এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৭ জুন : গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের প্রাণ চলে গেছে । তার মধ্যে ২৫ জনই হিন্দু পর্যটক । বর্তমানে ঘটনার তদন্তভার রয়েছে এনআইএ -এর উপর । এদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মনে করছেন যে পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার আগাম খবর জানতেন । তাই এনআইএ-এর উচিত তাকে এনিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা ।
আসলে,পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী একটা ইনডোর সভায় বলেছিলেন,’আপনারা শুনেছেন তো যে কিভাবে সিঁদুর খেলা শুরু করেছে বিজেপি সরকার । গোটোটাই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা । গোটাটাই নাটক ৷ পাকিস্তানের সঙ্গে ফিটিং করেছে । ফিটিং করে… আপনারাই বলুন…. কয়েকজন পর্যটক বেড়াতে এসেছে…. আপনারা কেউ কাশ্মীর গেছেন ? হাত তুলুন ৷ কাশ্মীরে গেছেন তো ? কাশ্মীরে দেখেছেন যে ১০ ফুট দূরে দূরে ইনসাস রাইফেল নিয়ে মিলিটারিরা দাঁড়িয়ে থাকে । দেখেছেন… দেখেছেন…. আপনারা দেখেছেন কাশ্মীরে কাঁটাতার দিয়ে রোড ব্লক করে রাখা থাকে এবং পহেলগামে ট্যুরিস্ট মিলিটারি নিরাপত্তায় থাকে । মিলিটারিরা তাদের গাইড করে । ভাই…একদল দুষ্কৃতী চলে এলো কিন্তু পহেলগামে তার তিনদিন আগে থেকে সব মিলিটারি তুলে নেওয়া হলো।’
তার সেই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপিং এক্স-এ শেয়ার করেছেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি লিখেছেন, ‘পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক এবং পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সম্প্রতি একটি বক্তব্য রেখেছেন যা অনেকগুলি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ওনার বক্তব্যটি ফেলে দেওয়ার তো নয়ই বরং অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তার বক্তব্যে ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে পহেলগাঁও-এর জঙ্গি হামলার বিষয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন যার থেকে স্পষ্টতই প্রমাণ হয় যে ঐ দিনের ভয়াবহ হামলার ঘটনায় যেখানে ২৬ জন নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারালেন, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিতভাবে কিছু তথ্য জানেন। বিশেষ করে পহেলগাঁওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কিছু তথ্যের বিষয়ে, যা তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে। যে তথ্যগুলি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও উদ্বেগজনক।’
বিরোধী দলনেতা আরও লিখেছেন,’পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার ঘটনাটির তদন্ত করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)। প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা এবং তাদের শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’-এর সঙ্গে যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। একজন নির্বাচিত বিধায়ক হিসেবে নরেন বাবু যদি পহেলগাঁও-এর জঙ্গি হামলার ঘটনার কোনো রকম তথ্য আগেভাগেই জেনে থাকেন, তবে অবিলম্বে তার উচিৎ তদন্তকারী সংস্থা কে সেই তথ্য জানানো, বা NIA-এর উচিত তাকে অবিলম্বে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্যের উৎস এবং তার বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া, কারণ এটা ছোটোখাটো বিষয় নয়।’
সবশেষে তিনি লিখেছেন,’তৃণমূলের সাথে অতীতেও জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগাযোগের অভিযোগ উঠে এসেছে। NIA তদন্তেই ২০১৪ সালে পশ্চিম বর্ধমান জেলার খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কান্ডে বাংলাদেশী জঙ্গিদের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছিল। তদন্তে NIA বিস্ফোরণস্থলে বোমা তৈরির কারখানার কথাও উল্লেখ করেছিল। NIA এর কাছে আমার আবেদন অবিলম্বে পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাঁকে জেরা করা হোক। তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন সেই বক্তব্যের সত্যতা ও প্রকৃত তথ্য দেশের জনগণের কাছে পরিষ্কার হওয়ার প্রয়োজন।’।