এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১০ ডিসেম্বর : আজ বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ন্যাজোটের কাছে বয়ারমারি পেট্রোল পাম্পের সামনে জেলবন্দি শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shajahan) অন্যতম সাক্ষী ভোলানাথ ঘোষ গাড়িতে একটি ট্রাক ধাক্কা দেয় । তাতে গুরুতর জখম হয়েছেন ভোলানাথ ঘোষ । সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে সিবিআই-এর মামলার অন্যতম সাক্ষী তিনি । তারই স্বাক্ষ্য দিতে তিনি বসিরহাট আদালতে যাচ্ছিলেন । ভোলানাথ বেঁচে গেলেও মৃত্যু হয় তার ছেলে সত্যজিৎ ঘোষ এবং গাড়ির চালকের। সেই সময়ে পিছনের সিটে ছিলেন ভোলা ঘোষ, সামনের সিটে ছিলেন ছেলে সত্যজিৎ। আহত ভোলানাথ ঘোষকে ভর্তি করা হয় মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে।
তবে এই ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে দেখত রাজি নয় স্থানীয় বাসিন্দারা ও বিজেপি । স্থানীয়দের অভিযোগ যে জেলে বসেই এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে শেখ শাহাজাহান। দলবল দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, এমন অভিযোগও তুলেছেন সন্দেশখালির বাসিন্দারা । ভোলানাথ ঘোষের গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কাকেও তারা পরিকল্পিত হামলা বলেই মনে করছেন ।
একই দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আজ বিকেলে কলকাতা ৬ মুরলীধর সেন রোডে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে ভোলানাথ ঘোষের গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কার ঘটনা প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘শাহজাহান বসিরহাটের জেলে বসে থাকলে এভাবেই সাক্ষীদের মৃত্যু হবে । আজ ভোলা ঘোষের ছেলের মৃত্যু হয়েছে, কাল ভোলা ঘোষের হবে। কারণ জেলে বসে ফোন ব্যবহার করেন তৃণমূল নেতারা।’ শুভেন্দু বলেন,’জীবনকৃষ্ণ সাহা জেল থেকে ফোন করে কথা বলেন। তৃণমূল নেতারা জেলের ভিতরে ফোন ব্যবহার করে। যা খেতে ইচ্ছা হয়, তাই খায়। জেলের নিয়মের বাইরে গিয়ে অনেক রাতে ডিনার খায় । যতরকম ছবি আছে সব দেখে। পিজির উডবার্ন ওয়ার্ডে মন খারাপ হলে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’ তিনি আরও বলেন,’জেলের সুপাররা খারাপ নন। বেরিয়ে এসে অন্য ফোন থেকে আমাকে জানান যে নেতারা ফোন ব্যবহার করছেন।’ ভোলানাথ ঘোষের কাছে টিম পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু। এসএসকেএমে চিকিৎসা করানোও ভোলার ঘোষের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন তিনি। বিরোধী দলনেতা আরও বলেন,’সিবিআইকে ধন্যবাদ যে তারা ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা সরানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে।’
এদিকে যে ট্রাকটি সন্দেশখালি শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে চলা সিবিআই- এর মামলার মূল সাক্ষীর গাড়িতে ধাক্কা মেরেছে, তার চালক এখনও পলাতক। সেই চালকের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। জানা গিয়েছে যে গত ২ নভেম্বর ট্রাকের ফিটনেস ফেল হয়ে গেছে । গত ১৪ অক্টোবর ট্রাকের পারমিটও ফেল হয়। এরপরও কীভাবে রাস্তায় এই গাড়ি চলছিল তা নিয়ে উঠছে বিস্তর প্রশ্ন । প্রশ্ন উঠছে সন্দেশখালিতে শাহজাহানের সন্ত্রাসের সময় লাইম লাইটে থাকা ন্যাজোট থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ।।
