এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২০ সেপ্টেম্বর : মমতা ব্যানার্জির প্রশস্তি গাইতে গিয়ে কোনো মনিষীকে ছাড় দিচ্ছেন না তৃণমূল নেতারা । শ্রীরামকৃষ্ণদেব, মা সারদার পর এবার মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব । সিপিএম থেকে তৃণমূলে এসে রাজ্যসভার সাংসদ হওয়া ঋতব্রত ব্যানার্জি এবারে দাবি করে বসলেন যে শ্রী চৈতন্যদেবের ‘উত্তরাধিকারী’ নাকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । আজ শনিবার বিকেলে মতুয়া অধ্যুষিত উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর নীলদর্পণ ভবনের সামনে এসআইআর-এর বিরুদ্ধে এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর কথিত অত্যাচারের প্রতিবাদ সমাবেশে এই প্রকার উদ্ভট দাবি করে বসেন ঋতব্রত ব্যানার্জি ।
ঋতব্রতর কথায়,’শ্রীচৈতন্যদেবের উত্তরাধিকারী ছিলেন লালন, লালনের উত্তরাধিকারী ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এখন শ্রীচৈতন্যদেবের উত্তরাধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যে পথে চলেন, তার সঙ্গে লাখো লাখো মানুষ চলেন ।’ তবে তিনি মমতা ব্যানার্জির প্রশস্তি গাওয়া এখানেই থামাননি । পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন,’আপনি যদি বলেন, প্রথম মিছিল কে করেছিলেন, আমি বলব শ্রীচৈতন্যদেব। তিনি জাতপাত, ধর্মের বাধা ভেঙে দিয়েছিলেন । তিনি যে পথে চলতেন লাখ মানুষ সেই পথে চলতেন। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পথে চলেন লাখো মানুষ সেই পথে চলেন। শ্রীচৈতন্যদেবের উত্তরাধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।’
তবে মমতা ব্যানার্জির “গুড বুকে” নাম তুলতে এর আগে একই পন্থা অবলম্বন করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও তৃণমূল বিধায়ক-চিকিৎসক নির্মল মাজি। ঋতব্রতর মত ব্রাত্যও তৃণমূল সুপ্রিমোর প্রশস্তি গাইতে গিয়ে টেনে আনেন শ্রীচৈতন্যদেবের প্রসঙ্গ । তিনি বলেছিলেন,’চৈতন্যর যদি কোনও সার্থক উত্তরাধিকার এই মুহূর্তে বাংলায় থেকে থাকেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।’ তবে সব সব সীমা অতিক্রম করে যান নির্মল মাজি । তিনি বলেছিলেন, ‘মা সারদা মৃত্যুর কিছু দিন আগে স্বামী বিবেকানন্দের সতীর্থ সন্ন্যাসীদের বলেছিলেন, আমি কালীঘাট মন্দিরে যাই। হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যেখানে থাকেন, সেই রাস্তা দিয়ে তিনি যেতেন। মা সারদা বলেছিলেন, মৃত্যুর এত দিন পরে কালীঘাটের কালীক্ষেত্রে মানুষ রূপে জন্ম নেব। ত্যাগ, তিতিক্ষা, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যাব। সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবে মা সারদার মৃত্যুর পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মের সময়টা সেই অঙ্ক মিলিয়ে দিচ্ছে।’ তার এই বক্তব্যের ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনরা “স্তাবকতার বহু রূপ” এবং ‘নির্মল-মার্কা সরষের তেল’ প্রভৃতি বলে কটাক্ষ শুরু করে দেয়।
এছাড়া চলতি বছরে কলকাতাজুড়ে তৃণমূলের নতুন হোর্ডিং ঘিরেও বিতর্কের ঝড় ওঠে । শ্রীধর মিশ্র নামে এক তৃণমূল নেতার পক্ষ থেকে টাঙানো “হিন্দু মুসলিম শিখ ঈশাই আমরা সবাই ভাই ভাই” লেখা ব্যানারে শ্রীরামকৃষ্ণদেবের পাশাপাশি মমতা ব্যানার্জির ছবিও ছিল । যা নিয়ে নিন্দায় সরব হয় বিজেপি ।।