোশুট করছেন। কারণ, অগ্রাধিকার, তাই না? যখন আপনার লোকেরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে, তখন এক প্লেট টায়ংরা মাচ-ভাত এবং ফেসবুকের গৌরবের সাথে সাড়া দেওয়ার চেয়ে ভালো উপায় আর কী হতে পারে? চিন্তা করবেন না, মাননীয় মহাশয়—খুব শীঘ্রই, এই “শরণার্থী” হিন্দুরা আপনার জন্য প্রতিটি দিনকে ছুটির দিন করে তুলবে। স্থায়ীভাবে । আপনার নীরবতার সৌজন্যে। ততক্ষণ পর্যন্ত, দয়া করে… ভালো করে খাও, নিশ্চিন্তে ঘুমাও। ইতিহাস দেখছে ।’
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের শাসক দলকে নিশানা করে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক পরিকাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপ-শাসন আর তোষনের রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গকে পুড়িয়ে ছাড়খার করছে। পশ্চিমবঙ্গে এখন বাংলাদেশের মতো ধর্মীয় নিপীড়ন চলছে যার শিকার হচ্ছেন হিন্দুরা। উগ্র মৌলবাদীদের প্ররোচনায় আন্দোলনের নামে গত কয়দিন ধরে জেহাদিদের সন্ত্রাসে ভয়ে প্রায় ৪০০ জনেরও বেশী হিন্দু নদী পার করে মালদহের বৈষ্ণবনগরে দেওনাপুর-শোভাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পার লালপুর হাইস্কুলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।’ তিনি আরও বলেছেন,’তৃণমূলের অপ-শাসনে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি এবং তোষনের ফলে উগ্র মৌলবাদীরা এতোটাই উৎসাহিত যে হিন্দুদের বাঁচার তাগিদে তাদের নিজের ভূমি থেকে পরিবার নিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।’ তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের কাছে আহ্বান জানান,’আমি মুর্শিদাবাদ জেলায় মোতায়েন কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী, রাজ্য পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে সেখানে বসবাসকারী হিন্দুদের জীবন, জিবিকা এবং নিরপত্তা সুনিশ্চিত করার অনুরোধ করছি।’।